উত্তরকাশীতে নির্মীয়মান টানেলের একাংশ ভেঙে পড়ে আটকে প্রায় ৩৬ জন শ্রমিক

উত্তরকাশী, ১২ নভেম্বর –  উত্তরাখন্ডের উত্তরকাশীতে নির্মীয়মান টানেলের একটি অংশ ভেঙে পড়ে আটকে পড়েছেন প্রায় ৩৬ জন শ্রমিক।  উত্তরকাশীর কাছে রবিবার ভোর চারটে নাগাদ ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ টানেলের ২০০ মিটার অংশ ভেঙে পড়ে ধস নামে। এর ফলে ভিতরে আটকে পড়েন শ্রমিকরা। আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধার কাজ শুরু করা হয়েছে। এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি। তিনি জানান, সেখানে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে এনডিআরএফ এবং এসডিআরএফ।
 
সরকারি সূত্রে খবর, ব্রক্ষ্মখাল-যমুনোত্রী জাতীয় সড়কে টানেলটি ভেঙে পড়ে। উত্তরকাশীর এসপি অর্পণ যদুবংশী জানান,  সিল্কিয়ারা থেকে ডান্ডালগাঁও পর্যন্ত টানেলটি তৈরি করা হচ্ছিল । তিনি জানান , ওই টানেল নির্মাণ করছে এইচআইডিসিএল। ওই সংস্থার আধিকারিকদের মতে, প্রায় ৩৬ জন টানেলে আটকে পড়েছেন এবং তাঁদের নিরাপদে উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে।আধিকারিকরা জানান, প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, ওই টানেলের প্রবেশ পথ থেকে প্রায় ২৮০০ মিটার ভিতরে কাজ করছিলেন শ্রমিকরা। প্রবেশ পথের প্রায় ২০০ মিটার দূরে ধস নামে।  হাইড্রোইলেকট্রিক ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড এই টানেলের কাজ তদারকির দায়িত্বে রয়েছে। এই ঘটনায়,এখনও পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে। 
এদিকে এই ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী । তিনি জানান, এনডিআরএফ এবং এসডিআরএফ-এর দল এবং পুলিশকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে । বর্তমানে উদ্ধার অভিযান চলছে। তিনি বলেন, “ ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছি সবাই যেন সুস্থ ভাবে ফিরে আসেন। ” সেখানে পাঁচটি অ্যাম্বুল্যান্স রাখা হয়েছে বলেও জানান আধিকারিকরা।
আধিকারিক জানান, ওই শ্রমিকদের কাছে অক্সিজেন সিলিন্ডার আছে। তাও সেই শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং জীবনের কথা চিন্তা করে অতিরিক্ত অক্সিজেন পাঠানো হচ্ছে। পাইপে করে অতিরিক্ত অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে সেখানে। আটকে পড়া শ্রমিকদের কাছে প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। দ্রুত তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে। আধিকারিকরা জানান, সব ঋতুতে ব্যবহার করা যাবে এই রকম সাড়ে চার কিলোমিটার লম্বা ওই টানেল করা হচ্ছে।
যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধার কাজ চালানো নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সেই রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কমান্ডার মনিকান্ত মিশ্র। তিনি জানান, ইন্সপেক্টর জগদম্বা বিজালওয়ানের নেতৃত্বে এসডিআরএফ-এর একটি উদ্ধারকারী দলকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। সেখানে অন্য উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে সমন্বয় রেখেই কাজ করছেন এই বাহিনীর সদস্যরা।
সারা বছর দর্শনার্থীরা যাতে চারধাম যেতে পারেন তাই ‘অল ওয়েদার’ অর্থাৎ সমস্ত আবহাওয়ার জন্য এই টানেল বা সুড়ঙ্গ তৈরি হচ্ছে। এই রাস্তা তৈরি হলে উত্তরকাশী থেকে যমুনোত্রী ধাম যাওয়ার পথের দূরত্ব অন্তত ২৬ কিলোমিটার কমবে। দুর্ঘটনার কারণ কী তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।