অবশেষে বিজেপির নির্বাচনী ইস্তেহার অনুযায়ী দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বড়সড় বদল আনছে কেন্দ্রীয় সরকার। এ বিষয়ে ইসরোর প্রাক্তন চেয়ারম্যান কে কস্তুরিরঙ্গনের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি গত বছর কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী রমেশ পোখরিওয়ালের কাছে প্রস্তাব জমা দিয়েছিল। আজ সেই খসড়া প্রস্তাব কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অনুমোদন করেছে বলে জানিয়েছেন পোখরিওয়াল।
বুধবার এই নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ ঘোষণা করল কেন্দ্র। নতুন শিক্ষা নীতিতে সবুজ সংকেত দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাও। পাশাপাশি, এদিন কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের নাম বদল করে শিক্ষা মন্ত্রক করা হয়। নয়া এই নীতিতে স্কুল এবং উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে বেশ কিছু নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্র। নতুন ব্যবস্থায় দশম ও দ্বাদশ শ্রণিতে আর নতুন করে বোর্ডের পরীক্ষা নেওয়া হবে না। তার পরিবর্তে আনা হচ্ছে ৫+৩+৩+৪ পদ্ধতি। প্রাথমিককেও স্কুলের আওতায় নিয়ে এসে ক্লাস ওয়ান ও টু-কে প্রি-প্রাইমারি বিভাগে নিয়ে আসা হয়েছে। একে ফাউন্ডেশন কোর্স বলা হচ্ছে।
এছাড়াও নতুন ব্যবস্থায় নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণিকে সেকেন্ডারি স্টেজ নামে একটি স্টেজের অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। তাই ওই স্টেজ চালু হলে এখনকার মতো আর দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষা হবে না। পরিবর্তে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ৪ বছরের মধ্যে ৪০টি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে। এর বোর্ড ও স্কুল মিলে এই পরীক্ষাগুলি নেবে। এই চার বছরে পড়ুয়ারা তাদের পছন্দের বিষয় বেছে নিতে পারবে।
এছাড়াও এই সংস্কারের উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ২০৩৫ সালের মধ্যে স্কুল স্তরের পড়াশোনা পাশ করার পরে অন্তত ৫০ শতাংশ পদ্মা যাতে উচ্চ শিক্ষায় ভর্তি হয় তার ব্যবস্থা করা। পাশাপাশি যে কোনও সময় কলেজে সহজেই ভর্তি হওয়া যাবে এবং বেরিয়েও যাওয়া যাবে। এরফলে কোনও বছর নষ্ট হবে না।
এদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, একবিংশ শতকের প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে নয়া শিক্ষানীতি প্রস্তুত করা হয়েছে। যা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে গৃহীত হয়েছে। ৩৪ বছরের পুরানো শিক্ষানীতিতে বদল খুবই প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছিল। আশা করি, সমাজ, দেশ তথা বিশ্ব নয়া শিক্ষানীতিকে স্বাগত জানাবে।
আজকের দিনটিকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়েছে উচ্চ শিক্ষাসচিব অমিত খারে জানিয়েছে, নয়া নীতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ক্ষেত্রে শিক্ষা, প্রশাসনিক এবং অর্থনীতিক স্বশাসন এবং সমস্ত উচ্চ শিক্ষার জন্য একটি নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান গঠন করা হবে।
এই শিক্ষানীতিতে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মাতৃভাষায় জোর দিয়ে স্কুলের পাঠ্যসূচিকে সংক্ষিপ্ত করে মূল ধারনায় সীমাবদ্ধ করার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া, ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই পাঠ্যসূচিতে বৃত্তিমূলক শিক্ষা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এবার থেকে বোর্ডের পরীক্ষা হবে পড়ুয়াদের জ্ঞানের প্রয়োগিক দিকের উপরে ভিত্তি করে। উঠে যাবে এম.ফিল কোর্স। এছাড়াও শিক্ষা ক্ষেত্রে জিডিপির শতাংশ লগ্নি করবে সরকার। খারে আরও জানান, নির্দিষ্ট সময়সীমার দেশে ১০০ শতাংশ স্বাক্ষরতার লক্ষ্য পুরণই এই শিক্ষা ব্যবস্থার লক্ষ্য।