চাকরিহারাদের বার্তা মমতার, ‘চিন্তা করবেন না, আমি পাশে আছি’

নিজস্ব প্রতিনিধি— কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি চলে যাওয়ার পর নিয়োগ মামলায় আদালতের রায়ের তীব্র সমালোচনা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ”এটা বেআইনি অর্ডার, আমরা এটা নিয়ে উচ্চ আদালতে যাচ্ছি৷” রায়গঞ্জের চাকুলিয়ার সভা থেকে চাকরিহারাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে বলেন, ”যখন আজ মিটিংয়ে আসছিলাম, তখন শুনছিলাম কলকাতা হাইকোর্ট একটা রায় দিয়েছে৷ বোমা ফাটাবে বলেছিল, ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি চলে গেল৷ আমিও বলে রাখি, আমি লডে় যাব৷ যাদের চাকরি যাওয়ার কথা বলেছে, তাদের বলছি, আমরা সবাই আপনাদের পাশি আছি৷ চিন্তা করবেন না, হতাশ হবেন না৷ কেউ জীবনের ঝুঁকি নেবেন না৷”

তবে এই মামলার রায়ের বিরোধিতা করলেও বিচারপতিদের আক্রমণ করেননি মমতা৷ বিজেপিকে তুলোধনা করে মমতা আরও বলেন, ”সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, ডিভিশন বেঞ্চ নতুন করে তৈরি করা হোক৷ আর কাকে নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চ গড়বে? একজনকে দেখলেন না বিজেপির হয়ে ভোটে দাঁডি়য়ে গেল৷ আমি বিচারককে নিয়ে বলছি না, রায় নিয়ে বলছি৷ চ্যালেঞ্জ করছি৷” কলকাতা হাইকোর্ট শুধু চাকরি বাতিল করেনি, আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে বেতন ফেরতের নির্দেশও দিয়েছে৷ সেই বিষয় নিয়েও নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ”২৬ হাজার ছেলেমেয়ে মানে প্রায় দেড় ২ লক্ষ জনের পরিবার৷ আট বছর তারা চাকরি করেছে, এখন বলছে কিনা তাদের চার সপ্তাহের মধ্যে বেতন ফেরত দিতে হবে৷” বিচারপতিদের উদ্দেশে মমতার প্রশ্ন, ”আপনারা যারা রায় দিচ্ছেন তাদের যদি বলা হয় সারাজীবনের বেতন ফেরত দিতে, পারবেন দিতে?” পাশাপাশি মমতা আবারও ১০ লক্ষ চাকরি তৈরি হয়ে থাকার বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে বলেন যখন কেউ বিপদে পড়বেন, আর কেউ না থাকলেও তিনি আছেন৷


এদিকে, হাইকোর্টের রায়ের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে রাজ্য সরকার৷ এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘সরকার বলছে এটা হতে পারে না৷ সে কারণে, সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কথা চলছে৷’

অন্যদিকে, সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে এসএসসি৷ সার্ভিস কমিশনের সাংবাদিক বৈঠকে চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, “রায়ের কপি পেলেই মুভ করব৷ কী গ্রাউন্ডে অ্যাপিল সেটা পরে জানাব৷ মূল কারণ হল, এই প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ সিবিআই তদন্ত চলেছে৷ একাংশ নিয়োগ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ সিবিআইয়ের৷ এগুলির নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ ছিল৷ বাকি নিয়োগ গুলির ব্যাপারে কী অভিযোগ? তাদের কেন চাকরি গেল? এখনও পরিষ্কার নয়৷ তাই রায়ের কপির জন্য অপেক্ষা করছি৷ স্কুলে শুন্যতা কীভাবে পূরণ হবে তা এখনই বলা সম্ভব নয়৷