• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

অবৈধভাবে বসবাসকারী ১৭ লক্ষ আফগান শরণার্থীকে পাকিস্তান ছাড়ার নির্দেশ 

ইসলামাবাদ, ৫ অক্টোবর –  প্রকাশ্যে এল ইসলামাবাদ-কাবুল সংঘাত।  ১৭ লক্ষেরও বেশি আফগান শরণার্থীকে আগামী নভেম্বরের মধ্যে দেশ ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিল পাকিস্তান সরকার। এই ঘটনার জেরে আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের সঙ্গে পাকিস্তানের সংঘাত নতুন দিকে মোড় নিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। পাক সরকারের তরফে বুধবার এক নির্দেশিকা জারি করা হয়।  নির্দেশিকায় বলা হয়েছে , আগামী

ইসলামাবাদ, ৫ অক্টোবর –  প্রকাশ্যে এল ইসলামাবাদ-কাবুল সংঘাত।  ১৭ লক্ষেরও বেশি আফগান শরণার্থীকে আগামী নভেম্বরের মধ্যে দেশ ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিল পাকিস্তান সরকার। এই ঘটনার জেরে আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের সঙ্গে পাকিস্তানের সংঘাত নতুন দিকে মোড় নিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। পাক সরকারের তরফে বুধবার এক নির্দেশিকা জারি করা হয়।  নির্দেশিকায় বলা হয়েছে , আগামী নভেম্বরের মধ্যে যদি অবৈধ উপায়ে পাকিস্তানে বসবাসকারী আফগান শরণার্থীরা স্বেচ্ছায় চলে না যান, তা হলে তাদের জোর করে পাঠানো হবে ।

পাক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সরফরাজ বুগতি বুধবার বলেন, ‘‘পাকিস্তানের মাটিতে অবৈধ ভাবে বসবাসকারীদের কোনও জায়গা হবে না।’’ তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, স্বেচ্ছায় বা জোর করে , যেমনভাবে হোক অবৈধ বসবাসকারীদের পাকিস্তান ছাড়তে হবে।  যদি তারা না যেতে চায় তবে আইন প্রণয়নকারী এবং কেন্দ্রীয় সরকার সব ধরণের ব্যবস্থা নেবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বুগতি সরাসরি কোন নাম উল্লেখ না করলেও ‘অবৈধ অভিবাসী ‘ বলতে তিনি যে আফগান শরণার্থীদেরই বুঝিয়েছেন , তা বলার অপেক্ষা রাখে না।  কারণ পাকিস্তানে আফগান ছাড়া অন্য কোন দেশের শরণার্থী বাস করেন না।  

পাক সংবাদমাধ্যমের একাংশের মতে, দু’টি কারণে অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসলামাবাদ। প্রথমত, দেশের বেহাল অর্থনৈতিক পরিস্থিতি।  দ্বিতীয়ত, নিরাপত্তা সংক্রান্ত সঙ্কট। কারণ, গত কয়েক মাসে পাক-আফগান সীমান্তবর্তী প্রদেশগুলোতে জঙ্গি হামলা বেড়ে গিয়েছে।  ফলে উদ্বেগ বেড়েছে পাকিস্তানের। পাক সেনার অভিযোগ, পাশতুন বিদ্রোহী গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের সঙ্গে আফগান নাগরিকদের একাংশের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। ইসলামাবাদের সঙ্গে শান্তি আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে পাকিস্তান সরকার এবং সেনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে তারা। টিপিপিকে আফগান তালিবানদের একাংশ সরাসরি মদত দিচ্ছে বলেও অভিযোগ। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি আত্মঘাতী মানববোমা হামলায় আফগান শরণার্থীদের জড়িত থাকার প্রমাণও মিলেছে।

  আফগান শরণার্থীদের একটি অংশ পাকিস্তানে এসেছিলেন ১৯৭৯ সালে, সোভিয়েত আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর। ১৯৯৫-৯৬ সালে তালিবান সরকার ক্ষমতা দখলের পর শরণার্থী হিসেবে আসেন আরও কয়েক লক্ষ  শরণার্থী। এঁদের বসবাস পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বেলুচিস্তানে।   

 প্রসঙ্গত, পাক খাইবার-পাখতুনখোয়া এবং বালুচিস্তান প্রদেশের পাশতুন গরিষ্ঠ এলাকার একাংশকে দীর্ঘ দিন ধরেই নিজেদের বলে দাবি করে আফগানিস্তান। তালিবান জমানাতেও সেই দাবি প্রত্যাহার করা হয়নি। গত বছরের অগস্টে কাবুলে তালিবানের ক্ষমতা দখলের পরে পাকিস্তান ২,৭০০ কিলোমিটার সীমান্তে কাঁটাতার বসাতে উদ্যোগী হয়েছিল। কিন্তু তালিবান শাসকদের প্রবল বাধায় সেই কাজ শুরু করা যায়নি। পাক সেনার সাম্প্রতিক বিরোধী অভিযানের সময় সীমান্তে বেশ কয়েক বার বাধাও দিয়েছে আফগানিস্তানের তালিবান ফৌজ।

জাতিসংঘের হিসেবে অনুযায়ী, বর্তমানে পাকিস্তানের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে নথিবদ্ধ শরণার্থীর সংখ্যা ৮ লক্ষ ৮০ ৮০হাজার এবং নথিবদ্ধহীন শরণার্থী ১৭ লক্ষেরও বেশি ,যাদের কাছে কোন বৈধ কাগজপত্র নেই।  এদেরই ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে পাকিস্তান।