বজবজ, ২২ মে – বজবজে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্তে নেমেছে সিআইডি। দুপুরের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সিআইডি এবং ফরেন্সিকের একটি দল। মহেশতলায় পৌঁছে দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন সিআইডি আধিকারিকেরা। মহেশতলা থানার পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গেও কথা বলেন তাঁরা। সিআইডির পাশাপাশি মহেশতলায় পৌঁছয় ফরেন্সিক দলও। ফরেন্সিক আধিকারিকেরা ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন। এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অন্তর্দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে বিজেপির অন্দরে।
এগরা বিধানসভা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মধ্যে পড়লেও সেটি দিলীপ ঘোষের লোকসভা কেন্দ্র মেদিনীপুরের অন্তর্গত। মঙ্গলবার এগরায় বড় মিছিল করার কথা রাজ্য বিজেপির। সেখানে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পাশাপাশি দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষেরও উপস্থিত থাকার কথা ছিল। সেই মতো পোস্টারও তৈরি হয়। কিন্তু পরে দিলীপের নাম বাদ দিয়ে শুধুই শুভেন্দু উপস্থিত থাকবেন বলে জানানো হয়।
এগরায় বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের পরই সেখানে শুভেন্দু পৌঁছে যান, পরে যান দিলীপ ঘোষ। রাজ্য বিজেপির এক নেতার বক্তব্য ছিল , দলের একাংশ চায় দিলীপদা যাতে ওই এলাকায় যেতে না পারেন। কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতিকেও জানানো হয় দিলীপ গেলে অন্য নেতারা যাবেন না। দিলীপ একাই মিছিল করুন। এর পরেই পোস্টারে বদল ঘটে।
রাতারাতি যে পোস্টার থেকে দিলীপ ঘোষের নাম বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে, তা জানেনা অনেক বিজেপি নেতাই। তবে গত বিধানসভা নির্বাচনে এগরার বিজেপি প্রার্থী অরূপ দাস বলেন, দিলীপ উত্তরবঙ্গে থাকবেন বলে তাঁর নাম বাদ দিয়ে নতুন পোস্টার বানানো হয়েছে রবিবার। পরে অবশ্য তিনি আবার নিজেই বলেন, মেদিনীপুরের কর্মসূচি শেষ হয়ে গেলে তিনি মিছিলে আসার চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন। যদিও দিলীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, দিলীপের মিছিলে না যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
দিলীপ ঘোষ বিজেপির রাজ্য সভাপতি থাকার সময়ে বিরোধী দলনেতার সঙ্গে তাঁর খুব একটা সুসম্পর্ক ছিল না তা অধিকাংশ নেতাই জানতেন। দিলীপের ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, শেষ মুহূর্তে পোস্টার বদলের আড়ালে রাজনীতি রয়েছে। তাঁদের দাবি, শুভেন্দু গোষ্ঠী চাইছে না বলেই দিলীপ জানিয়ে দিয়েছেন তিনি ওই মিছিলে অংশ নিতে চান না। তবে দিলীপ তা জানানোর আগেই পোস্টার থেকে তাঁর নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। যদিও এ বিষয়ে দিলীপ ঘোষ জানান, ‘‘পোস্টার বদল হয়েছে কি না জানা নেই। তবে দল আমায় যা নির্দেশ দেবে তাই করব। আমি কাল মিছিলে যাব কি যাব না, সেটা এখনও চূড়ান্ত নয়। এর মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব খোঁজার কোন কারণ নেই ।’’
এদিকে বেশ কয়েক জন স্থানীয় বাজি ব্যবসায়ী পুলিশি অভিযানের বিরুদ্ধে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন। বাজি সংগঠনের নেতা কানাই দাসের দাবি, অসাবধানতাবশত এই দুর্ঘটনা ঘটে। সচেতনতার অভাবে ছাদে বাজি রাখা হয়েছিল বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার খাদিকুল গ্রামে বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে ৯ জনের মৃত্যু হয়। পরদিনই সেই ঘটনার তদন্তভার সিআইডি র হাতে তুলে দিয়েছিল রাজ্য সরকার।পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় গত সপ্তাহেই বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে তোলপাড় হয়েছে রাজ্য-রাজনীতি। এবার ফের বিস্ফোরণের ঘটনায় তদন্তের পাশাপাশি শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোরও।