দিসপুর, ২৭ মে– কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আগামী সোমবার মণিপুরে যাবেন। শাহের সফরের সময় পরিস্থিতির অবনতি আটকাতে মণিপুরের অশান্ত এলাকায় ফের সেনা ও আধা সেনা মোতায়েন করা হচ্ছে। বিশেষ করে যে সব জায়গায় প্রথম দফায় বড় আকারে গোলমাল হয়েছিল। ৩ মে’ থেকে পরবর্তী দিন সাতেকের হিংসায় ৭৫ জন খুন হন। নতুন করে হামলায় খুন হয়েছেন আরও একজন। তাঁর তিনদিন ওই অশান্ত রাজ্যে থাকার কথা। তিনি রাজধানী ইম্ফলের বাইরে যাবেন কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়। কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের আগে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে মণিপুরে গিয়েছেন।
এদিকে, রাজ্যের পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক নয়। বরং কেন্দ্রের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী আরকে রঞ্জন সিংহের কোংবার বাড়িতে হামলার চেষ্টা চালায় বিক্ষুব্ধ মানুষ । খাস রাজধানী মধ্য ইম্ফলে তাঁর বাড়ি। হামলার চেষ্টার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন। তবে পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে হামলার চেষ্টা আটকে দেয়।
সরকারি সূত্রের খবর, রাজ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল, বিপুল সংখ্যায় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েনের পরও বিবদমান গোষ্ঠীগুলির আস্থা অর্জন সম্ভব হয়নি। রাজ্য প্রশাসনের আলোচনায় প্রস্তাব তেমন এগোয়নি। পাশাপাশি প্রশাসনের উপর ভরসা না রেখে দুই গোষ্ঠীর মানুষই এলাকা ছাড়ছেন। এটাও বড় ধরনের বিপদ ডেকে এনেছে প্রশাসনের জন্য।
মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং রাজ্য ছেড়ে না যেতে বিবদমান মইতেই এবং কুকি-সহ অন্যান্য জাতি গোষ্ঠীগুলিকে অনুরোধ করেছেন। বলেছেন, দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকার দল, গোষ্ঠী বিচার করবে না। পাহাড় এবং সমতল, দু জায়গাতেই ধরপাকড় চলবে।
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, রাজ্যে ৩৮টি জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে কেন্দ্র ও রাজ্যের বাহিনী যৌথভাবে অভিযান চালাবে। শান্তিপ্রিয় মানুষকে এই অভিযানে পাশে থাকার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্যে এখন কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৩৪ হাজার জওয়ান মোতায়েন আছে। তারা শান্তি প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত থাকবে।
মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরও অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন গত বুধবার কী করে তবে একাধিক জায়গায় হিংসাত্মক ঘটনা ঘটতে পারল। ওইদিন গুলি চলে। তাতে একজন নিহত হন। বহু ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। প্রশাসনের উপর আস্থা হারিয়ে রাজ্য ছাড়ার হিড়িক পড়ার সেটাই কারণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহল। এই পরিস্থিতিতে শাহের সফর কতটা সফল হয় তা নিয়ে কৌতুহল তৈরি হয়েছে।