কলকাতা , ১৮ মে –
রায় ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিচারপতি অমৃতা সিনহার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন অভিষেক। শুক্রবার এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা। শুধু অভিষেক নন, নিয়োগ দুর্নীতিতে অন্যতম অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষও ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করেছেন। শুরুতে শোনা যায় , বিচারপতি সিনহার রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারেন অভিষেক।
বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে বড় ধাক্কা খান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত কুন্তল ঘোষের চিঠির ভিত্তিতে ইডি-সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ এড়াতে অভিষেকের করা পুনর্বিবেচনার আর্জি খারিজ করে দেয় আদালত। এর পাশাপাশি অভিষেক ও কুন্তলকে ২৫ লাখ টাকা করে জরিমানার নির্দেশ দেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা।
তৃণমূলের নবজোয়ার কর্মসূচি উপলক্ষে আপাতত আসানসোলে রয়েছেন অভিষেক। সেখানেই তিনি হাই কোর্টের এই নির্দেশের কথা শোনেন। আসানসোল থেকেই তাঁর আইনজীবীদের সঙ্গে একপ্রস্থ আলোচনা সেরে ফেলন তিনি। রায়ের প্রতিলিপি হাতে পাওয়ার পর তা খতিয়ে দেখে কোর্টে আবেদন করা হবে।
এই রায়ে স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তি বেড়েছে ঘাসফুল শিবিরে। ‘জনসংযোগ’ কর্মসূচি নিয়ে অভিষেক যখন রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় চষে বেড়াচ্ছেন, তখন আদালতের এই রায়ে তৃণমূলকর্মীদের মনোবল ভাঙতে পারে বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদের পর হুগলি বলাগড়ের তৎকালীন তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষকে গ্রেফতার করে ইডি। গ্রেফতারির কয়েকদিন পরই তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করে তৃণমূল। বহিষ্কারের পরও একাধিকবার কুন্তলের মুখে শোনা যায় অভিষেকের নাম। সংবাদমাধ্যমের সামনে একাধিকবার তিনি দাবি করেন যে, তাঁকে দিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলানোর চেষ্টা করছেন ইডি আধিকারিকরা।
এই মামলার দায়িত্বে তখন ছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁকে ও হেস্টিংস থানাকে লেখা চিঠিতে কুন্তল দাবি করেন যে, ইডি তাঁকে দিয়ে অভিষেকের নাম বলাতে চাইছে। কুন্তলের চিঠির প্রেক্ষিতে ইডি ও সিবিআইকে অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয় আদালত। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্ট যান তৃণমূল সাংসদ। শীর্ষ আদালত অভিষেককে রক্ষাকবচ দিয়ে ফের হাইকোর্টে মামলা ফেরত পাঠায়। এই মামলাতে আগেই অভিষেকের রক্ষাকবচের আবেদন খারিজ করে দেন বিচারপতি সিনহা। এদিন ফের বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের রায় বহাল রাখল হাইকোর্ট।