দিল্লি, ২৪ জুন– শনিবার বিকাল ৩’টায় মণিপুর নিয়ে দিল্লিতে সর্বদলীয় বৈঠকে বসলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মণিপুর নিয়ে এটি দ্বিতীয় সর্বদলীয় বৈঠক। প্রথম বৈঠকটি ডেকেছিলেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। ইম্ফলের সেই বৈঠক কার্যত বিফলে যাওয়ার পরই এই বৈঠকের ডাক ।
সূত্রের খবর, প্রায় ৩ মাস অতিবাহিত মনিপুর জাতি দাঙ্গার। সেই দাঙ্গার মাস পেরনোর মুখে রাজ্য সফরে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। শাহের সফরের পর আরও অন্তত ৭০জন খুন হয়েছেন রাজ্যে।
এদিনের বৈঠকে তৃণমূলের তরফে যোগ দিয়েছেন দলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও ব্রায়েন। তৃণমূলের দাবি, “ স্রেফ সর্বদল বৈঠক যথেষ্ট নয়। মণিপুরের মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ফেরাতে হলে পাঠাতে হবে সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল। এমনটাই দাবি সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের। মণিপুরে ভীতি, আশঙ্কা আর নিরাশার আবহ। বহু মুল্যবান প্রাণ চলে গিয়েছে। আজ মণিপুরে জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া, ৪ হাজার বাড়িতে আক্রমণ হয়েছে, ৬০ হাজার মানুষ ঘরছাড়া। ৫০ দিন ইন্টারনেট নেই। সেখানে সাংবিধানিক সব ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। মণিপুর জ্বলছে মানে অসম, মেঘালয় সব রাজ্যের উপরই প্রভাব পড়বে।” তৃণমূল বলছে, গত ২৯ মে মণিপুরে যেতে চেয়ে চিঠি লিখেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় ৩ সপ্তাহ বাদে কেন্দ্র শুধু সেই চিঠির প্রাপ্তিস্বীকার করেছে। ১৫ জুন ডেরেক ও’ব্রায়েন সংসদে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চেয়ে চিঠি দিয়েছিলেন সংসদীয় কমিটিকে। সেই দাবিও মানা হয়নি।
আর তারপরই মণিপুর নিয়ে সুর চড়িয়েছে বিরোধী দলগুলি। মণিপুর নিয়ে বিরোধী শিবিরের মধ্যে সবচেয়ে সরব কংগ্রেস। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার তোপ দেগে চলেছে কংগ্রেস। বস্তুত গত সোমবার সোনিয়া গান্ধি মণিপুর নিয়ে ভিডিও বিবৃতি দেওয়ার পর শাহের মন্ত্রক দিল্লিতে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকে।
সম্প্রতি মণিপুর সরকারের এক রিপোর্ট বলা হয়েছে, রাজ্যে মায়ানমার থেকে অনুপ্রবেশ ঘটছে। প্রায় ২ হাজার অনুপ্রবেশকারী রয়েছে রাজ্যে। এই পরিস্থিতিতে বিরোধীদের টানা আক্রমণের মুখে পড়ে একপ্রকার বাধ্য হয়েই শনিবার সর্বদল বৈঠক ডাকেন অমিত শাহ।
উল্লেখ্য, রাজ্য স্তরের প্রথম সর্বদলীয় বৈঠকে কংগ্রেস সহ একাধিক দল মণিপুরে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছিল। সেই সঙ্গে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির দাবিও ওঠে। তবে সূত্রের খবর, কেন্দ্রের তরফে এখনই তেমন কোনও পদক্ষেপ করার সম্ভাবনা কম।