উত্তর দিনাজপুর, ১৫ জুন – রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়া। বৃহস্পতিবার চোপড়ায় বাম- কংগ্রেস জোটের মিছিলে হামলার অভিযোগ জেরে গুলিবিদ্ধ ৩ জন। অভিযোগ, তাঁরা মনোনয়ন পত্র জমা দিতে যাওয়ার পথে হামলা করে তৃণমূল কংগ্রেস। এই ঘটনার জেরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে চোপড়ার কাঠালগুড়িতে। গুলিবিদ্ধ ৩ জনকে ইসলামপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর একজনকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয় ।
মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে গোটা চোপড়া জুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করা হয়। ব্লক অফিসের সামনে ১৪৪ ধারা জারি । কিন্তু তা সত্ত্বেও বড় হামলা ঘটানো হয়েছে বলে অভিযোগ বামেদের। হামলা হয় ব্লক অফিস থেকে কিছু দূরের রাস্তায়। বাম ও কংগ্রেস প্রার্থীরা চোপড়ায় মিছিল করে মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার সময় আচমকাই মিছিলের উপর গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। এতে ছড়িয়ে পড়েন মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়া বিরোধী প্রার্থীরা। অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই মিছিল লক্ষ্য করে গুলি চালায়। বামেদের অভিযোগ, মনোনয়ন জমা দিতে না দেওয়ার জন্যই পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায় তৃণমূল কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। এই হামলার জেরে ৩ জন গুলিবিদ্ধ হন , আহত হন বেশ কয়েকজন। যাঁরা গুলিবিদ্ধ হন তাদের কাঁধে করে স্থানীয় চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে যাওয়ার পরে একজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। তৃণমূলের চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল রহমান দাবি করেন, বামেদের নিজেদের মধ্যে গোলমালের জেরেই গুলিচালনার ঘটনা ঘটেছে। তাঁর কথায়, ‘‘ ওরা নিজেদের মধ্যেই মারামারি করেছে। এখন তৃণমূলের নামে দোষ দিয়ে মানুষের সহানুভূতি কাড়ার চেষ্টা হচ্ছে। তৃণমূল গুলি-বোমার রাজনীতি করে না।’’
এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয় তীব্র রাজনৈতিক তরজা। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “এটাই বাংলার আসল চেহারা।” প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীও ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন। বলেন, “অশান্তির শুরু হয়েছিল আগেই। চোপড়ায় এর আগেও কংগ্রেস নেতাদের অপহরণ করা হয়। একটি স্কুলে আটকে রাখা হয়। তৃণমূলই অশান্তিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। আমি চিঠি লিখে আগেই অশান্তির আশঙ্কার কথা জানিয়েছি। পুলিশ বিড়ালকে যদি মাছ পাহারা দিতে দেয়, তাতে যা হওয়ার তাই হচ্ছে।” তৃণমূল বিধায়ক হামিদুর রহমান, বিরোধীদের অভিযোগ নস্যাৎ করেছেন।
গুলিতে মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশবাহিনী। আরও কঠোর করা হয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা।