দিল্লি, ৬ অক্টোবর – সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে শুধু নয়, অস্থায়ী বা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ক্ষেত্রেও সংরক্ষণ পাবেন পিছিয়ে পড়া মানুষ । সুপ্রিম কোর্টে এমনই জানাল নরেন্দ্র মোদি সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের সব মন্ত্রক এবং দপ্তরকে এই নির্দেশিকা কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র। বর্তমানে সরকারি স্থায়ী চাকরিতে তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি তথা ওবিসি সংরক্ষণ রয়েছে। এবার অস্থায়ী নিয়োগেও সংরক্ষণ দেবে সরকার। ৪৫ দিন বা তার বেশি সময়ের জন্য নিয়োগ করা হলে সেক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক ভাবে সংরক্ষণ নীতি মেনে চলতে হবে। অস্থায়ী চাকরিতে সংরক্ষণ দেওয়ার ব্যাপারে কেন্দ্রের এই অবস্থানের কথা সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছে কেন্দ্র। সমস্ত মন্ত্রক ও দফতরকে অস্থায়ী নিয়োগের ক্ষেত্রে কঠোরভাবে সংরক্ষণবিধি মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ স্থায়ী নিয়োগের ক্ষেত্রে যে হারে সংরক্ষণ দেওয়া হয়, অস্থায়ী নিয়োগেও সেই হারে সংরক্ষণ দেওয়া হবে।
কেন্দ্রীয় সরকার এই অবস্থান নেওয়ায় সব রাজ্যের উপরেই চাপ সৃষ্টি হল বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, সংরক্ষণ ব্যবস্থার সঙ্গে রাজনীতি জড়িত। দ্বিতীয়ত, আর্থিক দায়ভার কমাতে সব রাজ্যই এখন প্রচুর পরিমাণে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করছে। এ ব্যাপারে আগেই কেন্দ্র মেমোরেন্ডাম ইস্যু করেছিল। লোকসভা ভোটের আগে বিষয়টি এখন ফের মাথা তুলেছে। কেন্দ্রের বক্তব্য, অস্থায়ী চাকরিতে সংরক্ষণ চালু করার ব্যাপারে তফসিলি জাতি ও উপজাতি সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটি সুপারিশ করেছিল। সেটাই মেনে নিয়েছে কেন্দ্র।
কেন্দ্রের বক্তব্য, অস্থায়ী চাকরিতে সংরক্ষণের সুপারিশ করেছিল তফসিলি জাতি ও উপজাতি সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটি। সেই সুপারিশ মেনে নিয়েছে তাঁরা। অধিকাংশ রাজ্য এখন অস্থায়ী নিয়োগের পথে হাঁটছে। দেখা যাচ্ছে সেই সব নিয়োগের মেয়াদ কোথাও পাঁচ-দশ বছর পর্যন্ত গড়িয়ে যাচ্ছে। অস্থায়ী নিয়োগের ফলে স্থায়ী চাকরির সুযোগ কমছে অনগ্রসর শ্রেণির জন্য। তাই অস্থায়ী চাকরিতে সংরক্ষণ যথাযথ ভাবে চালু না হলে তাদের বঞ্চিত করা হবে। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, সরকার এই নীতি যথাযথ ভাবে মেনে চললে শীর্ষ আদালতের কিছু বলার নেই। কিন্তু কোথাও ত্রুটি হলে এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যেতে পারে।
এই মুহূর্তে গোটা দেশে জাতিগত জনগণনাকে ইস্যু করতে চাইছে বিরোধীরা। কংগ্রেস ইতিমধ্যেই ওবিসিদের বঞ্চনা নিয়ে প্রচার শুরু করেছে। কেন্দ্রের এই নয়া সিদ্ধান্ত কিছুটা হলেও বিরোধীদের সেই প্রচারের পালটা হাতিয়ার হতে পারে।