দিল্লি, ১৮ অক্টোবর– এবার গালাগাল নিয়ে আপ বনাম বিজেপির লড়াই তুঙ্গে। গালাগালটি করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। করেছেন আম আদমি পার্টির গুজরাতের সভাপতি গোপাল ইটালিয়া । প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জাত তুলে গাল দেওয়ার একাধিক ভিডিও সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে ইতিমধ্যে। তার বিরোধিতা করে ছত্তীসগড়ের কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল বলেন, প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে আপ নেতার মন্তব্য অত্যন্ত আপত্তিজনক। প্রধানমন্ত্রীর মায়েরও অবমাননা করেছেন ওই নেতা। ভারত এই ধরনের মন্তব্য বরদাস্ত করে না।
যদিও গালাগালের এই ধারা নতুন নয়। পাঁচ বছর আগে গুজরাতের বিধানসভা ভোটের মুখে আজকের আপ নেতার মতো প্রবীণ কংগ্রেস নেতা মণিশঙ্কর আইয়ারও প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে ‘নীচ’ শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। মণিশঙ্করের সেই মন্তব্যের জবাবে দেশব্যাপী প্রতিবাদ আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল বিজেপি। কংগ্রেস হাইকমান্ড যদিও তার আগেই দলীয় নেতার পাশে না দাঁড়িয়ে মন্তব্যের নিন্দা করে তা খণ্ডন করেছিল।
গত সপ্তাহে গুজরাতের রাজকোটের সভায় প্রধানমন্ত্রী মোদী যদিও কুৎসা প্রসঙ্গে আপের বদলে কংগ্রেসকেই বেশি নিশানা করেন। তিনি বলেন, আমাকে ব্যক্তি আক্রমণ করে হাঁফিয়ে উঠে কংগ্রেস এখন আপকে বরাত দিয়েছে। ভুলে যাবেন না, কংগ্রেস আমাকে ‘মওত কা সওদাগর’ পর্যন্ত বলেছে।
প্রসঙ্গত, গুজরাত দাঙ্গায় রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ব্যর্থতা তুলে ধরতে ওই মন্তব্য করেছিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধি। কংগ্রেসের অভিযোগ ছিল, ব্যক্তি আক্রমণের সব সীমা অতিক্রম করেছে বিজেপি-ই। তারা সনিয়াকে ‘কংগ্রেসের বিধবা’ বলতে পর্যন্ত ছাড়েনি। তবে এই পর্ব বছর দশেক আগের।
এই দফায় প্রধানমন্ত্রীর রাজকোটের ভাষণের পর দিল্লির জাতীয় মহিলা কমিশন আপ নেতা ইটালিয়াকে তলব করে। কমিশনের বক্তব্য, কারও জাত তুলে মন্তব্য করা মানে তাঁর বাবা-মা’কেও অসম্মান করা। আপ নেতা প্রধানমন্ত্রীর মা’কে অসম্মান করেছেন। মন্তব্য ঘিরে অভিযোগের জবাবে দিল্লি পুলিশ গুজরাতের ওই আপ নেতাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
যদিও এতো সবের পর কংগ্রেস নেতা মণিশঙ্কর আইয়ারের মতো আপের ইটালিয়াও বলেছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীকে নীচ জাতির মানুষ বলেলনি। বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নীচ মানসিকতার মানুষ।
আপ-বিজেপি বিবাদের মধ্যে ছত্তীসগড়ের মুখ্যমন্ত্রীর আজকের নিন্দাসূচক প্রতিক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, কংগ্রেস হাইকমান্ডের নির্দেশেই ভূপেশ বাঘেল আপের বিরুদ্ধে মোদিকে অবমাননা নিয়ে সরব হয়েছেন। তিনি ভারত জোড়া যাত্রায় এখন রাহুল গান্ধির সঙ্গেই আছেন। কংগ্রেস আসলে এই প্রশ্নে আপের থেকে দূরত্ব তৈরি করে বিজেপির আক্রমণের ধার কমিয়ে দিতে চাইল প্রধানমন্ত্রীর অবমাননার বিরুদ্ধে মুখর হয়ে। তারা বুঝতে পেরেছে, প্রধানমন্ত্রী এই সুযোগে পুরনো কাসুন্দি ঘেঁটে কংগ্রেসকেও ঘায়েল করতে চান।