কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বামী বিবেকানন্দের বিজ্ঞান ভাবনা ও আধ্যাত্মবাদ বিষয়ে যুব সম্মেলন

অঙ্কিতা আচার্য, নদিয়া – কল্যাণীর রামকৃষ্ণ মিশন ও কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের কালচার স্টাডিজ এবং এনএসএস-এর যৌথ উদ্যোগে মঙ্গলবার কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যাসাগর সভাগৃহে স্বামী বিবেকানন্দের বিজ্ঞান চেতনা ও আধ্যাত্মবোধ বিষয়ে যুব সম্মেলন অনুষ্ঠিত হল। উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক অমলেন্দু ভূঁইয়া। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশনের স্বামী নিত্যযোগানন্দ মহারাজ। স্বাগত ভাষণ দিয়েছেন কল্যাণীর রামকৃষ্ণ মিশনের কর্ণধার স্বামী দুর্গানাথানন্দ মহারাজ এবং ব্রহ্মচারী রাজীব মহারাজও বক্তব্য রেখেছেন। যুব সম্মেলনের মুখ্য আলোচ্য বিষয় ছিল স্বামীজীর বিজ্ঞানমনস্কতা ও প্রাচীন ভারতের গৌরব গাঁথা।

কল্যাণী রামকৃষ্ণ মিশনের কর্ণধার স্বামী দুর্গা নাথানন্দ মহারাজ বলেছেন, ‘শুধু একদিনের যুব সম্মেলনেই আমাদের থেমে থাকলে হবে না স্বামীজীর বহুমুখী প্রতিভাকে এইরকম নানান কর্মকাণ্ডের মধ্যে দিয়ে তুলে ধরতে হবে।’ স্বামীজীর বিজ্ঞানে সচেতনতা বিষয়েও তিনি আলোকপাত করেছেন। ব্রহ্মচারী ট্রেনিং সেন্টারের আচার্য স্বামী নিত্যযোগানন্দ মহারাজের আলোচনার বিষয় ছিল বিজ্ঞানমনস্ক বিবেকানন্দ। মূলত: পদার্থবিদ্যা এবং জীববিদ্যায় স্বামীজীর বিজ্ঞানমনস্ক মনোভাবের পরিচয় তিনি তুলে ধরেছেন। অদ্বৈত বেদান্তের বাস্তব রূপায়ণ ঘটিয়ে যুক্তি এবং বিজ্ঞান নির্ভর আধ্যাত্ববাদের ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তাঁর উদ্বোধনী ভাষণে উল্লেখ করেন স্বামীজীর বহুমুখী প্রতিভার কথা। জামশেদজি টাটার সঙ্গে তার সংলাপ এবং বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে ও স্বামীজীর ব্যুৎপত্তির কথাও তিনি তুলে ধরেছেন আলোচনার মাধ্যমে। ব্রহ্মচারী রাজীব মহারাজ প্রাচীন ভারতের গৌরব গাঁথা তুলে ধরেছেন শ্রোতাদের সামনে। চিকিৎসা ব্যবস্থা, জীববিদ্যা,পদার্থবিদ্যা, গণিত সমস্ত বিষয়ে প্রাচীন ভারতবর্ষ যে ঐতিহ্য বহন করে চলেছে তা তিনি দৃষ্টান্ত সহ পর্যালোচনা করেছেন।

এছাড়া, যে ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে আমরা চলেছি আমরা বর্তমানে যে পাশ্চাত্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, আমাদেরও যে গর্ববোধ করার মত বিষয় রয়েছে সেই কথাই উঠে এসেছে তাঁর আলোচনায়। আলোচনার শেষ পর্বটি ছিল একটি তথ্যচিত্রের উপস্থাপনা নাম মরুৎসখা। বিমান তৈরির ইতিহাস, তথ্যচিত্রের মাধ্যমে প্রদর্শিত হয়েছে। দেশি-বিদেশি সমস্ত রকমের পরিকল্পনা এবং তার পেছনে যে ঘাম ঝরানোর ইতিহাস রয়েছে।, সেই চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই তথ্যচিত্রে। এই যুব সম্মেলনের উদ্যোক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেন্টার ফর কালচার স্টাডিজের যুগ্ম অধিকর্তা অধ্যাপক সুজয়কুমার মন্ডল ও এনএসএস কো-অর্ডিনেটর ড. সৈকত চট্টোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানটি সুচারুভাবে সঞ্চালনা করেছেন সেন্টার ফর কালচা স্টাডিজের জয়েন্ট ডিরেক্টর দেবলীনা দেবনাথ। ভবিষ্যতে এরকম অনুষ্ঠান আরও হলে ছাত্র-ছাত্রী ও গবেষকদের উপকার হবে বলে, তাঁদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।