কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার পড়ার পাশাপাশি কাজের সুযোগ পাবেন পড়ুয়ারা। স্নাতকোত্তর স্তরে যে পড়ুয়ারা আর্থিক সহায়তা বা মেধাবৃত্তি পাচ্ছেন না, তাঁরা এই প্রকল্পে ক্যাম্পাসে কাজের সুযোগ পাবেন। ‘আর্ন হোয়াইল ইউ লার্ন’ এই প্রকল্প বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে বহুল প্রচলিত। এবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রকল্পে উপকৃত হবেন অনেক পড়ুয়ারা। এমনটাই আশা করছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অন্তর্বর্তী উপাচার্য শান্তা দত্ত দে বুধবার জানান, ইউজিসি থেকে অনুদান দেওয়া বন্ধ করে দেওয়ায় এই প্রকল্প কোভিড পর্বে বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় ফের নিজেদের তহবিল থেকেই সেই খরচ দেবে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই প্রকল্পে একজন পড়ুয়া মাসে পড়াশোনার পাশাপাশি সর্বাধিক ১৫ দিন, সপ্তাহে প্রায় ২০ ঘণ্টা কাজ করতে পারবেন। সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক দিনে ৪০০ টাকা। ইতিমধ্যেই পড়ুয়াদের থেকে আবেদন চাওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা বা প্রশাসনিক বিভাগ ও বিভিন্ন সেন্টারে পড়ুয়ারা বিভাগীয় প্রধানের তদারকিতে কাজ করতে পারবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সনাতন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আগে যখন এই প্রকল্প চালু ছিল, তখন কোন কোন পড়ুয়া উপকৃত হল, সেই তথ্যে স্বচ্ছতা ছিল না। এবার স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ হলে স্বাগত জানাব।’
যদিও ছাত্র সংগঠন ডিএসও-র কলকাতা জেলা সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, ‘এমন প্রকল্প বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পঠনপাঠনকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলেই আমরা মনে করি। শ্রম আইন অনুযায়ী, প্রাপ্য মজুরি না দেওয়া হলে প্রাত্যহিক ৪০০ টাকার অনুদান বৈষম্য সৃষ্টি করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগে যেখানে বহু শূন্য পদ পড়ে রয়েছে, সেখানে স্থায়ী কর্মচারী নিয়োগ না করে ছাত্র-ছাত্রীদের ন্যূনতম অনুদান দিয়ে কাজ করানোর এই উদ্যোগ ছাত্র-স্বার্থ তথা বেকার তরুণ-তরুণীদের স্বার্থের বিরোধী।’ এই প্রকল্পে পড়ুয়াদের সঠিক নির্ণয়ে স্বচ্ছতা থাকবে কিনা, তা নিয়েও যথেষ্ট আশঙ্কায় মিজানুর।
“আর্ন হোয়াইল ইউ লার্ন”-এর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে পড়ুয়া ও শিক্ষকদের গবেষণা, গবেষণার জন্য বিদেশ যাত্রা ও প্রশিক্ষণ-সহ বিভিন্ন বিষয়ে অনুদান পাওয়ার জন্য আবেদন করতে বলা হয়েছে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় আধিকারিকদেরও আবেদনের সুযোগ রয়েছে। অন্তর্বর্তী উপাচার্য জানিয়েছেন, এসবের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের তহবিল থেকেই ৯০ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করেছে।