অতিমারির পর এই রাজ্যটির অধিকাংশ পড়ুয়া পড়তে, লিখতে ভুলেছে, বলছে সমীক্ষা

রাঁচি ,১৯ ডিসেম্বর — কোভিড অতিমারির পর ঝাড়খণ্ডের বেশির ভাগ স্কুলের বড় অংশের পড়ুয়া পড়তে, লিখতেই ভুলে গিয়েছে। সরকারি প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক স্কুলগুলিকে হয় সঠিক পরিকাঠামো নেই, নয়তো শিক্ষক নেই। এমনটাই বলছে একটি সমীক্ষা। রাজ্যের ১৩৮টি প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক স্কুলে সেই সমীক্ষা করা হয়েছিল। তাতেই দেখা গিয়েছে, অতিমারির পর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্কুল খোলার পর পড়ুয়ারা প্রায় পড়তে, লিখতে ভুলেই গিয়েছে।

সমীক্ষাটি করেছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তারা জানিয়েছে, যে ১৩৮টি স্কুলে সমীক্ষা হয়েছে, সেগুলির মধ্যে ৫৩ শতাংশ প্রাথমিক স্কুল এবং ১৯ শতাংশ উচ্চ প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়া এবং শিক্ষকের অনুপাত ঠিক নয়। শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী, প্রতি ৩০ জন বা তার কম সংখ্যক পড়ুয়া পিছু এই স্কুলগুলিতে এক জন করে শিক্ষক নেই। প্রসঙ্গত, ঝাড়খণ্ডের সেই সব স্কুলের উপরই সমীক্ষা চালানো হয়েছে, যেখানে অন্তত ৫০ শতাংশ পড়ুয়া তফসিলি জাতি এবং জনজাতি পরিবারের।

রিপোর্ট বলা হয়েছে, কোভিডের কারণে প্রায় দু’বছর এ দেশে বন্ধ ছিল স্কুল। বিশ্বের অন্য কোনও দেশে এত দিন স্কুল বন্ধ ছিল না। তার প্রভাব পড়েছে পড়ুয়াদের উপর। সমীক্ষা হয়েছে যে ১৩৮টিতে, তার মধ্যে ২০ শতাংশ স্কুলেই এক জন মাত্র শিক্ষক। তাঁদের বেশির ভাগই পুরুষ এবং অস্থায়ী ভাবে নিযুক্ত। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, এক জন শিক্ষককে নিয়ে চলছে যে সব স্কুল, সেগুলিতে ৯০ শতাংশ পড়ুয়াই আদিবাসী বা দলিত। সমীক্ষা হয়েছে যে সব স্কুলে, সেগুলির ৪০ শতাংশই চালান অস্থায়ী ভাবে নিযুক্ত শিক্ষকেরা।

রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে প্রাথমিক স্কুলগুলিতে উপস্থিতির হার ছিল ৬৮ শতাংশ। উচ্চ প্রাথমিক স্কুলগুলিতে উপস্থিতির হার ৫৮ শতাংশ। যে ১৩৮টি স্কুলে সমীক্ষা চালানো হয়েছে, তার একটিতেও ভাল শৌচালয়, বিদ্যুৎ এবং জল সরবরাহ নেই। দুই-তৃতীয়াংশ স্কুলই পাঁচিল দিয়ে ঘেরা নয়। ৬৪ শতাংশ স্কুলে কোনও খেলার মাঠ নেই, ৩৭ শতাংশ স্কুলে কোনও গ্রন্থাগারে কোনও বই নেই। সমীক্ষার সময় দুই-তৃতীয়াংশ স্কুলের শিক্ষকরাই জানিয়েছেন, স্কুলে মিড-ডে মিল দেওয়ার মতো যথেষ্ট তহবিল নেই।