বিলকিসের ধর্ষকের ওকালতিতে বিস্মিত সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন, ‘লাইসেন্স কীভাবে পেলেন?’ 

দিল্লি, ২৫ আগস্ট– গোটা ভারতে সারা জাগানো বিলকিস বানো ধর্ষণ মামলায় দোষীরা আপাতত মুক্ত। গত ১৫ আগস্ট গুজরাট সরকারের নির্দেশে ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়া হয়। এরপরই বিলকিস বানো এই মুক্তির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন। সেই মামলার শুনানিতেই জানা গিয়েছে এক অবাক করা বিষয়। সেই বিষয়ে অবাক হয়েছেন স্বয়ং বিচারপতিও।

জানা গিয়েছে, ধর্ষণে দোষী সাব্যস্তদের একজন মুক্তির পরে গুজরাতে ওকালতি শুরু করেছেন। যা দেখে বিস্মিত সুপ্রিম কোর্ট । বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়ার প্রশ্ন, ”ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধে দোষী সাব্যস্ত কেউ কী করে ওকালতির মতো পেশাকে বেছে নিতে পারে?”

বানোর ধর্ষকদের মুক্তির নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে যে মামলা দায়ের হয়েছে বৃহস্পতিবার সেই মামলারই ছিল শুনানি। আর সেখানেই উঠে আসে বিষয়টি। ব্যাপারটি বিচারপতির নজরে আনেন স্বয়ং দোষীদের আইনজীবীই। ঋষি মালহোত্রা নামে সেই আইনজীবী আদালত কক্ষে রাধেশ্যাম শাহ নামের এক দোষী সম্পর্কে বলতে গিয়ে নিজের প্রসঙ্গে বলেন, ”আজ প্রায় এক বছর কেটে গিয়ে গিয়েছে। আমার বিরুদ্ধে কিন্তু একটিও মামলা হয়নি। এক মোটর দুর্ঘটনা মামলায় আমি আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছি। আমি একজন আইনজীবী। এবং আমি আবার প্র্যাকটিস শুরু করেছি।”


একথা শোনার পরই আশ্চর্য প্রকাশ করে শীর্ষ আদালতের বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়া বলেন, ”দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে কীভাবে লাইসেন্স পেলেন প্র্যাকটিস করার? আইন একটা মহান পেশা। বার কাউন্সিলকে বলতে হবে দোষী কি প্র্যাকটিস করতে পারেন? আপনি একজন দোষী। এতে কোনও সন্দেহ নেই। আপনাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলেই আপনি জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন।” জবাবে ওই আইনজীবী বলেন, ”আমি ঠিক বলতে পারব না।”

উল্লেখ্য, ২০০২ সালে গোধরা হিংসার সময়ে অন্ত্বসত্ত্বা বিলকিসকে গণধর্ষণ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের খুনের অভিযোগে ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু গত ১৫ আগস্ট গুজরাট সরকারের নির্দেশে ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়া হয়। ধর্ষকদের কার্যত বীরের সম্মান দিয়ে বরণ করা হয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তরফে। তারপরই দেশজুড়ে অসন্তোষের হাওয়া বইতে শুরু করে। সেই সঙ্গে গুজরাট সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অনেকে।