কলকাতা, ১৭ ডিসেম্বর– তিনি যে দলের অন্যদের থেকে একদম আলাদা তাই প্রমান করলেন মমতার আমন্ত্রণে ১৪ তলায় একা গিয়ে। শনিবার নবান্নের কনফারেন্স রুমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে আমন্ত্রণ জানালেন নবান্নের চোদ্দতলায়। এক কথায় রাজি হয়ে গেলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সঙ্গে কাউকে নিলেন না। কাউকে না।
অথচ তাঁরই দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারী ঠিক এর বিপরীতে গা ভাসিয়েছিলেন। ক’দিন আগে বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকেও তাঁর ঘরে ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দু হঠাৎই এই বার্তা পেয়ে সাত সতেরো ভেবেছিলেন। তারপর অগ্নিমিত্রা পল, মনোজ টিগ্গাদের নিয়ে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে।
অমিত শাহ কিন্তু একদম কিছু ভাবলেন না। নবান্নে পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের বৈঠক হবে আর তার পর মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে তাঁর কক্ষে যেতে বলবেন না, এটা কখনওই হতে পারে না। বরং মমতা যা করেছেন সেটাই প্রশাসনিক শিষ্টাচার ও অতি স্বাভাবিক ঘটনা।
তবে মমতার এই আমন্ত্রণ শুধু সৌজন্য বিনিময় থাকবে নাকি অন্য দিকে মোড় নেবে তা ভবিষ্যত বলবে। তবে এই সৌজন্য সাক্ষাতে কথোপথন নিয়ে পর্যবেক্ষকদের মতে, মুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সৌজন্য বৈঠক হলেও শুধু ফুল-ফল-পাতা নিয়ে আলোচনা হয় না। সৌজন্যের সূত্র ধরেই মূল বিষয় উঠে আসে। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে তিনটি দেশের সীমান্ত রয়েছে। ফলে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংক্রান্ত বহু বিষয় বাংলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সেই প্রসঙ্গে কোনও আলোচনা হওয়া অসম্ভব নয়। আবার কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কে এখন উপর উপর একটা সংঘাত দেখা যাচ্ছে। বাংলার বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্র বরাদ্দ আটকে রেখেছে। আবার অমিত শাহর আস্থাভাজন নেতা শুভেন্দু অধিকারী প্রায়ই দিল্লির নাম নিয়ে বাংলার আইএএস এবং আইপিএস অফিসারদের হুঁশিয়ার করার চেষ্টা করছেন। সেই বিষয় অর্থাৎ তৃণমূলের ভাষায় শুভেন্দুর ভয় দেখানো বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসতে পারে।