ভোটের আগে যতটা বলি, ভোটের পর তার থেকেও বেশি করে করি ,”মমতা”

আগরতলা, ৭ ফেব্রুয়ারি– ত্রিপুরার মাটিতেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের এতো চাহিদা তা হয়ত মঙ্গলবারের রোড শো না দেখলে বোঝার উপায় নেই। মঙ্গলবার আগরতলার বুকে প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটারের রোড শো করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে তৃণমূলের যুব সভাপতি অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের সামনে থেকে এই  ‘রোড শো’- এ অংশ নিয়ে শহর পরিক্রমা করে আবার ফিরে আসেন রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনেই। এই রোড শোয়ে মমতাকে দেখতে, তার সঙ্গে ছবি তুলতে যেভাবে মানুষের ঢল নামতে দেখা যায় তা তৃণমূলের স্থানীয় নেতানেত্রীদেরও অবাক করে দিয়েছে। এক মুহূর্তের জন্য জনসমুদ্র দেখে মনে হচ্ছিল, এ যেন ভিনরাজ্য নয়, বাংলারই কোনও এক শহর। বাংলায় মমতা যেখানেই যান ঠিক এমনটাই জনসমুদ্র দেখতে পাওয়া যায় মমতা কারিশমায়। ঠিক যেমনটা মঙ্গলবার করলেন আগরতলার সভায়। মমতার প্রতি  আগরতলাবাসীদের এই উৎসাহ ঠিক তেমনই  ছিল যেমন প্রধানমন্ত্রী মোদিকে দেখতে মানুষের ভিড় উপচে পরে বিভিন্ন শহরে।   

বাংলা-ত্রিপুরাকে ভাইবোন আখ্যা দিয়ে তৃণমূল নেত্রী এদিন শুরুতেই ত্রিপুরাবাসীকে একাত্মতার বার্তা দিলেন। মনে করালেন, আমাদের ভাষা এক, সংস্কৃতি এক, অভ্যাস এক, ধর্মনিরপেক্ষতার বার্তা এক। ত্রিপুরা, মেঘালয় তথা গোটা উত্তরপূর্ব ভারতের প্রতি তাঁর বিশেষ ভালবাসা আছে, সেটাও এদিন মনে করা তৃণমূল নেত্রী। সভা থেকে বিজেপিকে কোনঠাসা করতে গোনালেন বাংলায় তৃণমূলের নানান উন্নয়নমূলক কর্মসূচির তালিকা। বাংলা মডেলকেই হাতিয়ার করে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, দুয়ারে সরকার থেকে শুরু করে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের ফিরিস্তি দেখিয়ে ত্রিপুরাবাসীকে দুর্দশা থেকে মুক্তি দেওয়ার স্বপ্ন দেখালেন মুখ্যমন্ত্রী। সবুজশ্রী থেকে সমব্যাথী পর্যন্ত বাংলার সরকারের যাবতীয় কর্মসূচির কথা তুলে ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রিপুরাবাসীর উদ্দেশে প্রশ্ন করলেন, বাংলা যদি পারে, তাহলে ত্রিপুরা কেন পারবে না?

উল্লেখ্য, ত্রিপুরায় এবার ৬০টি আসনের মধ্যে ২৮টিতে প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। তবে ইতিমধ্যে দলবদলুদের জন্য দলের সংগঠনের ক্ষতি হয়েছে সেটাও বিলক্ষণ জানেন মমতা। তাই ত্রিপুরাবাসীর উদ্দেশে তাঁর আহ্বান, আপনারা বাম অপশাসন দেখেছেন, বিজেপি দেখেছেন, কংগ্রেসের সরকারও দেখেছেন। একবার তৃণমূলকে সমর্থন করুন। আমরা বাংলায় পেরেছি, ত্রিপুরায় পারব। আর যদি প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারি তাহলে ফিরিয়ে দেবেন। তৃণমূল নেত্রীর সংযোজন, ‘যদি একটু পাই, হাজার গুণ ফেরত দেব। আমরা ভোটের আগে যতটা বলি, ভোটের পর তার থেকেও বেশি করে করি।’

মমতার সাফ কথা, কংগ্রেস বা সিপিএম নয়। বিজেপির বিকল্প শুধু তৃণমূলই। সিপিএম ২৫ বছরে ত্রিপুরাকে শেষ করে ফেলেছে। আর কংগ্রেস ত্রিপুরায় সিপিএমের বি টিম হিসাবে কাজ করছেন। মমতার অভিযোগ, কংগ্রেসে দলবদলু ভরতি। তাঁরা চার বছর ক্ষমতায় থাকার জন্য দল বদলান। মমতা বলেন, তিনি তৃণমূল না গঠন করলে কংগ্রেসে থাকলে বাংলায় পরিবর্তন হত না।