পাটনা, ৫ এপ্রিল– প্রায় ৯১ বছর পর জাত গণনার ইতিহাস আওড়ালো বিহার। ১৯৩২ সালের পর ফের দেশে কোনও রাজ্যে জাত গণনা শুরু হতে যাচ্ছে। স্বাধীনতার পর এই প্রথম জাত গণনার কাজ হতে চলেছে ভারতে।
গোটা দেশেই জনগণনার সঙ্গে জাত গণনা করার দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করেছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব। কিন্তু বিজেপি সরকার সেই দাবি মানেনি।
১৯৩২ এ ব্রিটিশ সরকারের সময়ে হওয়া জনগণনার সময় দেশের সমস্ত জাতির সংখ্যা আলাদা করে গোনা হয়েছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আর জাত গণনা হয়নি। এখন জনগণনার সময় জাতের তিনটি ক্যাটিগরি অনুসরণ করা হয়—সাধারণ, তফসিলি জাতি ও তফসিলি উপজাতি।
বিহারে নীতীশ, তেজস্বীরা পূর্ণাঙ্গ জাত গণনার দাবি তুলতে একে একে অনেক দল তাতে গলা মিলিয়েছে। তাতে নয়া মাত্রা যোগ হয়েছে গত সোমবার চেন্নাইতে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্টালিনের ডাকা সামাজিক ন্যায় সম্মেলন। সেখানে গোটা দেশে জাত গণনার পক্ষে প্রস্তাবে সই করেছে অবিজেপি ১৪টি দল।
জাত গণনা করিয়ে আসলে নীতীশ কুমার, লালুপ্রসাদের দাবি, সংরক্ষণের নানা সুবিধা চালু হলেও দেশে বহু জাতি গোষ্ঠীর আর্থিক ও সামাজিক উন্নয়ন সেভাবে হয়নি। আর তা সম্ভব হয়নি উচ্চবর্ণের সামাজিক দাপট বজায় থাকাতেই। অন্যদিকে, আরএসএসের চাপে এই সত্য কিছুতেই সরকারিভাবে প্রকাশ করতে চায় না মোদী সরকার। কেন্দ্রে ইউপিএ সরকার বিদায় নেওয়ার আগে জাত ভিত্তিক আর্থ সামাজিক সমীক্ষা শুরু করেছিল। মোদী সরকার সেই সমীক্ষার রিপোর্টও চেপে গিয়েছে। বিজেপি বিরোধীরা মনে করছে, এই সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ পেলে মোদীর সবকা সাথ সবকা বিকাশ স্লোগানকে বড়সর প্রশ্নের মুখে ফেলা যাবে।
বিহারে ১৫ তারিখ থেকে যে গণনা শুরু হবে তাতে বিভিন্ন জাতের জন্য আলাদা কোড নম্বর করা হয়েছে। যেমন ব্রাহ্মণদের কোড নম্বর হল ১২৪। যাদবদের ১৬৭। এখনও পর্যন্ত বিহারে ২১৬টি জাত বা কাস্টকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। তার মধ্যে কোন বেশি সব কটি পরিচিত জাতি গোষ্ঠীর অধীনে একাধিক সাব কাস্টের সন্ধান মিলেছে। যেমন ছয়টি করে সাব কাস্ট আছে ব্রাহ্মণ ও যাদবদের।