কৃশানু দে: গরমের ছুটি প্রায় শেষের মুখে৷ ৩ জুন থেকে স্কুলে যেতে হবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের৷ ১০ জুন থেকে পড়ুয়াদের৷ স্কুল খুললেই অন্যান্য ক্লাসের সঙ্গে একাদশ শ্রেণীর ক্লাসও শুরু হবে৷
সে ক্ষেত্রে ঘাডে় নিঃশ্বাস ফেলছে সেমিস্টারের পরীক্ষা৷ কারণ, এ বছর থেকে সেমিস্টার সিস্টেমের মধ্যে পড়ছে একাদশ শ্রেণীর পড়ুয়ারা৷ সিলেবাসও পাল্টেছে৷ কিন্ত্ত নতুন বই হাতে পায়নি ছাত্র-ছাত্রীরা৷
দেখা গিয়েছে, বহু স্কুলে এখনও বাংলা, ইংরেজি-সহ প্রথম ও দ্বিতীয় ভাষার বইগুলি এসে পৌঁছয়নি৷ গোটা রাজ্যে কমবেশি সব স্কুলের একই অবস্থা৷ সাধারণত উচ্চমাধ্যমিক সংসদ এই বইগুলো বিনামূল্যে স্কুলে-স্কুলে সরবরাহ করে থাকে৷ স্বাভাবিকভাবেই এই পাঠ্যপুস্তক না-থাকায়, পড়ুয়াদের পঠন-পাঠনে ব্যাঘাত ঘটছে৷ ফলে, পড়াশোনা থমকে রয়েছে তাঁদের৷ পড়ুয়াদের এই সমস্যার কথা বিবেচনা করেই এবার বিকল্প ব্যবস্থার উদ্যোগ নিয়েছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ৷
কি সেই বিকল্প ব্যবস্থা?
সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, উচ্চমাধ্যমিকের প্রথম ও দ্বিতীয় ভাষার সমস্ত পাঠ্যপুস্তকের পিডিএফ, সংসদের ওয়েবসাইটে আপলোড করে দেওয়া হয়েছে৷ যাতে পড়ুয়ারা সেখান থেকে বইগুলো ডাউনলোড করে পড়াশোনা শুরু করতে পারে৷ পাশাপাশি যে সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা এখনও বই পাননি, তারা প্রয়োজনে এই পিডিএফ ডাউনলোড করে নিয়ে, পড়াশুনা শুরু করতে পারেন৷ সংসদ মনে করছে, পড়ুয়ারা এই পিডিএফ ডাউনলোড করে নিলে, আখেরে নিজেদের বইয়ের সমস্যা মেটাতে পারবে পড়ুয়ারা৷
এ প্রসঙ্গে সংসদ সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্যজানিয়েছেন, সংসদের ওয়েবসাইটে বাংলা, ইংরেজি-সহ প্রথম ও দ্বিতীয় ভাষার সমস্ত বই পিডিএফে পাওয়া যাবে৷ পড়ুয়া ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা সেখান থেকে ওই বইগুলো ডাউনলোড করতে পারবেন৷
অবশ্য এই নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে, পড়ুয়া-অভিভাবকদের মধ্যেই৷ তাঁদের প্রশ্ন, সাধারণত ছাত্রছাত্রীরা বইয়ের হার্ড কপি পড়তেই অভ্যস্ত৷ সেক্ষেত্রে এভাবে বইয়ের পিডিএফ ভার্সন পড়লে, আদেও কতটা পড়াশুনা আয়ত্ত করতে পারবে তাঁরা, এই নিয়ে সন্দিহান অভিভাবকেরা৷
এছাড়াও তাঁদের আরও প্রশ্ন, সমস্ত ছাত্রছাত্রীর পক্ষে কি ডাউনলোড করে বই পড়া সম্ভব? তাঁদের বক্তব্য, সকলেই যে কলকাতা শহরের বাসিন্দা এমনটা নয়৷ তাছাড়া এখনও রাজ্যে এমন প্রত্যন্ত এলাকা রয়েছে, যেখানে ইন্টারনেট পরিষেবা যথাযথভাবে পাওয়া যায় না৷ সেক্ষেত্রে সেখানকার পড়ুয়ারা কী ভাবে পড়াশোনা শুরু করবে? সেক্ষেত্রে সেই অংশের ছাত্র-ছাত্রীদের ১০ জুন পর্যন্ত স্কুল খোলার অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই৷ কিন্ত্ত তার সত্বেও অভিভাবকরা এই প্রশ্ন করেছেন যে, একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হওয়ার পর কবে থেকে বই হাতে পাওয়া যাবে?
অন্য দিকে, অভিভাবকদের আরও অভিযোগ, যে সমস্ত বই দোকান থেকে কিনতে হবে, সেই সমস্ত বইও যথাযথভাবে পাওয়া যাচ্ছে না৷ অবশ্য এবিষয় সংসদের দাবি, ৮ লক্ষেরও বেশি ছাপাতে হচ্ছে প্রথম ও দ্বিতীয় ভাষার বই৷ সেক্ষেত্রে জুন মাসের শেষ দিকে বই পাওয়া যেতে পারে৷
সামগ্রিকভাবে এই পরিস্থিতিতে শিক্ষক থেকে শুরু করে ছাত্র-ছাত্রীরা প্রত্যেকে সমস্যায় পডে়ছেন৷ সেই অংশের পড়ুয়াদের বক্তব্য, বই ডাউনলোড করার মতো পরিকাঠামো অনেকেরই নেই৷ এমনকী, প্রত্যন্ত এলাকায় যারা থাকেন, তাদের অনেকেরই প্রযুক্তিগত কিছু সমস্যা থাকতেই পারে৷ তাহলে তারা কী ভাবে পড়াশোনা শুরু করবেন?