দিল্লি, ৯ জুলাই – অবিরাম ধারায় প্রবল বর্ষণের জেরে জলবন্দি উত্তর থেকে শুরু করে দক্ষিণ ভারত। একটানা বৃষ্টিতে কোন ছন্দপতন নেই। এক দিকে যখন দিল্লি-সহ উত্তর ভারতের অধিকাংশ রাজ্যে বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত, তখন পিছিয়ে নেই দক্ষিণ ভারতও। গত এক সপ্তাহ ধরে টানা বর্ষার কারণে কেরলের অধিকাংশ জায়গা জলে ভাসছে। বৃষ্টির কারণে কেরলে এখনও পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকাগুলি জলের তলায়। ব্যাহত হয়েছে মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা।
প্রবল বর্ষণে বিপর্যস্ত গোটা উত্তর ভারতও। দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, হিমাচলপ্রদেশ বর্ষণে বিপর্যস্ত। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীতে বৃষ্টির পরিমাপ গত ৪১ বছরের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। মৌসম ভবন জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দিল্লিতে বৃষ্টি হয়েছে ১৫৩ মিলিমিটার। প্রবল বর্ষণের জেরে একাধিক বাড়িঘর ভেঙে যায়। দিল্লির কারোল বাগ এলাকার একটি বাড়ি ধসে পড়ে মৃত্যু হয়েছে এক প্রৌঢ়ের।
জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্চ জেলায় হড়পা বান নেমে আসায় স্রোতে ভেসে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে সেনাবাহিনীর দুই জওয়ানের । মৃত দুই জওয়ান নায়েব সুবেদার কুলদীপ সিং এবং সেপাই তেলু রাম। সূত্রের খবর, ওই দুই সেনা জওয়ান শনিবার সুরানকোট এলাকার দগরা নালা পেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সেই সময় আচমকাই নালায় হড়পা বান এসে যায়। প্রবল স্রোতে তলিয়ে যান দুজনেই। কুলদীপ সিংয়ের দেহ শনিবার রাতেই উদ্ধার করা হয়। তেলু রামের দেহ মেলে রবিবার সকালে। এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করে টুইট করেছে ভারতীয় সেনার হোয়াইট নাইট কর্পস। কর্মরত অবস্থায় দুই জওয়ানের এই দুর্ঘটনায় মৃত্যুকে সেনার পক্ষ থেকে ‘আত্মত্যাগ’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। জানানো হয়েছে স্যালুট। সেনার পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, ভারতীয় সেনা সব সময় শোকাহত দুই পরিবারের পাশে রয়েছে।
দিল্লির পাশাপাশি হিমাচলপ্রদেশ প্রবল বর্ষণে বিধ্বস্ত। হিমাচলের বিভিন্ন রাস্তাঘাট জলের তলায়। সেই সঙ্গে হড়পা বান আর ধসে জনজীবন স্তব্ধ। ডোডা জেলায় থাথরি-গুন্ডো সড়কে যাত্রিবাহী বাসের উপর ধস নেমে আসে। এই ঘটনায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত বেশ কয়েক জন।আটকে রয়েছেন পর্যটকরা। উপচে পড়ছে হিমাচলের বিপাশা নদী। যার জেরে অটল টানেলে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।জম্মু ও কাশ্মীরের বেশ কয়েকটি জেলায় গত ২-৩ ধরেই ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।কাঠুয়া এবং সাম্বা জেলায় লাল সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অফিস। জম্মুর নীচু এলাকাগুলো প্রবল বৃষ্টিতে প্লাবিত হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় হিমাচলে পাঁচ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তাঁদের মধ্যে তিনজন সিমলার বাসিন্দা। চাম্বায় ১ জন ও কুলুতে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার সকাল থেকেও অঝোরে বৃষ্টি চলছে।
রাজ্যের সাতটি জেলায় জারি করা হয়েছে হলুদ সতর্কতা।