লখনউ, ৬ মার্চ– এক সময় যে বাবা-মা মুখে অন্ন তুলে না দিলে পেট ভর্তি না। সন্তানের সামান্য জ্বর, সর্দি-কাশিতে যে বাবা-মা বেজায় চিন্তিত হয়ে নাওয়া-খাওয়া ভুলতেন। সেই বাবা- মা যখন বৃদ্ধ হন তিনি আমাদের কাছে অতিরিক্ত বোঝা হয়ে দাঁড়ান। তাঁরা খেলেন কিনা দেখা তো দূর তাদের বৃদ্ধাশ্রমে রেখে এসে নিজেদের দায়িত্ব মেটাতে পারলে বাঁচি। কিন্তু সন্তানের এই কর্মে শেষ বয়েসে সামান্য দেখা-শোনার আশা করা বাবা-মায়ের মনে কি দাগ ফেলে তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ বয়স আশি ছুঁই ছুঁই নাথু সিং। তিন মেয়ে আর এক ছেলে থাকা সত্ত্বেও বৃদ্ধাশ্রমের চার দেওয়ালেই বন্দি হয়ে দিন কাটে বৃদ্ধর। সেই কারণে তিনি নিজের দেড় কোটির সম্পত্তি দান করলেন রাজ্য সরকারকে। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের মুজফফরনগরে।
তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন যে তাঁর সম্পত্তির উত্তরাধিকারী তাঁর চার ছেলেমেয়ের কেউই হবে না। বরং তাঁর ভরণপোষণের দায়িত্ব নিয়েছে যে রাজ্য সরকার তাকেই নিজের সব সম্পত্তির মালিকানা দিয়ে যেতে চান বৃদ্ধ। মুজফফরনগরের বিড়াল গ্রামের বাসিন্দা নাথু সিং পেশায় কৃষক। জমিজমা থেকে সারাবছরের আয় ভালই। তবু শেষ বয়সটা বাড়িতে ছেলে-মেয়ে নাতি-নাতনিদের সঙ্গে না কাটিয়ে তাকে কাটাতে হচ্ছে এক বৃদ্ধাশ্রমে।
সব মিলিয়ে বৃদ্ধের সম্পত্তির পরিমাণ কিছু কম নয়। সমস্ত জমিজমার মিলিত অর্থমূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। আর এই পুরো সম্পত্তিই লেখাপড়া করে রাজ্য সরকারের হাতে তুলে দিয়েছেন নাথু সিং।
নিজের সাধের জমিতে একটি স্কুল বা হাসপাতাল তৈরির ইচ্ছে ছিল নাথু সিং এর। জমি হস্তান্তরের কাগজে সেই কথাই উল্লেখ করেছেন বর্ষীয়ান মানুষটি। বৃদ্ধাশ্রমের প্রধান রেখা সিং সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ‘শনিবারই নাথু সিং এর সব সম্পত্তি আইনত হস্তান্তর করা হয়েছে রাজ্য সরকারের নামে।’ পাশাপাশি সহ-রেজিস্ট্রার পঙ্কজ জৈন জানান, ‘নাথু সিং এর মৃত্যুর পরেই তার সব সম্পত্তি রাজ্য সরকার হস্তগত করবে।’