দিল্লি, ১১ নভেম্বর– তামিলনাড়ু সরকারের আবেদনে সাড়া দিয়ে রাজীব গান্ধি হত্যা মামলায় ছয় হত্যাকারীকে মুক্তি দিল সুপ্রিম কোর্ট ।৩১ বছর পর মুক্তি পেলেন নলিনী শ্রীহরণ সহ ৫ জন। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট রাজীব গান্ধি হত্যা সংক্রান্ত এক মামলার শুনানিতে এদের মুক্তির নির্দেশ দে শীর্ষ কোর্ট। এর আগে চলতি বছরের মে মাসে আরও এক যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পেরারিভালনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, কংগ্রেসের আপত্তি উপেক্ষা করে ২০১৮ সালে তামিলনাড়ুর তৎকালীন এডিএমকে মন্ত্রিসভা যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কয়েদিদের সময়ের আগে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। রাজীব-ঘাতকদের মুক্তি দেওয়ার লক্ষ্যে বিধানসভায় পাশ করানো হয় বিল।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের ফলে ৩১ বছর পর জেল থেকে মুক্তি পাচ্ছে রবিচন্দ্রন, নলিনী শ্রীহরণ, শান্থন, মুরুগান, রবার্ট পায়াস এবং জয়কুমার। ১৯৯১ সালের ২১ মে তামিলনাড়ুর এক জনসভায় আত্মঘাতী হামলায় খুন হন রাজীব গান্ধী। সেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সাতজনকে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।
তারপরই রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা জানিয়ে দিয়েছিল সাজাপ্রাপ্তরা। ২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট মৃত্যুদণ্ডের রায় স্থগিত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়। তামিলনাড়ু সরকার আবেদন জানায়, হত্যাকারীরা ৩০ বছরের ওপর সাজা পেয়েছে। এবার তাদের মুক্তি দেওয়া হোক। সেই আবেদনের ভিত্তিতে দফায় দফায় সাত খুনিকে মুক্তি দিল সুপ্রিম কোর্ট।
শুক্রবার দেশের শীর্ষ আদালতে নির্দেশে মুক্তি পেল প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধীর হত্যায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ছ’জন অপরাধী। আর এরপরই সুপ্রিম কোর্টের রায় প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘রাজীব গান্ধির খুনিদের ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত পুরোপুরি ভুল। কোনও ভাবেই এটা মেনে নেওয়া যায় না।’’
শুক্রবারই দেশের শীর্ষ আদালত রাজীব হত্যায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ছ’জনকে শুক্রবার মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে। এই তালিকায় রয়েছেন, নলিনী শ্রীহরণ, রবিচন্দ্রন, শান্থন, মুরুগান, রবার্ট পায়াস এবং জয়কুমার। এর পরেই কংগ্রেস নেতা জয়ারাম বলেন, ‘‘কংগ্রেস স্পষ্ট ভাবে এর (মুক্তির রায়ের) সমালোচনা করে এবং এটি সম্পূর্ণ ভুল বলেন বলে মনে করে।’’ সেই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘সব চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক হল যে, সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে ভারতের ভাবাবেগের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়নি।’’
তামিলনাড়ুর তৎকালীন রাজ্যপাল বানওয়ারিলাল পুরোহিতের কাছে গেলে তা তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে বিবেচনার জন্য পাঠান। রাজ্যপাল এ বিষয়ে সিলমোহর না দেওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন পেরারিভালন। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে তাঁর মুক্তির পর নলিনী এবং রবিচন্দ্রন মুক্তি চেয়ে মাদ্রাজ হাই কোর্টে আবেদন জানিয়েছিল। গত জুন মাসে মাদ্রাজ হাই কোর্ট এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানাতে ‘পরামর্শ’ দেয় নলিনীদের। সেই আবেদনের শুক্রবার সাড়া দিয়েছে শীর্ষ আদালত।