• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

মানচিত্র বিতর্কে ভারতের পাশে রাশিয়া,  গালওয়ান নিয়েও আশাবাদী আলিপোভ 

মস্কো, ২ সেপ্টেম্বর –  অরুণাচল প্রদেশকে নিজেদের দেশের অংশ বলে দাবি করে বিতর্কিত মানচিত্র প্রকাশ করেছে চিন। তৎক্ষণাৎ তার তীব্র বিরোধিতা করেছে ভারত। এবার মানচিত্র বিতর্কে  ভারতের পাশে দাঁড়াল রাশিয়া। ভারতে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত ডেনিস আলিপোভ জানালেন, দাবি করলেই কিছু বদলাবে না। ফলে নতুন করে চিনের মানচিত্র বিতর্কে ভারতের পাশেই আছে রাশিয়া, এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।  সম্প্রতি

মস্কো, ২ সেপ্টেম্বর –  অরুণাচল প্রদেশকে নিজেদের দেশের অংশ বলে দাবি করে বিতর্কিত মানচিত্র প্রকাশ করেছে চিন। তৎক্ষণাৎ তার তীব্র বিরোধিতা করেছে ভারত। এবার মানচিত্র বিতর্কে  ভারতের পাশে দাঁড়াল রাশিয়া। ভারতে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত ডেনিস আলিপোভ জানালেন, দাবি করলেই কিছু বদলাবে না। ফলে নতুন করে চিনের মানচিত্র বিতর্কে ভারতের পাশেই আছে রাশিয়া, এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। 

সম্প্রতি দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর প্রশ্নের জবাবে আলিপোভ বলেন, ‘চিনের মানচিত্র প্রকাশে কোনও কিছুই বদলাবে না। আশা করছি আগামীদিনে ভারত ও চিন নিজেদের সমস্যার সমাধান করবে।’ জি-২০ সম্মেলনের মুখে মস্কোর এই প্রতিক্রিয়ায় চাপ বাড়ল জিনপিং প্রশাসনের। কারণ এর আগে আরও চার দেশ এই মানচিত্রের বিরোধিতা করে একে নস্যাৎ করেছে।    

উল্লেখ্য, গত ২৮ আগস্ট দেশের নতুন সরকারি ম্যাপ প্রকাশ করে চিন। সেখানে অরুণাচল প্রদেশকে নিজেদের বলে দাবি করে তারা। এমনকী আকসাই চিনও তাদের দেশের অন্তর্ভুক্ত বলে দাবি বেজিংয়ের। এরপরই জিনপিং প্রশাসনের নিন্দায় সরব হয় মোদি সরকার। চিনের এমন পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর বলেন, এই ধরণের মানচিত্র প্রকাশ চিনের অভ্যাস। ভারতের এমন কটাক্ষের পর পালটা আক্রমণ করে চিনের বিদেশমন্ত্রক জানায়, ”আমরা আমাদের ভূখণ্ডের সীমানা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। আইন মেনেই নতুন ম্যাপ তৈরি করা হয়েছে। এই নিয়ে বেশি ভাবার কোনও কারণ নেই।” এরপরই স্নায়ুযুদ্ধ আরও তীব্র হয়েছে দু’দেশের মধ্যে।
প্রসঙ্গত, চিনের মানচিত্র বিতর্কে সমর্থন একাধিক দেশের সমর্থন পেয়েছে ভারত। ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স ও ব্রুনেই। চিনের নতুন মানচিত্রের তীব্র বিরোধিতা করে সরব হয় এই চার দেশ। এবার রাশিয়ার সমর্থন পেলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। ফলে জি-২০-র মঞ্চে চিনকে কোণঠাসা করতে শক্তি বাড়ছে ভারতের।

এদিন গালওয়ান সংঘর্ষ নিয়েও কথা বলেন আলিপোভ। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া, চিন ও ভারতের মধ্যে ত্রিস্তরীয় আলোচনার ব্যবস্থা রয়েছে। ২০২০ সালের আগে তা খুবই সক্রিয় ছিল। তবে গালওয়ান সংঘর্ষের পর দুই পড়শি দেশের মধ্যে গোটা আলোচনা প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল হয়ে উঠেছে। তবে এই সমস্যা দ্রুত মিটে যাবে বলে আমরা আশাবাদী। এই ত্রিস্তরীয় আলোচনা ব্যবস্থার মাধ্যমে দুই দেশ নিজেদের মতানৈক্য দূর করতে পারবে বলে আমরা বিশ্বাসী।’

 গালওয়ানে চিনা ফৌজের সঙ্গে ভারতীয় জওয়ানদের লড়াইয়ের পর যুদ্ধ বাঁধার উপক্রম হয়েছিল ভারত ও চিনের। দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে লড়াই হলে তার পরিনাম হত ভয়াবহ। কিন্তু রাশিয়ার মধ্যস্থতায় আলোচনার টেবিলে ফিরে আসে দুই দেশ। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের মতে, গালওয়ানের পর ভারত আরও দ্রুত আমেরিকার অক্ষে ঢুকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা ছিল রাশিয়ার। তাই বেজিংকে ভবিষ্যতের কথা মনে করিয়ে দিয়ে কূটনীতির পথে হাঁটার উপদেশ দেয় মস্কো।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় মুখোমুখি হয় ভারত ও চিনের ফৌজ। দু’পক্ষের জওয়ানদের মধ্যে বেশ কয়েক ঘণ্টা লড়াই হয়। রক্তক্ষয়ী সেই সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় জওয়ান শহিদ হন। ১৯৭৫ সালে পর এই প্রথম প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের পরেই সীমান্তে  যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়। অবশেষে পরিস্থিতি শান্ত করতে কয়েক দফা আলোচনায় বসে দুই দেশের সেনাবাহিনী।