ইসলামাবাদ, ২৫ অগাস্ট— শ্রীলংকা, বাংলাদেশের মত আর্থিক অনটনে ভুগছে পাকিস্তান। দেশে লাগাতার মূল্যবৃদ্ধিতে নাজেহাল পাক নাগরিকরা। আর এহেন পরিস্থিতিতে যুদ্ধ বিমানের যন্ত্রাংশ কেনার জন্য দরকারি ডলারের সংস্থান গোপনে করে ফেলেছে পাকিস্তান। গত ৬ মাস ধরে যুদ্ধ চলছে ইউক্রেন ও রাশিয়ার । সেই পরিস্থিতিতেই রাশিয়ার একাধিক সংস্থার উপর ইউরোপের দেশগুলির নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও চুপিচুপি রাশিয়ার থেকেই যুদ্ধবিমানের যন্ত্রাংশ কিনতে চলেছে পাকিস্তান ।
সম্প্রতি ইউক্রেন সরকার তার একটি রিপোর্টে এই তথ্য দিয়ে জানিয়েছে, যুদ্ধবিমান হিসাবে একাধিক জেএফ-১৭ স্কোয়াড্রন ব্যবহার করে পাকিস্তান। এই বিমানগুলি চিনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে তৈরি হয়। যা থেকে পরিষ্কার পাকিস্তান রাশিয়া থেকে যুদ্ধবিমানের যন্ত্রাংশ কিনছে। ইউক্রেনের রিপোর্ট অনুসারে সামরিক ক্ষেত্রে এভাবেই চিনের উপর নির্ভরতা কমাতে চাইছে ইসলামাবাদ।
ইউক্রেন আক্রমণের জন্য বেশ কিছু রুশ সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইউরোপীয় দেশগুলি, যার মধ্যে রয়েছে রুশ যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন প্রস্তুতকারী সংস্থা ক্লিমোভ। জেএফ-১৭, মিগ ৩৫, মিগ ২৯ সহ রাশিয়ার আরও বহু যুদ্ধবিমানের যন্ত্রাংশ তৈরি করে এই ক্লিমোভ। এই ক্লিমোভকে আবার ইঞ্জিন সরবরাহ করে রোসোবোরোনেক্সপোর্ট নামক একটি সংস্থা, যার উপর বহু আগে থেকেই নিষেধাজ্ঞা রয়েছে আমেরিকার। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমানগুলির যন্ত্রাংশ পেতে রীতিমতো সমস্যায় পড়েছে ইসলামাবাদ।
এই জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমানের বহুমুখী দক্ষতা রয়েছে। জমির খুব কাছে নেমে এসে বোমাবর্ষণ, শত্রুপক্ষের আকাশসীমায় ঢুকে পড়ে তাদের সামরিক সজ্জার পুঙ্খানুপুঙ্খ খবর নিয়ে আসা, অনেক উঁচু থেকে হামলা করা এবং যুদ্ধবিমানের সঙ্গে লড়াই করা- এই সমস্ত কাজেই অত্যন্ত দক্ষ এই ‘মাল্টি-রোল ফাইটার।’
এমন অবস্থায় চিনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে তৈরি বিমানের যন্ত্রাংশ কিনতে সরাসরি রাশিয়ার দ্বারস্থ হয়েছে পাকিস্তান। চিনকে এড়িয়ে যাওয়ার এই চেষ্টা এবং পাকিস্তান সরকারের এই আকস্মিক পুতিন-ঘনিষ্ঠতা অত্যন্ত ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই মত সামরিক বিশেষজ্ঞদের।