হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে দীর্ঘ ৮ বছর পর বুধবার স্কুল সার্ভিস কমিশন কর্তৃক প্রকাশিত হয়েছে উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীদের মেধা তালিকা। এই আবহেই স্বস্তি-বাণী শোনা গেল রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর মুখ থেকে, ‘আমরা আশাবাদী, শিক্ষা ব্যবস্থার জট একে একে ছাড়াবো’। এভাবেই পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মজয়ন্তীতে স্বস্তির বার্তা দিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। বিদ্যাসাগরের ২০৫ তম জন্মদিবস উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার কলেজ স্কোয়ারে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে মাল্যদান করেন ব্রাত্য বসু। বিদ্যাসাগরকে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এমনই বিশেষ বার্তা দিলেন শিক্ষামন্ত্রী। এবার প্রশ্ন হলো, মেধা তালিকা প্রকাশ হলেও কবে হবে কাউন্সিলিং তথা নিয়োগ?
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী যেমন নির্দেশ দিয়েছিলেন তেমন ভাবেই আমরা তৎপর হয়েছি। ইতিমধ্যেই হাইকোর্টের নির্দেশ মতো এসএসসি তাদের নোটিফিকেশন বা নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। দ্রুত কাউন্সিলিং-এর প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে যাবে। তবে কবের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ শেষ হবে, তার বিস্তারিত বিবরণ এসএসসিই দিতে পারবে।’ এরপরই শিক্ষামন্ত্রীর সংযোজন, ‘সর্বোপরি, আমরা আশাবাদী। একে একে সকল জট আমরা ছাড়াবো। প্রাইমারিতে ইতিমধ্যেই নিয়োগ হয়েছে, আগামীদিনেও হবে। দ্রুত এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্থিতাবস্থা আনতে চান মুখ্যমন্ত্রী, আমরাও সেই লক্ষ্যেই পরিচালিত হচ্ছি। ‘
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ গত ২৮ আগস্ট স্কুল সার্ভিস কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছিল, এক মাসের মধ্যে কাউন্সেলিংয়ে উচ্চ প্রাথমিকের ১৪ হাজার ৫২ জন প্রার্থীর মেধা তালিকা প্রকাশ করতে হবে। পরবর্তী এক মাসের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আদালতের তরফে। আদালতের দেওয়া সময়সীমা বুধবার শেষ হবে।
তবে ১৪ হাজার ৫২ জনের মেধা তালিকা প্রকাশ করার কথা থাকলেও বুধের সন্ধ্যায় ১৩ হাজার ৯৫৯ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করে এসএসসি। পুজোর ছুটির আগেই কাউন্সেলিংয়ের সূচি ঘোষণা করতে পারে, এমনই জানা গিয়েছে এসএসসি সূত্র মারফত। কাউন্সেলিং প্রসঙ্গে এসএসসি-এর বার্তা এবং ব্রাত্য বসুর বক্তব্যের যে সংগতি মিলেছে, তাতেই নতুন করে আশার আলো দেখছেন চাকরিপ্রার্থীরা। পাশাপাশি এদিন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘থ্রেট-কালচার’ প্রসঙ্গেও মুখ খোলেন শিক্ষামন্ত্রী।
কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য, কলেজে-বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিয়নগুলিতে বর্তমানে রয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এবং তারাই রয়েছে এই থ্রেট-কালচারের নেপথ্যে। এ প্রসঙ্গে সুকান্তকে পাল্টা জবাব দিয়ে ব্রাত্য বলেন, ‘গত সাত বছর ধরে ইউনিয়নে নির্বাচন হয়নি। গত ২৮ অগস্ট মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে ছিলেন, পুজোর পর এই নির্বাচন প্রসঙ্গে সিদ্ধান্ত নেবেন।
সুতরাং, কলেজে-বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউনিয়ন থাকার কোনো প্রশ্নই আসে না। আর ইউনিয়ন না থাকলে থ্রেট-কালচার আসবে কিভাবে?’ এরপরই সুকান্তকে শিক্ষামন্ত্রীর কটাক্ষ, ‘সভাপতি হিসাবে তিনি (সুকান্ত) তাঁর ছাত্র সংগঠন অর্থাৎ এবিভিপি-কে মজবুত করার বিষয়ে ভাবুন। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ কী কাজ করছে বা করছে না তা নিয়ে তাঁর ব্যক্তিগত মতামত থাকতেই পারে। কিন্তু তার সত্যতা নেই।’