ইম্ফল, ১ সেপ্টেম্বর – কুকি-মেইতেই সংঘর্ষে ফের নতুন করে অশান্ত মণিপুর। মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত, গত ৭২ ঘন্টায় মৃত্যু হয়েছে আট জনের। গুরুতর আহত ১৮ জন। চূড়াচাঁদপুর এবং বিষ্ণুপুরের মতো অশান্ত জেলাগুলিতে নতুন করে নিরাপত্তা নজরদারি বাড়ানো হলেও হিংসা অব্যাহত। সশস্ত্র মেইতেই এবং কুকিদের মধ্যে গুলির লড়াই চলেছে শুক্রবারও, এমনটাই খবর মিলেছে ।
বুধবার ভোরে দুই জেলার সীমানাবর্তী খৈরেনতাক এলাকায় মেইতেই এবং কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে গুলির লড়াইয়ে ২ জনের মৃত্যু হয়। অভিযোগ, মায়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে জঙ্গিরাও হামলায় যোগ দিয়েছিল। এর পর থেকেই বিষ্ণুপুর এবং চূড়াচাঁদপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে হিংসার খবর আসতে শুরু করে। চূড়াচাঁদপুর এবং বিষ্ণুপুর সীমানায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারি চালিয়েও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। তবে বেশ কিছু আগ্নেয়ান্ত্র এবং বিস্ফোরক উদ্ধার হয়। নিরাপত্তা বাহিনী সূত্রে খবর, বুধবার সন্ধ্যের পর গুলি যুদ্ধে সাময়িক বিরতির পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ফের তা শুরু হয়। আহত হন দুই জন আইআরবি অধিকারিক-সহ ৬ জন। বৃহস্পতিবার সকালে কুকি সম্প্রদায়ের দু’জন গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান , তাঁদের মধ্যে একজন গীতিকার এল এস মাঙবোই। তিনি লোকগানের জন্য জনপ্রিয় ছিলেন। সম্প্রতি কুকিদের দাবি তুলে ধরতে তিনি গান বেঁধেছিলেন।
বৃহস্পতিবার চূড়াচাঁদপুর জেলার চিংফেই এবং খৌসাবুং থেকে গুলির লড়াইয়ের খবর আসে। ওই দুই এলাকা থেকে গ্রামবাসীরা পালিয়ে যান বলেও অভিযোগ মেলে। এই পরিস্থিতিতে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ বলেন, ‘‘পরিস্থিতি সঙ্কটজনক। আমরা সব সম্প্রদায়ের কাছে শান্তির আবেদন জানাচ্ছি।’’ হিংসা নিয়ন্ত্রণে রাজ্য পুলিশের তরফে বিশেষ ‘কন্ট্রোল রুম’ খোলা হয়েছে বলে জানান তিনি।
মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা মণিপুরে , যার জেরে ঘরছাড়া হাজার হাজার মানুষ, প্রাণ গেছে প্রায় দুইশো মানুষের।