মোদি হটাও, দেশ বাঁচাও’ পোস্টারে ছয়লাপ দিল্লি, গ্রেফতার ছাপাখানার মালিক সহ ৬

 দিল্লি, ২২ মার্চ — ‘মোদি হটাও, দেশ বাঁচাও’, এমন পোস্টারে ভরে গেছে রাজধানী। খবর পেয়েই তড়িঘড়ি পরিস্থিতি সামাল দিতে নেমেছে পুলিশ। শুরু হয়েছে ধরপাকড়। শহরের নানা প্রান্ত থেকে অন্তত ২০০০ পোস্টার সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ১০০ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। দিল্লি পুলিশ অভিযানে নেমে প্রায় ২ হাজারের বেশি পোস্টার সরিয়ে দিয়েছে। দিল্লি পুলিশের বিশেষ কমিশনার (আইন ও শৃঙ্খলা উত্তর) দীপেন্দ্র পাঠক বলেছেন, পুলিশ পোস্টার ভর্তি একটি ভ্যানকে আটক করেছে। তদন্তে দেখা গেছে যে এই পোস্টারগুলি আম আদমি পার্টির অফিস থেকে আনা হয়েছে। গাড়ির চালককে আটক করা হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া ওই ব্যক্তি স্বীকার করেছেন গাড়ির মালিক তাঁকে আম আদমি পার্টি অফিসে পোস্টারগুলি পৌঁছে দিতে বলেছিলেন।

যদিও আম আদমি পার্টির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনও কোন প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, রাজধানী জুড়ে প্রায় ৫০ হাজার এই ধরনের পোস্টার সাঁটানোর কথা ছিল। দুটি ছাপাখানাকে পোস্টারগুলি ছাপানোর অর্ডার দেওয়া হয়। একই সঙ্গে রবিবার রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত শহরে পোস্টার সাঁটাতে বিপুল সংখ্যক লোক নিয়োগ করা হয়। দু’বছর আগেও এমন একটি ঘটনা সামনে এসেছিল।  ওই সময় পুলিশ ৩০ জনকে গ্রেফতার করেছিল। ২৫টি মামলা দায়ের হয়েছিল।


পুলিশের বক্তব্য, আইন অনুযায়ী পোস্টারের নিচে প্রকাশক এবং ছাপাখানার নাম-ঠিকানা লেখা থাকতে হয়। রাজধানীর দেওয়ার জুড়ে সাঁটা হাজার হাজার পোস্টারে সেই সব তথ্যের উল্লেখ নেই। পোস্টার সাঁটার সময় পুলিশ হাতেনাতে কয়েকজনকে ধরেছে।

দিল্লি পুলিশের সন্দেহ আম আদমি পার্টির দিকে। আপের একটি অফিস থেকে পুলিশ একটি ভ্যান গাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে। সেটির মধ্যে ‘মোদী হটাও-দেশ বাঁচাও’ লেখা হাজার দশের পোস্টার ছিল বলে পুলিশের দাবি।

বুধবার সকালে আম আদমি পার্টি তাদের সোশ্যাল মিডিয়ায় এই বিষয়ে দলের বক্তব্য জানিয়েছে। তারা সরাসরি পোস্টারের দায় নেয়নি। তবে দলের রাজ্যসভার সদস্য সঞ্জয় সিং বলেছেন, এই পোস্টারের মধ্যে এমন কী আছে যে ছয়জনকে গ্রেফতার, একশো জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ঠুকতে হবে। তাঁর বক্তব্য, মোদী সরকার স্বৈরতন্ত্রের চরমে পৌঁছে গিয়েছে।

রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, পোস্টার নিয়ে পুলিশের বাড়তি তৎপরতার কারণ ভিন্ন। জি-২০ সম্মেলন উপলক্ষে রাজধানীতে বিদেশিদের আনাগোনা বেড়ে গিয়েছে। প্রতিদিনই কোনও না কোনও দেশের রাষ্ট্রীয় পদাধিকারী দিল্লিতে থাকছেন। শহরকে নতুন করে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। এই সময় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে অস্বস্তিকর পোস্টার সরকারের বিরক্তির কারণ হয়েছে। প্রচারক ও ছাপাখানার পরিচয় গোপন রেখে পোস্টার শহরের দেওয়ালে কম নেই। প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে পোস্টার বলেই অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র দফতরের অধীনে থাকা দিল্লি পুলিশ বাড়তি তৎপর।