দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন ৫০ নয় ৩০ নম্বরেরই হবে, জানাল পর্ষদ

নিজস্ব প্রতিনিধি—--হলিস্টিক রিপোর্ট কার্ডে মূল্যায়ন নিয়ে ধন্দে পড়েছে রাজ্যের স্কুলগুলো। এই সার্বিক মূল্যায়নপত্রে দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক পরীক্ষায়, ৫০ নম্বরের কথা উল্লেখ ছিল। তাই, ইতিমধ্যেই ৫০ নম্বরের প্রশ্নপত্র তৈরি করে ফেলেছে অধিকাংশ স্কুল। অবশ্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদ জানাচ্ছে যে, দ্বিতীয় পর্যক্রমের পরীক্ষা ৩০ নম্বরেরই হবে। কারণ, সংশ্লিষ্ট ৫০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়ার বিষয় এখনও কোনও নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়নি। ফলে, দোটানায় পড়েছে স্কুলগুলো।

রাজ্যের অধিকাংশই স্কুলেই ১ আগস্ট থেকে দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। সেক্ষেত্রে তাদের প্রশ্নপত্র ছাপানো থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ সেরে ফেলেছে স্কুলগুলো। এবার এত কম সময়ের মধ্যে কী ভাবে এই প্রশ্নপত্র সংশোধন করা হবে, তা ভাবাচ্ছে স্কুলগুলোকে।

এ প্রসঙ্গে পর্ষদ সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নের নম্বরের বিভাজন হোলিস্টিক রিপোর্ট কার্ডে ৫০ নম্বর বলা হলেও এই নম্বর পরিবর্তন নিয়ে কোনও নির্দেশিকা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ জারি করেনি। যার অর্থ দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন ৩০ নম্বরেই হবে।’ অবশ্য তিনি এ-ও জানিয়েছেন যে, দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নের জন্য পাঠ্যক্রম আগে যা ছিল, তাই থাকবে।’


অন্যদিকে, প্রধান শিক্ষকদের একাংশের বক্তব্য যে, অবিলম্বে এই দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন যে ৫০ নয় ৩০ নম্বরের হবে, এই নিয়ে পর্ষদের নির্দেশিকা জারি করা প্রয়োজন। তা না-হলে, বহু স্কুল বিভ্রান্তিতে পড়েছে। তাদের আরও বক্তব্য, বেশ কিছু স্কুল ইতিমধ্যেই ৫০ নম্বরের প্রশ্ন তৈরিও করে ফেলেছে।

এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদার বলেন, ‘হলিস্টিক রিপোর্ট কার্ডে দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন ৫০ নম্বরের করতে বলেছে। অথচ পর্ষদ এখন বলছে ৩০–এ করতে হবে। কিন্তু পরে যখন রিপোর্ট কার্ডে পড়ুয়ার নম্বর লেখা হবে, তখন তো ৫০ নম্বর নয়, ৩০ নম্বরের ভিত্তিতে তার প্রাপ্ত নম্বর লেখা থাকবে। তাহলে মূল্যায়ন হবে কী ভাবে?’

ওদিকে, কলেজিয়াম অফ অ্যাসিস্ট্যান্টহেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, ‘প্রথম পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নে কিছু স্কুল পড়ুয়ারা প্রথম সার্বিক মূল্যায়নে ১৫ নম্বরের যত পেয়েছিল তার দ্বিগুণ করে হিসাব করেছিল। তাতে পূর্ণমাণ ৩০-এর মধ্যের নম্বর পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু এ ভাবে নম্বর দ্বিগুণ করলে, পড়ুয়াদের মূল্যায়ন যথাযথ হবে না-বলেই মনে করছেন অনেকে।’

প্রসঙ্গত, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত নতুন হলিস্টিক রিপোর্ট কার্ড তৈরি করেছে স্কুল শিক্ষা দফতর। তাতে পড়ুয়ার শুধু বিষয়ভিত্তিক নম্বরই নয়, তার সার্বিক উন্নয়ন কেমন হচ্ছে, তার মূল্যায়নও থাকবে। সেখানে প্রথম পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নের মোট নম্বর ৩০, দ্বিতীয় পর্য়ায়ক্রমিক মূল্যায়নে ৫০ এবং তৃতীয় বা চূড়ান্ত পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নে ৭০ নম্বর ধরা হয়েছে। এই কার্ড প্রকাশ হওয়ার আগেই প্রথম পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন হয়ে গিয়েছিল। অবশ্য তার মোট নম্বর ছিল ১৫।