২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকেই হলিস্টিক রিপোর্ট কার্ড চালুর নির্দেশ স্কুল শিক্ষা দফতরের

কৃশানু দে:  অবশেষে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষ, অর্থাৎ পরের বছর থেকেই হলিস্টিক রিপোর্ট কার্ড চালু করার নির্দেশ দিল স্কুল শিক্ষা দফতর। সেক্ষেত্রে স্বস্তির হাওয়া বয়ে গিয়েছে রাজ্যের স্কুলগুলোতে।

বুধবার বিকাশ ভবন থেকে এই সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। সেই নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকেই প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত হলিস্টিক রিপোর্ট কার্ড লাগু করা হবে। এই মর্মে সমস্ত জেলার ডিআইদের কাছে এই নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে তাদের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, ‘এই শিক্ষা বর্ষের মাঝখানে এসে হলিস্টিক রিপোর্ট কার্ড চালুর নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছিল। সেখানে পার্বিক মূল্যায়নের নম্বর বিভাজনও আলাদা।’


তিনি আরও বলেন, ‘ শিক্ষাবর্ষের মাঝে এসে এই নতুন পদ্ধতি চালু করা সম্পূর্ণ অবাস্তব। নতুন এই পদ্ধতি নয়া শিক্ষাবর্ষ থেকে চালুর দাবি জানিয়েছিলাম আমরা। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত বদল করা হল।’ পাশাপাশি তিনি এই প্রক্রিয়া চালানোর ক্ষেত্রে কিছু সমস্যার কথাও তুলে ধরেন।

কিংকরবাবু বলেন, ‘ যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দু’একজন করে শিক্ষক রয়েছেন, তাঁরা এই পদ্ধতি কী ভাবে সম্পন্ন করবেন? পঠনপাঠনের জন্য উপযুক্ত পরিমাণে শিক্ষক নেই। সার্বিক পরিকাঠামোর উন্নয়ন করলেই, এই প্রক্রিয়া সফল হবে।’

প্রসঙ্গত, চলতি বছর থেকেই প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত হলিস্টিক রিপোর্ট কার্ড জারি করে স্কুল শিক্ষা দফতর। অবশ্য যতদিনে সেটি স্কুল পর্যন্ত পৌঁছায়, ততদিনে প্রথম পর্যায়ক্রম মূল্যায়নের পরীক্ষা শেষ হয়ে গিয়েছিল। সেক্ষেত্রে এই কার্ড প্রকাশ হওয়ার আগেই মোট ১৫ নম্বরের প্রথম পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন হয়ে গিয়েছিল।

তাই হলিস্টিক রিপোর্ট কার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সমস্যা দেখা দেয়। কারণ, ওই কার্ডে উচ্চ প্রাথমিকের দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নের পূর্ণমান ৫০ নম্বরের দেওয়া রয়েছে। অথচ ইতিমধ্যেই প্রথম পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নের ১৫ নম্বরের পরীক্ষা দিয়ে ফেলেছিল পড়ুয়ারা। ফলে, কী ভাবে এই রিপোর্ট কার্ডের দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন করবেন শিক্ষকরা? তাই নিয়ে ধন্দে পড়েছিল বহু স্কুল। এই সার্বিক মূল্যায়নপত্রে দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক পরীক্ষায়, ৫০ নম্বরের কথা উল্লেখ থাকায়, ৫০ নম্বরের প্রশ্নপত্রও তৈরি করে ফেলেছিল অধিকাংশ স্কুল।

এ প্রসঙ্গে পর্ষদ সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নের নম্বরের বিভাজন হোলিস্টিক রিপোর্ট কার্ডে ৫০ নম্বর বলা হলেও এই নম্বর পরিবর্তন নিয়ে কোনও নির্দেশিকা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ জারি করেনি। যার অর্থ দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন ৩০ নম্বরেই হবে।’ অবশ্য তিনি এ-ও জানিয়েছেন যে, দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নের জন্য পাঠ্যক্রম আগে যা ছিল, তাই থাকবে।’

তবে হলিস্টিক রিপোর্ট কার্ড পড়ুয়ার শুধু বিষয়ভিত্তিক নম্বরই নয়, তার সার্বিক উন্নয়ন কেমন হচ্ছে, তার মূল্যায়নও থাকবে। সেখানে প্রথম পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নের মোট নম্বর ৩০, দ্বিতীয় পর্য়ায়ক্রমিক মূল্যায়নে ৫০ এবং তৃতীয় বা চূড়ান্ত পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নে ৭০ নম্বর ধরা হয়েছে।