দিল্লি – সােমবার ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) তার নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ করল। ইস্তেহার প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি বলেছেন, ‘ভারতীয় জনতা পার্টি দেশের বিভিন্নতার দিকে লক্ষ্য রেখে সংশ্লিষ্ট এলাকার উপযুক্ত নমনীয় নীতির মাধ্যমে বিভিন্ন পর্যায়ের সম্যক উন্নয়নের জন্য এক উদ্দেশ্য এবং এক লক্ষ্য রেখে কাজ করায় অঙ্গীকার বদ্ধ’। ইস্তেহারে ৭৫টি ক্ষেত্রের উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। তার মধ্যে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং পরিকাঠামাের ওপর অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
দলের সভাপতি অমিত শাহ বলেছেন, ‘নরেন্দ্র মােদির প্রধানমন্ত্রীত্বের পাঁচ বছরে সরকার দেশের পঞ্চাশটি ক্ষেত্রে উন্নয়নের লক্ষ্যে নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল দেশের সরকার পরিচালনায় ভারতীয় জনতা পাটি উশ্লেখযােগ্য সাফল্য পেয়েছে। বিগত পাঁচ বছরের শাসনকে দেশের স্বর্ণযুগ বলা যায়।।
পরবর্তী পাঁচ বছরে অর্থাৎ ২০১৯ থেকে ২০২৪ সালের কাজের মাধ্যমে ভারত স্বাধীনতার একশাে বছরের উন্নয়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করবে বলে মন্তব্য করেছেন নরেন্দ্র মােদি। দলের ইস্তেহারে সন্ত্রাস দমনে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এজন্য বিজেপি সরকার ‘এক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য’ নিয়ে কাজ করবে।
ইস্তেহার প্রকাশ অনুষ্ঠানে অন্যান্য মন্ত্রীদের মধ্যে সুষমা স্বরাজ, অরুণ জেটলি, রাজনাথ সিং প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, ‘দলের নির্বাচনী স্লোগান হিসেবে ‘ফির একবার মােদি সরকার’ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করেন। নরেন্দ্র মােদি পরিচালিত সরকারের পাঁচ বছরের সাফল্য হাতিয়ার করেই আসন্ন নির্বাচনেও বৈতরণী পেরােনাের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দলের পক্ষে। ইস্তেহার কমিটিতে কুড়ি সদস্যের মধ্যে আছেন অরুণ জেটলি, রবিশঙ্কর প্রসাদ, নির্মলা সীতারামন, থাওয়ারচাঁদ গেহলট, পীযুষ গােয়েল, মুখতার আব্বাস নাকভি, মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান, বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল মােদি, উত্তর প্রদেশের কেশব প্রসাদ মৌর্য প্রমুখ।
অরুণ জেটলি বিজেপির ইস্তেহার প্রকাশ অনুষ্ঠানে জানান, ‘দলের ইস্তেহার খণ্ড খণ্ড ভাবে নেতাদের মতামত নিয়ে তৈরি নয়। এটা অত্যন্ত শক্তিশালী জাতীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে রচিত হয়েছে। ইস্তেহার বা সঙ্কল্প পত্রে পঞ্চাশটি ক্ষেত্রে উন্নয়নের রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে। এগুলি বাস্তবের ওপর ভিত্তি করে রচিত। আমাদের সন্ত্রাস দমনের নতুন নীতি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করেছে। ভারতীয় জনতা পার্টি সংবিধানের ৩৫এ ধারা বাতিলে বদ্ধপরিকর। যাতে জম্মু ও কাশ্মীরের নাগরিকদের জন্য বিশেষ সুবিধা ও অধিকারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সংবিধানের এই সংস্থানের ফলে জম্মু ও কাশ্মীরের অস্থায়ী বাসিন্দাদের ক্ষেত্রে বিরূপ প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করছে। তিনি প্রশ্ন করেন, ভারত যখন আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একটা নির্দিষ্ট জায়গা করে নিয়েছে তখন, একটা শক্তিশালী সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী দলের সরকার গঠনের পরিবর্তে, দেশের মানুষ নিশ্চই চাইবেন না একটা অস্থায়ী লক্ষ্যহীন দলের জোটকে ক্ষমতায় আনতে। তিনি বলেন, পূর্বের সরকারগুলি কেবল স্লোগানেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু মােদি সরকার দেশের দরিদ্র মানুষের উন্নতিতে বাস্তবমুখী কার্যসচি রূপায়ণ করেছে। বিজেপি পরিচালিত পরবর্তী পাঁচ বছরের সরকারের মূল লক্ষ্য হল দেশের দরিদ্র মানুষের সংখ্যা উল্লেখযােগ্যভাবে হ্রাস করা এবং তা নির্মূল করা। তিনি বলেন, দেশের আর্থিক অবস্থা ১৯৪৭ সাল থেকেই যে কোনও সরকারের পক্ষেই এক সদর্থক সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে।
ইস্তেহারে ১০টি দাওয়াই–
সেনাকে অত্যাধুনিক করতে যুদ্ধাস্ত্র কেনার ওপর জোর।
সন্ত্রাসবাদ দমনে সেনাকে যথেষ্ট স্বাধীনতা।
অনুপ্রবেশ রুখতে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানাে।
সংবিধানের ৩৭০ ও ৩৫এ ধারা অবলুপ্তি ঘটানাে।
সুদ ছাড়াই ১ লাখ টাকা পর্যন্ত কিষাণ ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হবে।
বিজেপির ইস্তেহারে ১৩০ কোটি ভারতীয় স্বপ্নপূরণ।
বিজেপি ক্ষমতায় এলে রামমন্দির নির্মাণ।
২০২২ সালের মধ্যে সব মানুষের জন্য বাড়ি।
২০২৪ সালের মধ্যে পরিকাঠামাে খাতে একশাে কোটি টাকা বরাদ্দ।
একটি লক্ষ্যকে সামনে রেখে দেশ এগােবে বলে দাবি নরেন্দ্র মােদির।