নিটের বেলাগাম দুর্নীতির প্রতিবাদে এবার অবস্থান বিক্ষোভ করল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মেডিকেল সেল

সুপ্রিম কোর্ট। ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিনিধি, ১১ জুন– সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকা নিট পরীক্ষায় বেলাগাম দুর্নীতি ও প্রশ্নফাঁসের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়েছে সর্বত্র। এই ঘটনার জল গড়িয়েছে সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত। নিট-এ অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে গোটা দেশজুড়ে। এবার এই বিষয়ে জাতীয় পরীক্ষা নিয়ামক সংস্থা অর্থাৎ ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি বা এনটিএ-কে নোটিশ দিয়ে জবাব তলব করল সুপ্রিম কোর্ট। ইতিমধ্যেই নিট বাতিল করতে চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে। এই আবহে তীব্র দাবদাহকে উপেক্ষা করে মঙ্গলের দুপুরে কলেজস্ট্রীটে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বসে বিক্ষোভ প্রদর্শন করল পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মেডিকেল সেল।

শুধু তাই নয়, আরজিকর মেডিকেল কলেজ থেকে শ্যামবাজার পাঁচমাথা মোড় পর্যন্ত তাঁরা করে প্রতিবাদ মিছিল। এই মিছিলে পা মেলান অগণিত ছাত্রছাত্রী। এই কড়া রোদের মধ্যেও প্রায় আধ ঘন্টা ধরে চলে এই বিক্ষোভ প্রদর্শন। ছাত্র পরিষদ দাবি তোলে,”অসঙ্গতিপূর্ণ নিট পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় নিট পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। এনটিএ চেয়ারম্যানকে পদত্যাগ করতে হবে।” জোর গলায় নিজেদের স্লোগান দিয়ে এনটিএ-এর এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলে তৃণমূলের ছাত্র পরিষদ। এদিন উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি সৌরভ প্রসাদ, কলকাতা জেলা তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্র পরিষদের সভাপতি দেবজ্যোতি দাস সহ প্রমুখ।

এনটিএ-এর দুর্নীতির জালে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছেন লক্ষাধিক ছাত্র-ছাত্রী। নিট-এ প্রশ্নফাঁস এবং ঢালাও নম্বর দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি একসঙ্গে ৬৭ জন প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। যা ওই ঢালাও নম্বর দানেরই ফল। এমতাবস্থায় গত শনিবার নিট কর্তৃপক্ষ কার্যত সব অভিযোগই অস্বীকার করেন। জোর দিয়ে জানান, পরীক্ষায় তেমন কোনও অনিয়ম হয়নি। কিন্তু এই নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন পরীক্ষার্থীদের একাংশ। সরব হয় বিরোধী দলগুলিও। ছাত্রছাত্রীদের একমাত্র ভরসা এখন সুপ্রিম কোর্ট।


প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, নিট বাতিল করতে চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে। তেমনই একটি মামলার শুনানি ছিল মঙ্গলবার। শীর্ষ আদালতের বিচারপতি বিক্রম নাথ এবং আহসানুদ্দিন আমানুল্লার অবকাশকালীন বেঞ্চে। মামলার শুনানিতে বিচারপতি আমানুল্লা এনটিএ-র আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বলেন,”পরীক্ষার পবিত্রতা নষ্ট হয়েছে। তাই আমরা উত্তর চাই।” একই সঙ্গে বিচারপতি আদালতে উপস্থিত এনটিএ-র কৌঁসুলির কাছে জানতে চান, জবাব দিতে কত দিন সময় লাগবে তাঁদের? যদিও কাউন্সেলিং প্রক্রিয়ায় কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। সহজ ভাষায়, এখনই এনটিএ-কে ছেড়ে দিচ্ছে না সুপ্রিম কোর্ট।

এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ নোটিশ দিয়ে এনটিএ-এর কাছে জবাব তলব করেছে। আগামী ৮ জুলাই মামলাটির শুনানি রয়েছে। ওই দিনই পরীক্ষা বাতিলের আর্জি জানানো সংক্রান্ত মামলাটিরও পরবর্তী শুনানি হবে। ওই সময়ের মধ্যেই নোটিশের জবাব দিতে হবে পরীক্ষা নিয়ামক সংস্থা এনটিএ-কে। সেই দিকেই তাকিয়ে রয়েছে মেডিক্যাল পড়ার স্বপ্ন দেখা ছাত্রছাত্রীগণ।