কলকাতা,২২ ফেব্রুয়ারি — উন্নত আধুনিক বিনোদনের উপকরণের দাপটে বাংলা থেকে যে সকল লোক সংস্কৃতি আজ হারিয়ে যেতে বসেছে বেণী পুতুল নাচ তার মধ্যে অন্যতম। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পদ্মতামলি গ্ৰামে বেণী পুতুল নাচের আলাদা কদর আছে। মূলত মাটি, তালের আঁটি, নারকেল মালা, কাঠ, কাগজ ইত্যাদি দিয়ে পুতুল তৈরি করা হয়। এরপর জামা কাপড় পড়িয়ে নারী পুরুষ সাজানো হয়। বেণী পুতুল নাচ শিল্পীরা নিজেরা গান বাঁধেন। এরকম বেণী পুতুল নাচ দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর ধরে দেখিয়ে আসছেন শিল্পী গণেশ ঘোড়ই । ছোট বয়সেই পদ্মতামলি গ্ৰামে গুরু কালাচাঁদ ঘড়াইয়ের কাছে বেণী পুতুল নাচ শেখা। পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভাল না থাকায় রাধা কৃষ্ণের বেণী পুতুল নাচ দেখিয়ে গ্ৰামে গ্ৰামে ঘুরে বেড়াতেন। তাতে যা উপার্জন হোত। এরপর কলকাতায় চলে আসেন। শহরের অলিতে গলিতে ঘুরে ঘুরে বেণী পুতুল নাচ দেখিয়ে মানুষের মন জয় করতেন। নিজেই গান রচনা করেন। কখনো তা ধর্মীয় ও বিনোদন মূলক, আবার কখনো তা সমাজ সচেতনতা মূলক। গ্ৰাম থেকে শহরে এসে কিছুদিন বিখ্যাত পাপেট শিল্পী পদ্মশ্রী সুরেশ দত্তের দলেও কাজ করেছেন গণেশ বাবু। সরকারী অনুষ্ঠানেও বেণী পুতুল নাচ দেখিয়েছেন গণেশ বাবু। কথা বলতে বলতে চোখে জল এসে যায় তাঁর। একসময় বেণী পুতুল নাচ ছিল তাঁর ধ্যান জ্ঞান । আজ তা হারিয়ে যেতে বসেছে। ফলে বাধ্য হয়ে তাঁকে অন্য পেশা গ্রহণ করতে হচ্ছে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এখন বেণী পুতুল নাচের চাহিদা অনেক কমে আসছে বলে জানান শিল্পী গণেশ ঘোড়ই। তাঁর আর্জি সরকার যদি বেণী পুতুল নাচ শিল্পীদের পাশে না থাকে তাহলে বাংলার এই ঐতিহ্যবাহী লোক সংস্কৃতি হারিয়ে যাবে।