অবশেষে সোমবার কালীঘাটের কাকুকে দিয়েই প্রাথমিকে নিয়োগ মামলায় চার্জ গঠন প্রক্রিয়া শুরু করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। বর্তমানে তিনি বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন। সেখান থেকে তিনি ভার্চুয়ালে আদালতে হাজিরা দেন। সোমবার আদালতে তাঁর শারীরিক অবস্থার রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত গত ২ জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার সুজয়কৃষ্ণের আদালতে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাঁকে আদালতে হাজির করানো যায়নি। এরপর ওইদিন তাঁর শারীরিক অবস্থার রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। সেই নির্দেশ মেনে সোমবার সেটা জমা দেওয়া হয়েছে। এদিন তাঁকে ভার্চুয়ালে হাজির করিয়ে শুনানির বিচার ভবনে চার্জ গঠন প্রক্রিয়া শুরু করেছে ইডি।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সুজয়কৃষ্ণের ভার্চুয়ালে শুনানির সময় বিচারক তাঁর শারীরিক অবস্থার খবর নেন। জবাবে ‘কালীঘাটের কাকু’ বলেন, ‘ভাল আছি।’ এরপরেই বিচারক জানিয়ে দেন, এই মুহূর্তে এই মামলায় প্রত্যেকের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা সম্ভব। সেই নির্দেশ মতো প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুজয়কৃষ্ণকে দিয়েই বিচার ভবনে চার্জ গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়।
এদিন বিচারপতি সুজয়কৃষ্ণকে জানিয়ে দেন, তিনি যে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টর (ইডি) তার যথার্থ প্রমাণ দিয়েছে। প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষ ও অয়ন শীলের সঙ্গে তাঁর লেনদেনের যথেষ্ট প্রমাণ মিলেছে। দুর্নীতির থেকে ‘কাকু’র যে রোজগার তার পিওসি বা প্রুফ অফ কন্ট্রিবিউশন রয়েছে। সেই তথ্য তুলে ধরেছে ইডি। এরপরেই বিচারকের প্রশ্ন, ‘আপনি কি দোষী, না নির্দোষ?’ বিচারপতির এই প্রশ্নের জবাবে ভার্চুয়ালে সুজয়কৃষ্ণ দাবি করেন, তিনি নির্দোষ। তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘আমার বিরুদ্ধে কি অভিযোগ করা হয়েছে?’ জবাবে বিচারপতি বলেন, আদালতে সেই সংক্রান্ত নথি রয়েছে।
এরপরেই সুজয়কৃষ্ণকে জানিয়ে দেওয়া হয়, তাঁর বিরুদ্ধে কোন ধারায় চার্জ গঠন করা হচ্ছে। বিচারপতি বলেন, ‘রাজ্যের বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য, প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় যেমন প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত, তেমন আপনিও অভিযুক্ত। বেআইনিভাবে চাকরি পাইয়ে দেওয়ায় আপনি কুন্তলদের সঙ্গেই জড়িত ছিলেন। আপনি লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার কর্মকর্তা ছিলেন। টাকা তছরুপ প্রতিরোধী আইন (পিএমএলএ)-এর চার নম্বর ধারায় আপনার বিরুদ্ধে চার্জগঠন করা হচ্ছে।’ এরপরেই সুজয়কৃষ্ণকে সুস্থ থাকার কামনা করেন বিচারপতি।