বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট শিক্ষক বদলীতে রাজ্যের স্বাধীনতাকে মান্যতা দিল। মাধ্যমিক স্তরে সহ-শিক্ষকদের বদলি সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেল শিক্ষক সংগঠন সেকেন্ডারি টিচার্স অ্যান্ড এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন। এদিন খারিজ হয়ে গেল তাঁদের আবেদন। বদলির ক্ষেত্রে রাজ্যের স্কুল সার্ভিস কমিশনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত, তা জানালো সুপ্রিম কোর্ট । এর ফলে, রাজ্য সরকার চাইলে যে কোনও জেলায় শিক্ষকদের বদলি করতে পারে।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জেকে মাহেশ্বরী ও বিচারপতি সঞ্জয় কারোলের বেঞ্চ শিক্ষক সংগঠন এসটিইএ-র আবেদন খারিজ করে বৃহস্পতিবার। শিক্ষকদের অভিযোগ ছিল, ‘২০১৭-এর এক সংশোধনীর মাধ্যমে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল স্কুল সার্ভিসেস কমিশন আইন ১৯৯৭’-এর একটি ধারার ব্যবহার করে শিক্ষকদের দূরে বদলি করা হচ্ছে’। এর আগে বদলির নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।
বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ ছিল, শিক্ষার পরিবেশ ফেরাতে, মান বজায় রাখতে শিক্ষক বদলি জরুরি। মাধ্যমিক স্তরে এসএসসি আইনে সংশোধন এনে ১০ সি ধারা আনা হয়। যেখানে বলা হয় শিক্ষকদের রাজ্য সরকার চাইলে যে কোনও সময় যে কোনও জায়গায় বদলি করতে পারে। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তবে বদলি হয় এসএসসি-র মাধ্যমে।
তবে ১০সি ধারা থেকে বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে ছাড়ও মেলে। যেমন দৃষ্টিহীনতা বা অন্যান্য নির্দিষ্ট শারীরিক কিছু সমস্য়ার ক্ষেত্রে এই ধারা থেকে বাদ পড়তে পারেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এসএসসি-র এই প্রশাসনিক বদলির ধারা আইন নিয়েই দীর্ঘদিন ধরে আপত্তি ছিল শিক্ষকদের। কিন্তু এদিন সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, ‘ রাজ্যসরকার চাইলে যে কোনও জেলায় শিক্ষকদের বদলি করতে পারে। এর ফলে সরকার চাইলে যে কোনও জেলায় শিক্ষকদের বদলি করতে পারে। এবং সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে শিক্ষকদের।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জে কে মাহেশ্বরী ও বিচারপতি সঞ্জয় কারোলের বেঞ্চে বদলি নিয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিরোধিতায় মামলা করেছিল শিক্ষক সংগঠন এসটিইএ। সংগঠনের অভিযোগ ছিল, ‘ ২০১৭ সালে এক সংশোধনীর মাধ্যমে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল স্কুল সার্ভিস কমিশন আইন ১৯৯৭’-এর একটি ধারা ব্যবহার করে শিক্ষকদের দূরে বদলি করা হচ্ছে। আসলে ওই ধারাটি বদলের ফলে নতুন নিয়ম অনুযায়ী, চালু করা হয়েছিল ১০ সি ধারা। অর্থাৎ কার্যকর করা হয় প্রশাসনিক বদলির ধারা।
১০ সি ধারা অনুযায়ী, রাজ্য সরকার চাইলে যে কোনও সময়, শিক্ষকদের যে কোনও জায়গায় বদলি করতে পারে রাজ্য সরকার। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিলেও বদলি কার্যকর হবে এসএসসি-র মাধ্যমে। আর তাতেই আপত্তি ছিল শিক্ষক সংগঠন এসটিইএ-র। সংগঠনের তরফে একটি মামলা করা হয়েছিল। বছর খানেক আগে এই মামলায় দূরে বদলির ক্ষেত্রে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তবে বৃহস্পতিবার সেই আর্জি খারিজ করে বিচারপতি জে কে মাহেশ্বরী ও বিচারপতি সঞ্জয় কারোলের বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দিল, ‘এসএসসি চাইলে যে কোনও জেলার প্রয়োজনমতো শিক্ষকদের চাইলে বদলি করতে পারে’।