ভারত-পাকিস্তানে সহ ২২০ কোটি মানুষ পড়তে পারেন খরার কবলে
Sunita Das
দিল্লি, ১০ অক্টোবর– বর্তমানে মশুমের যা অবস্থা তাতে শুধু ভারত নয় প্রায় গোটা বিশ্বেই এখন গ্রীষ্মকালই প্রধান ঋতু৷ চরমে উঠেছে তাপপ্রবাহ৷ এই তাপপ্রবাহের কারণে বিগত কয়েক দশকে কয়েক হাজার মানুষের মৃতু্য হয়েছে৷
এই মৃতু্যর হিসেব দিয়ে সদ্য প্রকাশিত রিপোর্টে জানিয়েছে, আগামী কয়েক দশকে ভারতের একাধিক জায়গায় তাপপ্রবাহ এত তীব্র হয়ে উঠবে যে কার্যত ধ্বংসের সম্মুখীন হবে নাগরিক জীবন৷ তাপমাত্রা সহনশীলতার সীমা ছাডি়য়ে যাবে৷ যা মারাত্মক আকার ধারণ করবে ভারত-পাকিস্তানের ক্ষেত্রে৷ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন প্রায় ২২০ কোটি মানুষ৷
ভারতের কিছু এলাকায় তাপমাত্রা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছতে পারে যেখানে কোনও ভাবেই আর মানিয়ে নিতে পারবে না মানুষ৷ পাশাপাশি, তীব্র খরা পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কাও রয়েছে পুরো মাত্রায়৷
আবহাওয়াবিজ্ঞানীরা বলছেন, বিশ্ব উষ্ণায়ণের জেরে জলবায়ু বদলই এর কারণ৷ এমন দাবদাহের জন্য দায়ী যথেচ্ছ দূষণ, গাছ কেটে নগরোন্নায়ন ও অত্যধিক তেজস্ক্রিয় বিকিরণ৷ ছ’টা ঋতুই যেন উধাও হয়ে গেছে ঋতুচক্র থেকে৷ ২০২৪ সালে আবার এল নিনোর ফিরে আসার সম্ভাবনা প্রবল৷ এর জেরেই নাকি পৃথিবীর তাপমাত্রা চড়চড় করে বাড়বে৷ তীব্র তাপপ্রবাহ ছারখার করে দেবে সব, ফুটিফাটা হবে মাটি, শুকোবে জল, খরার হাহাকার দেখবে বিশ্ববাসী৷
মাস দুয়েক আগে রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং আন্তর্জাতিক রেড ক্রস সোসাইটির যৌথ রিপোর্টেও উষ্ণায়নের কারণে দক্ষিণ এশিয়া-সহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে তাপপ্রবাহের আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছিল৷ তাতে বলা হয়েছিল, হর্ন অব আফ্রিকা তথা আফ্রিকার মূল মহাদেশীয় ভূখণ্ডের পূর্বতম অঞ্চল, সাহিল অঞ্চল (উত্তর আফ্রিকা এবং পশ্চিম এশিয়াকে নিয়ে গঠিত অঞ্চল) এবং দক্ষিণ ও পশ্চিম এশিয়ায় তাপপ্রবাহের প্রভাব পড়বে সবচেয়ে বেশি৷ এ বার দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম দেশ ভারতকে নিয়ে একই আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে৷ তাপপ্রবাহের রেশ পড়বে পাকিস্তানেও৷
প্রশান্ত মহাসাগরের চিলি ও পেরু উপকূল এবং মহাসাগরের মধ্যাঞ্চলে তৈরি হওয়া সেই ‘এল নিনো’র জেরে এ বার ওলটপালট হয়ে যেতে পারে ভারতের বর্ষার মরসুম৷ উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে যেতে পারে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ৷ এমন সবই সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে৷
২০১৫ পূর্ব ও মধ্য প্রশান্ত মহাসাগরে জন্মানো ‘এল নিনো’ বড়সড় প্রভাব ফেলেছিল ভারতের বর্ষার মরশুমে৷ প্রচণ্ড খরায় শুকিয়ে গিয়েছিল দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বহু এলাকা৷ সে বছর সারা দেশে বৃষ্টিপাতের পরিমাণও কমে গিয়েছিল উল্লেখযোগ্য ভাবে৷ ২০০৯ সালেও এল নিনোর প্রভাবে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কষ্ট পেতে হয়েছিল দেশের মানুষজনকে৷ ২০০২ ও ২০০৪ সালের এল নিনো-র ততটা প্রভাব পডে়নি এ দেশে৷ তবে ২০২৪ সালে ফের এল নিনোর সতর্কতা জারি হয়েছে৷
খরা, বৃষ্টিপাতের পরিমাণ হ্রাসের জন্য এল নিনো ছাড়াও অন্য অনেক কারণ রয়েছে৷ গাছ কেটে নগরোন্নয়নই কলকাতা সহ বাংলার খামখেয়ালি আবহাওয়ার কারণ৷ এই কারণেই কলকাতা এখন হিট-আইল্যান্ড হয়ে গেছে৷