নিজস্ব প্রতিনিধি – ভোটের প্রচার করতে গিয়ে মাটি ছেড়ে শূন্যে উঠে গেলেন নরেন্দ্র মোদি। বহুদিন আগে কংগ্রেস আমলে চালু ‘মিশন ভারত’ প্রকল্পে ভারতীয় বিজ্ঞানীদের কৃতিত্ব নিজে নিতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মোদির এহেন আচরণ নির্বাচনী বিধি বহির্ভূত বলেই অভিযোগ করেন তৃণমূল নেত্রী। রাহুল গান্ধির সুরে সুর মিলিয়ে একে মাত্রাছাড়া নাটক বলেই মনে করছেন তিনি। এই নিয়ে বুধবার একগুচ্ছ ট্যুইটও করেছেন মমতা।
প্রথম ট্যুইটে মমতা বলেন, ‘মিশন শক্তি’ নামে বিশ্বমানের প্রকল্প দেশে দীর্ঘদিনের একটি চালু প্রকল্প। আমরা আমাদের বিজ্ঞানীদের জন্য গর্বিত। ডিপার্টমেন্ট অফ রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও)-এর সাফল্য এটি। এরপর এই মিশন শক্তি নিয়ে মোদির প্রচারসর্বস্বতাকে কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী ট্যুইটে লিখেন, মহাকাশ গবেষণা এবং তার উন্নতি একটি চলমান প্রক্রিয়া। যার কৃতিত্ব আমাদের মহাকাশ বিজ্ঞানী এবং গবেষকদের। তৃতীয় ট্যুইটে মোদির ঘোষণাকে লাগামহীন নাটক বলে মন্তব্য করেন মমতা। ভোটের আগে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য মোদির এই নাটক নির্বাচনী আচরণবিধিকে ভঙ্গ করেছে বলে মনে করেন মমতা। এই সিরিজের শেষ টুইটে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মোদির এই ঘোষণা নিয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানানো হবে। আসলে এই সরকারের এক্সপায়ারি ডেট হয়ে গিয়েছে। তাই বিজেপি’র ডুবন্ত জাহাজকে অক্সিজেন দিতেই প্রধানমন্ত্রী এইসমস্ত বলছেন বলে মনে করছেন মমতা।
বুধবার তৃণমূলের নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ করার সময়ও এই বিষয়টি নিয়ে মোদিকে কটাক্ষ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, আজ হঠাৎ করে প্রধানমন্ত্রী একটা ‘থান্ডার স্টর্ম’ আসার কথা বলেন। দেশবাসীকে অনেক অপেক্ষায় রেখে মোদি একটা সাসপেন্স তৈরি করলেন। আমরা সকলেই ভাবছি কি বলবেন তিনি? হয়তো বলবেন, আমি আর প্রধানমন্ত্রী হতে চাই না। শেষে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষ করে ঘোষিত সময়ের অনেকটা পরে এসেই তিনি বলেন, দেশ আজ এক গুরুত্বপূর্ণ শক্তি অর্জন করেছে। মহাকাশে লো অরবিটে একটি উপগ্রহকে এদিন রকেট ছুঁড়ে ধ্বংস করেছে ভারত। যে রকেট ভারতেই তৈরি হয়েছে। এই সাফল্যের তালিকা বর্তমানে ভারতের স্থান চতুর্থ।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন তাঁর কালীঘাটের বাড়িতে প্রশ্ন তোলেন, এই কৃতিত্ব তো ভারতের মহাকাশ বিজ্ঞানীদের। এই ঘোষণা কেন মোদি করবেন? তিনি কি বিজ্ঞানী কিংবা গবেষক? তিনি কি মহাকাশচারী? নির্বাচনের আগে এই ঘোষণা করে কি বিজেপি’কে অক্সিজেন দিতে চাইলেন মোদি? এই প্রসঙ্গে ইন্দিরা গান্ধি প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় ভারতীয় বিজ্ঞানী রাকেশ শর্মার মহাকাশে পা রাখার অতীত প্রসঙ্গ তুলে আনেন। সেই সময় ইন্দিরা গান্ধি স্পেস সেন্টারে বসে বিজ্ঞানী রাকেশকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, মহাকাশ থেকে ভারতকে কেমন দেখাচ্ছে? রাকেশ উত্তর দিয়েছিলেন, ‘সারে জাহা সে আচ্ছা হিন্দুস্তান হামারা’। এদিন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধির প্রসঙ্গ টেনে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আত্ম-অহমিকাকেই তুলে ধরেন মমতা। শুধু তা-ই নয়, নির্বাচনের আগে দীর্ঘ সময় আত্মপ্রচারের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করায়, দূরদর্শনকে মোদিদর্শন বলেও কটাক্ষ করেন মমতা। বলেন, এই মাধ্যমে তো বিরোধীদের প্রচারের জন্যও সময় ভাগ করে দেওয়া উচিত।