পুলিশের বিরুদ্ধে ‘গুন্ডাগিরি’র অভিযোগ, সারারাত হাসপাতালের মেঝেয় কাটালেন স্বাতী মালিওয়াল  

দিল্লি, ২২ আগস্ট – বন্ধুর কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে। ওই কিশোরী দিল্লির হাসপাতালে ভর্তি। এই পরিস্থিতিতে নির্যাতিতা কিশোরীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বাধা পেলেন দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতী মালিওয়াল। শুধু ওই কিশোরী নয়, কিশোরীর মায়ের সঙ্গেও পুলিশ দেখা করতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি । পুলিশের বিরুদ্ধে ‘গুন্ডাগিরি’র অভিযোগ তুলে সোমবার সারারাত হাসপাতালেই কাটান দিল্লির মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতী মালিওয়াল। নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করবেন বলে হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে রাত কাটিয়েছেন তিনি। মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতী মালিওয়ালের খোলা মেঝেতে ঘুমোনোর ছবি ভাইরালও হয়ে যায় ।

সংবাদ সংস্থা এএনআইকে মালিওয়াল বলেন, “দিল্লি পুলিশ গুন্ডাগিরিকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। তারা নির্যাতিতা এবং তার মায়ের সঙ্গে দেখা করতে দিচ্ছে না। শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সনকেও তো নির্যাতিতার মায়ের সঙ্গে দেখা করতে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।” স্বাতীর প্রশ্ন, কেন তাঁকে নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হবে না ?  তিনি বলেন , ” বুঝতে পারছি না, দিল্লি পুলিশ আমার কাছ থেকে কী লুকোতে চাইছে!” এর পরই মালিওয়াল প্রশ্ন তোলেন, শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সনকে যদি দেখা করতে দেওয়া হয়, তা হলে তাঁকে কেন বাধা দেওয়া হচ্ছে?

সোমবার দুপুর থেকে ওই  হাসপাতালেই ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষায় ছিলেন দিল্লি মহিলা কমিশনের প্রধান স্বাতী মালওয়াল। তিনি জানিয়ে দেন, যতক্ষণ না তাঁকে  নির্যাতিতা এবং তার মায়ের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হবে, ততক্ষণ তিনি হাসপাতাল ছেড়ে এক পা-ও নড়বেন না। স্বাতী বলেন,  “নির্যতিতাকে কিভাবে সাহায্য করা হচ্ছে আমি জানতে চাই। ওর চিকিৎসা ঠিক মতো হচ্ছে কি না, তা-ও জানতে হবে।”


কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে দিল্লি সরকারের এই শীর্ষস্তরের আধিকারিককে। অভিযুক্ত প্রেমোদয় খাখা দিল্লি সরকারের মহিলা এবং শিশু উন্নয়ন দফতরের সহ-অধিকর্তা। প্রেমোদয় এবং তাঁর স্ত্রীকে উত্তর দিল্লির একটি এলাকার থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে হৈচৈ শুরু হতেই পালানোর চেষ্টা করেছিলেন এই দম্পতি। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের নির্দেশে ওই সরকারি আধিকারিককে তাঁর পদ থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে খবর,  অভিযুক্তকে কিশোরী ‘মামা’ বলে ডাকত। ২০২০ সালে ওই কিশোরীর বাবা মারা যাওয়ার পর ওই ‘মামা’র বাড়িতেই থাকত সে। ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের জানুয়ারির মধ্যে মামার বাড়িতে থাকাকালীন কিশোরীকে বহু বার ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে ওই ‘মামা’র বিরুদ্ধে। শুধু তাই-ই নয়, কিশোরী যাতে অন্তঃসত্ত্বা না হয়ে পড়ে, সেজন্য প্রেমোদয়ের স্ত্রী সীমারানি তাকে গর্ভপাতের ওষুধ খাইয়ে বাড়িতেই গর্ভপাতের ব্যবস্থা করে। কিশোরী পুলিশকে সেই ঘটনা জানালে খবর প্রকাশ্যে আসে।  সোমবার গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত দম্পতিকে। আপাতত কিশোরীর চিকিৎসা চলছে। ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ওই কিশোরীর বয়ান রেকর্ড করা হবে।