দিল্লি ,২২ মে — ভারতীয় মুদ্রায় সবচেয়ে বড় নোট ২০০০ টাকা বাতিলের ঘোষণা করেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। গত শুক্রবার এ ঘোষণা পর থেকেই শুরু হয়েছে নানা বিতর্ক। এর মাঝে সোমবার আরবিআই-এর গভর্নর শশীকান্ত দাস সমস্ত জল্পনার অবসান করে জানিয়েছে নোট বদলি করতে হলে জরুরি পরিচয়পত্র। একসঙ্গে কটি নোট বদলানো যাবে তা আগেই জানিয়েছিল আরবিআই। কিন্তু মজার বিষয় হল এই নোটবন্দির ঘোষণা হতেই মানুষ ব্যাংকে ২০০০ এর নোট না পাল্টিয়ে আরেক পথ বেছে নিয়েছেন। এই টাকা ব্যাংকে যাবে না আবার ঘরেও থাকবে না। গোলাপি নোট দিয়ে ঘরে আসবে সোনালী লক্ষি।
সাধে কি বলে, মানুষের বুদ্ধি খালি হবে না থেকে দেশটিতে অনেকেই গোলাপি রঙের এই নোট দিয়ে সোনা ক্রয় শুরু করেছে। এতে সোনার দামও গেছে বেড়ে। বিশ্লেষকরা জানান, অনেকের কাছে বিপুল অঙ্কের দুই হাজার নোট থাকায়, বিশেষ করে মজুদদাররা সোনা ক্রয় করে সেগুলো থেকে মুক্ত হতে চাইছে।
যদিও এখনই নোটগুলো অবৈধ হয়ে যাবে না। সাধারণ মানুষকে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে যেন তারা নোটগুলো ব্যাংকে জমা দেয় এবং এর পরিবর্তে অন্য নোট নেয়।
ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, নোট বদলের বিপরীতে ভারতের এই মানুষগুলো সোনা কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। তবে সে জন্য তাদের প্রিমিয়াম বা অতিরিক্ত দাম দিতে হচ্ছে।
গত শনিবার বিকেলে মুম্বাইয়ে সোনার অনানুষ্ঠানিক বাজারে দুই হাজার টাকার নোট ব্যবহার করে ১০ গ্রাম সোনা কিনতে ব্যয় হচ্ছে ৬৭ হাজার রুপি, যদিও জিএসটিসহ সোনার আনুষ্ঠানিক দর ৬৩ হাজার ৮০০ রুপি। বাড়তি অর্থ ক্রেতাদের কাছ থেকে প্রিমিয়াম হিসেবে নেওয়া হচ্ছে। বাজারের বিভিন্ন সূত্র ইকোনমিক টাইমসকে বলেছে, কিছু মানুষ যেন নোট বদলের ঘোষণার পর আপনা-আপনি সোনার দোকানে ভিড় করতে শুরু করেছে। ঘোষণা আসার পরই সোনার প্রিমিয়াম বেড়ে গেছে।
তবে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তা কমে যাবে বলে সূত্রগুলোর ধারণা। নোট বদলের সময় আছে চার মাস, ফলে মানুষ নানা কিছু চেষ্টা করবে। তবে ২০১৬ সালের নোট বাতিলের পর নিয়ম-কানুন আরো কঠোর হয়েছে। সে সঙ্গে নোট বাতিলের পদক্ষেপে আবাসন খাতেও প্রভাব পড়বে, এই সম্ভাবনায় যে নোট মজুদকারীদের হাতে তেমন কোনো বিকল্প থাকবে না।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দুই হাজার টাকার এসব নোট ব্যাংকে জমা দিয়ে করের আওতায় আসাকে মানুষ সমাধান হিসেবে দেখছে না।
২০১৬ সালেও এমনটা হয়েছিল, যারা নোট জমা দিয়েছিল, তারা ২০২১ সালেও রাজস্ব কার্যালয়ের নোটিশ পেয়েছে।
ভারতের বিষয়ে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের রিপোর্টে বলা হয়েছে, দেশের ৬১ শতাংশ কোম্পানি ইএসজি (পরিবেশ, সামাজিক, প্রশাসন) মানদণ্ডে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির কথা ভাবছে। নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ ও ডিজিটালাইজেশনের পথে হাঁটছে সিংহভাগ ভারতীয় সংস্থা। তা যেমন কিছু নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করবে। তেমনই কাজ কাড়বে অনেকের। এই যে রূপান্তর ঘটতে চলেছে সেখানে আর্টিফিসিয়াল ইন্টালিজেন্স ও ডেটা অ্যানালিসিসই মুখ্য ভূমিকা নিতে চলেছে। কোভিডের সময়ে বহু মানুষ তাঁদের পেশা বদল করেছেন। সামগ্রিকভাবে বিশ্ব অর্থনীতিই একটা অস্থিরিতার মধ্যে রয়েছে সেই থেকে। আগামী পাঁচ বছর তা বাড়বে ছাড়া কমবে না বলেই দাবি করা হয়েছে রিপোর্টে।