২০২৩-‘২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে ৪ বছরের স্নাতক স্তরের পাঠক্রম রাজ্যে 

কলকাতা , ৩১ মে –  ২০২৩-‘২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে স্নাতক স্তরের পাঠক্রম ৪ বছরে পড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার।  এতদিন  রাজ্যের কলেজগুলিতে ডিগ্রি কোর্স ছিল তিন বছরের।  চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে এই রাজ্যেও নতুন পাঠক্রম চালু হয়ে যাবে। নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে চার বছরের অনার্স ডিগ্রি কোর্স চালু করার কথা আগেই বলা হয়েছিল। সেই মতো ইউজিসি নির্দেশিকা জারি করে। দেশের বিভিন্ন রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এই নির্দেশিকা কার্যকরী করা হয়। যদিও পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা দফতর এ ব্যাপারে এতদিন কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছিলেন, রাজ্যের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে  চার বছরের ডিগ্রি কোর্স চালু করা হবে কিনা সে ব্যাপারে চিন্তাভাবনা চলছে। এ ব্যাপারে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন, সেই কমিটির মতামতের পরেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সূত্রের খবর, কমিটি ৪ বছরের ডিগ্রি কোর্স চালু করার পক্ষেই সম্মতি দেয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনার পরে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই এই নতুন নীতি চালু করা হবে বলে শিক্ষা দফতর জানায়।

শিক্ষা দফতরের তরফে বলা হয়েছে, পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সব সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কলেজগুলিতে এই নীতি কার্যকর করা হবে। তিন বছরের পরিবর্তে স্নাতকের পথ চলবে চার বছর ধরে। তারপরই সরাসরি পড়ুয়ারা গবেষণায় অংশ নিতে পারবে। বুধবার শিক্ষা দফতরের তরফে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানানো হয়, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকেই রাজ্যের সরকারি, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে চার বছরের স্নাতক পাঠক্রম চালু হবে। ব্রাত্য বলেন , “রাজ্যের প্রায় ৭ লক্ষ ছাত্রছাত্রী, যাঁরা এই বছর স্নাতক স্তরে ভর্তি হতে চলেছে, তাদের সুবিধের কথা ভেবে আমরা ৪ বছরের পঠনপাঠন চালু করতে চলেছি। এতে তাদের সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে সুবিধা হবে এবং একইসঙ্গে রাজ্যের বাইরে পড়তে চলে যাওয়ার প্রবণতা কমবে।”

অন্যদিকে, এই বছরই কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইনে ভর্তির প্রক্রিয়া চালু হচ্ছে না। অনলাইনে একই পোর্টালের মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “এই মুহূর্তে আমরা কেন্দ্রীয় ভাবে অনলাইনে ভর্তি না করে কলেজগুলিকে আলাদা আলাদা ভর্তির কথা বলেছি, যাতে বিভ্রান্তি না ছড়ায়। কিন্তু একই সঙ্গে আমাদের যে কেন্দ্রীয় অনলাইন ভর্তি ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে, সেখানে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করা হবে যাতে এই ব্যবস্থাও এই বছরই চালু করা যায় ।”


প্রসঙ্গত উল্লেখ্য , ২০২০ সালে সংসদে নতুন শিক্ষানীতি পাশ হয়। বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, কোনও আলোচনা ছাড়াই কেন্দ্র সরকার এই নীতি পাশ করেছে। এই শিক্ষানীতির অন্যতম বিষয় ছিল ৪ বছরের স্নাতক পাঠক্রম চালু করা। গত বছর ডিসেম্বর মাসে ৪ বছরের পাঠক্রম চূড়ান্ত করে ইউজিসি। তারপরই সব রাজ্যকে সেই পাঠক্রম বলবৎ করার জন্য অনুরোধ করা হয়। জাতীয় শিক্ষানীতি মেনে দেশের বেশ কিছু রাজ্যে ইতিমধ্যেই  চার বছরের স্নাতক পাঠক্রম চালু হয়েছে। রাজ্যের সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয় এবং সিস্টার নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয়  চার বছরের স্নাতক পাঠক্রম চালু করেছে। বাকি রাজ্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতেও চার বছরের স্নাতক পাঠক্রম চালু করার বিষয়ে সবুজ সংকেত দিল শিক্ষা দফতর।