চেন্নাই, ৬ ডিসেম্বর– মিগাউজমের প্রভাবে গত দুদিনের ভারী বৃষ্টিতে বিধ্বস্ত চেন্নাই৷ রাস্তাঘাট ভেসে গেছে, উপডে় পডে়ছে গাছপালা, বিদু্যতের খুঁটি ভেঙে বিপর্যয় নেমেছে৷ বহু এলাকায় কারেন্ট নেই৷ এমনকী কুমিরের মতো জন্তুকে রাস্তায় বেরিয়ে আসতে দেখা গেছে আস্তানা ডোবায়৷ গত দু’দিনের ঝড়বৃষ্টিতে মৃতের সংখ্যা বেডে় হয়েছে ১৭৷ যদিও ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম নিয়ে আগেভাগেই সতর্কতা জারি করেছিল প্রশাসন৷ তামিলনাড়ুর উপকূলীয় জেলাগুলির পাশাপাশি চেন্নাইয়েও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়৷ ঘূর্ণিঝডে়র ল্যান্ডফলের আগে থেকেই তুমুল বৃষ্টি শুরু হয় চেন্নাই-অন্ধ্র উপকূলে৷
তবে কিছুটা স্বস্তির খবর হল অন্ধ্র উপকূলে আছডে় পড়ার পরে দুর্বল হয়েছে মিগজাউম৷ মৌসন ভবন জানিয়েছে, বাপতালা থেকে ১০০ কিমি উত্তর-পশ্চিমে ও খাম্মান থেকে ৫০ কিমি দক্ষিণে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড়৷ এর অভিমুখ উত্তর-পশ্চিম দিকে৷ ধীরে ধীরে গভীর নিম্নচাপে বদলে যাবে ঘূর্ণিঝড়৷
মিগজাউমের প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতি বিস্তর হয়েছে৷ মৌসম ভবন জানিয়েছে, ৩ এবং ৪ ডিসেম্বরে চেন্নাইয়ের বেশির ভাগ জায়গায় ২০০ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টি হয়েছে৷ যা ২০১৫ সালের বন্যার পর এই প্রথম৷ ভারী বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে চেন্নাই, কাঞ্চিপুরম, তিরুভাল্লুর এবং চেঙ্গলপেটে জেলাতে৷ কোট্টুরপুরম, মুথিয়ালপেট, তাম্বারম, অশোকনগর, কাট্টুপক্কম, পেরুনগুডি়র মতো শহরের বেশির ভাগ এলাকা কয়েক ফুট জলের তলায় চলে গেছে৷
বন্যা পরিস্থিতি হতেই দ্রুত সাহায্যে নেমেছে নৌবাহিনী তথা এনএলসি ইন্ডিয়া লিমিটেডের মতো সংস্থা৷ তারা জল নামাতে ১৬টি বড় মাপের পাম্প পাঠানো হয়েছে চেন্নাইয়ে৷ এই শক্তিশালী মোটরচালিত পাম্পগুলি সাধারণত, খনিতে জমা জল দ্রুত বের করার জন্য ব্যবহার করা হয়৷ বন্যা কবলিত এলাকাগুলি মানুষদের উদ্ধার করতে চেন্নাইয়ের রাস্তায় তাদের নৌকা নামিয়েছে ভারতীয় নৌসেনা৷ কোনও কোনও এলাকায় নৌবাহিনীর কর্মীদের খাবারের প্যাকেট, পানীয় জল বিতরণ করতেও দেখা গিয়েছে৷ উদ্ধার ও ত্রাণ অভিযানে নেমেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও৷ দুই রাজ্য মিলিয়ে তাদের মোট ২৭টি দল কাজ করছে৷
নৌসেনার পাশাপাশি উদ্ধার ও ত্রাণের কাজে হাত লাগিয়েছে বায়ুসেনাও৷ দুটি হেলিকপ্টার মাধ্যমে ৫০০ প্যাকেট খাদ্য সামগ্রী এবং রেশন পৌঁছে দেওয়া হয়েছে৷ অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের জন্য আরও অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছে বায়ুসেনা৷