আমাদের কি আদৌও কোনো নৈতিক শিক্ষা আছে?

পৃথিবীর সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দেশে বা বঙ্গেও সাক্ষরতা মাপা হয় মাতৃভাষা বা যেকোন একটি ভাষায় লিখতে ও পড়তে পাড়ার ক্ষমতাকে। যদিও ১৯৫০ সালের আগে পর্যন্ত একটি ভাষার অক্ষর জ্ঞানকেই সাক্ষর বলা হতো। আর শিক্ষিতের হার মাপা হয় পুঁথিগত বিদ্যার দ্বারা। যাঁর যত বেশি পুঁথিগত বিদ্যা তিনি তত বেশি শিক্ষিত। আমরা এখানে যে নৈতিক শিক্ষার আলোচনা করছি তা কিন্ত এই পুঁথিগত শিক্ষার অঙ্গ নয়। পুঁথিগত শিক্ষা বা বিদ্যা মানুষের জীবনের সামগ্রিক শিক্ষার একটা অঙ্গ মাত্র। হ্যাঁ, এটা সত্যি পুঁথিগত শিক্ষা হয়তো মানুষের বুদ্ধিমত্তাকে আরও ক্ষুরধার করতে পারে। কিন্ত আসল শিক্ষা বা নৈতিক শিক্ষা হচ্ছে মানুষ মানুষের সাথে কিরকম আচরণ করে তা। একজন মানুষ আর একজন মানুষকে কতটা সম্মান দেয় তা। প্রতিটি মানুষকে তাঁর যথাযথ সম্মান দেওয়াটাই হচ্ছে আসল শিক্ষা। আর এই সম্মানবোধ কিন্ত জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ বা বয়সের ওপর নির্ভর করে না। এটা নির্ভর করে যিনি সম্মান দিচ্ছেন তাঁর ওপরে। হ্যাঁ, যিনি সম্মান পাচ্ছেন তাঁর অভিব্যক্তিটাও খুব প্রয়োজন। কেন প্রয়োজন তা দুর্যোধন ও যুধিষ্ঠিরকে দেখলেই বোঝা যাবে। দুর্যোধন বারংবার অন্যায় করার পরে কৃষ্ণ তাঁকে শাস্তি দিতে বাধ্য হয়েছেন। দুর্যোধন যখন শিশু বয়স থেকে একের পর এক অন্যায় করে গেছেন তখন ধৃতরাষ্ট্র পুত্র স্নেহে অন্ধ হয়ে তাকে শাস্তি দেওয়া তো দুর অস্থ কোনোদিন বিরতও করেননি। সেকারণে তাঁর ধ্বংস হয়েছে কিন্ত যুধিষ্ঠির কোনোদিন তাঁর সততা থেকে সরেননি তাই তাঁকে সহায়তা করতে স্বয়ং ভগবানের অবতার হয়ে শ্রীকৃষ্ণকে আসতে হয়েছে ধরাধামে। আর দুর্যোধনকে তাঁর পাপস্বরূপ দন্ড দিয়েছে।

মানে আমি অপরের থেকে ঠিক যেরকম ভাল আচরণ আশা করি আমিও ঠিক সেরকম আচরণ অপরকে দিতে বাধ্য। প্রশ্ন হচ্ছে আমরা কি যে আচরণ অপরের থেকে আশা করি সেই আচরণ নিজেরা দিই না করি? উত্তর একটাই। না। তাহলে আমরা অপরের থেকে যা প্রত্যাশা করি সেটা কিন্ত নিজেরা দিই না। এটাই হচ্ছে আমাদের দোষ বা মুর্খামী। একারণেই নৈতিক শিক্ষার প্রয়োজন। নৈতিক শিক্ষা মানুষকে বিবেকবান হতে শেখায়। সৎ হতে শেখায়। সামাজিক দায়িত্বের প্রতি সজাগ হতে শেখায়। সেখানে পুঁথিগত শিক্ষার মূল লক্ষ্য থাকে জীবিকা নির্বাহ করার উপায় বা জীবিকার স্বার্থে জ্ঞানার্জন। এ শিক্ষা যে একজন মানুষকে সম্পূর্ণ ভাবে নৈতিক শিক্ষাও দেবে এটা ভাবার কোনো কারণ নেই বা তা যে সর্বদা আদর্শ মানুষ তৈরি করবে এটা ভাবারও কোনো অবকাশ নেই। আর বর্তমানে যে শিক্ষাব্যবস্থা আমাদের দেশে চালু আছে তাতে আমাদের এই দৃষ্টিভঙ্গির অদূর ভবিষ্যতে কোনো পরিবর্তন হবে বলে মনে হয় না। কারণ, সমাজ যেমন শিক্ষা দাবী করে বর্তমান শিক্ষা আমাদের তাই দেয়। আর বর্তমান সমাজ চায় ‘প্রতিষ্ঠিত’ মানুষ। তা সে যেভাবেই হোক না কেন। তাই বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থাকে বলা যায় আমাদের ভবিষ্যত কর্মজীবনের একটি রূপরেখা মাত্র। সেখানে নৈতিক শিক্ষা মানুষকে উত্তম আচরণ করতে শেখায়। যাঁর চরিত্র ভাল। যাঁর ভদ্রতাবোধ আছে। যিনি বিবেকবান। যিনি যথাযথ জায়গায় সম্মান প্রদর্শন করতে বা দিতে পারেন। এসব গুণ যেহেতু নৈতিক শিক্ষার মধ্যেই পড়ে তাই আমাদের শিক্ষা কাঠামোর মধ্যে বর্তমানে এসব থাকা উচিত ছিল। তা কিন্ত নেই। থাক বা না থাক বাঙালির যে একটা অতীত গরিমা ছিল তাও আমরা একেবারে ভুলে গেছি। এই গরীমা কিন্ত আমাদের পুঁথিগত বিদ্যা দেয়নি। পুঁথিগত বিদ্যা আমাদের অথনৈতিক উন্নতি ঘটায়। তারফলে আমাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়।

এটাই বর্তমান শিক্ষার অন্তিম অধ্যায়। তাই পুঁথিগত বিদ্যাই যে সব নয় সে কথাটা বেমালুম ভুলে আমরা সেদিকেই ছুটে যাই। ওই ‘পতঙ্গের পালক ওড়ে মরিবার তরে’ এরকম আর কি। আমরা সব জেনেও সাময়িক লোভে ভবিষ্যত প্রজন্মের ক্ষতি করে যাচ্ছি। নৈতিক শিক্ষা না থাকলে সমাজ সর্বদিক দিয়ে উন্নতি করতে পারে না। আর বাঙালির নৈতিক শিক্ষা হবে কোত্থেকে? বাঙালি নিজের অতীতের ইতিহাস জানার থেকে এখন অপরের ইতিহাস জানতে বিশেয আগ্রহী। নিজের কাজের পর্যালোচনা করার থেকে অপরের কাজের সমালোচনা করতে বেশি পছন্দ করে। বাঙালি তার অতীত দেখিয়ে বলে, ‘বাঙালির সঙ্গে অন্য রাজ্যের মানুষের তুলনা করা যায় না’। বাঙালি এখনও বলে ‘বাঙালি আজ যা ভাবে অন্যরা কাল তা ভাবে’ কিন্ত আজ যে পরিস্থিতি একেবারে পাল্টে গেছে তা বাঙালির বোধগম্য হচ্ছে না। এখন পরিস্থিতি হচ্ছে বাঙালি আজ যা ভাবে বাকি ভারত একবছর আগে তা ভেবে নিয়েছে। তাই তো আজ আই এ এস বা আই পি এস অফিসার রপ্তানি করার জায়গায় আমরা পরিযায়ী শ্রমিক রপ্তানি করছি। এটা মাপা বা দেখা (ডেটা) যায় বলে উদাহরণ দিতে পারলাম। নৈতিক শিক্ষা তো আর মাপা যায় না। তাই তার উদাহরণ দেওয়া সম্ভব নয়। তবু এখানে তার একটা আদর্শ উদাহরণ হচ্ছে টিভি শোয় আমাদের সমাজের জ্ঞানীগুণি ব্যক্তিদের বিতর্কমূলক অনুষ্ঠানের বক্তব্য। কোনো আলোচনা নয় শুধু পরস্পরের দিকে কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি। আগে বাঙালি কাজ করত বিশেষত দৈহিক ও মানসিক শক্তি বা বুদ্ধিমত্তার জন্য পরিচিত ছিল। এখন গঠনমূলক কাজ করে না। বলতে গেলে করার ক্ষমতা নেই। সব বেচে খায়। যেমন অপরের কাজে নাক গলিয়ে খায়, ধর্ম বেচে খায়, রাজনীতি বেচে খায় ইত্যাদি। সোজা কথায় এগুলি সবই দালালির পর্যায়ে পরে। বাঙালি এখন ‘লটারি মনস্ক’। আর একটা কথা বাঙালি মাত্রই এখন সবজান্তা। এখানেই গোড়ায় গলদ। মুশকিল হচ্ছে সব জানতে গিয়ে আমরা মানুষের যে ‘নৈতিক শিক্ষা’ বলে একটা শিক্ষা আছে সেটাই ভুলে মেরেছি। এখন আমরা নিজের দোষ ঢাকতে অপরের দিকে আঙুল তুলি। যেনতেন প্রকারে তাদের দোষ টেনে আনবই। বাঙালির বক্তব্য, আগে নিজেকে দেখো তারপরে আমাকে দেখো। তারা ভুলে যায় একই বক্তব্য তো সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।


আমরা ভুলে গেছি যে, ‘আগে নিজে ভাল হয়ে তবে আপরকে বলা যায়। এখন আমাদের ঠক বাছতে গাঁ উজার। মানে একই মালার ফুল সবাই। হ্যাঁ, ফুল আলাদা হলেও যখন মালা গাঁথা হয়ে যায় তখন স্বাভাবিকভাবে আমরা কেউ আলাদা করে ফুলের কথা অতটা ভাবি না। এখানেও তাই। নৈতিক শিক্ষাই যে মানুষের শিক্ষার প্রথম ধাপ সেটাই আমরা আজ জানি না। নৈতিক শিক্ষাকে ঢাকা দিয়ে দিয়েছে পেশাগত শিক্ষা। আমরা জাপান, চীনের ভিডিও দেখে বলবো, ‘দেখো, দেখো ওরা কত ভাল। ওরা পরিবার ছাড়াও সমাজ ও দেশের কথা কত ভাবে। আর আমরা সমাজ বা দেশকে ভালবাসব না কিন্ত সম্পূর্ণ বা দেশের দায়িত্ব আছে আমাকে দেখার। কি আশ্চর্য দাবী! সেই একই কথা আবার বলছি সমাজ নৈতিক শিক্ষাকে চোখধাঁধানো বিরাট সাফল্যের ‘অর্থকরী শিক্ষার’ তলায় ঢাকা দিয়ে দিয়েছে। সেকারণে নৈতিক শিক্ষার থেকে পুঁথিগত বিদ্যা বা পেশাগত বিদ্যার মূল্য আজ অনেক অনেক বেশি। নৈতিকতা বলতে বোঝায় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উচিত অনুচিত জ্ঞানের প্রয়োগ। সমাজের কোন ক্ষেত্রেই এখন এই উত্তম আচরণ যুক্ত বা বিবেকবান মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। আজকের বাস্তব পরিস্থিত আমাদের গর্বের গণতন্ত্রে, সংস্কৃতিতে এমনকি মানুষের কাজকর্মে কোথাও কোন সৎ দৃশ্য বা ঘটনা দেখতে পাচ্ছেন?

এব্যাপারে আমাদের দেশ ছেড়ে দিই আমি আলোচনায় আসছি আমাদের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গকে নিয়ে। শেষ পঞ্চাশ ষাট বছর ছেড়ে দিলে তার আগের প্রায় আড়াইশো বছর পশ্চিমবঙ্গ বা বাংলা মননে, চিন্তায়, কৃষ্টি, শিক্ষা বা সংস্কৃতিতে ভারতবর্ষের অন্য রাজ্য বা জনপদের তুলনায় অনেকটা এগিয়ে ছিল। বাংলার সেই ইতিহাসকে বলা হয় স্বর্ণ যুগের। কয়েক শতাব্দীর অচলায়তন একের পর এক সমাজ সংস্কারক বা মনিষীর দ্বারা আমূল পরিবর্তন হয়ে সমাজ এক সৎ, চিন্তাশীল, বিবেক সম্পন্ন জাতিতে পরিণত হয়েছিল। আবার এটাও ঠিক তারও আগের ইতিহাসে আমরা বাংলার তেমন গরিমা খুঁজে পাইনা, ঠিক আজকে যেমন আছে, তখনও তাই ছিল। যে গরিমার কথা বলছি সেটা কিন্ত রাজনৈতিক সিস্টেমের গরিমা নয়, এটা শিক্ষা, সংস্কৃতি, বৈপ্লবিক চেতনার গরিমা। আর আজ কোথায় সেই অতীতের সুবুদ্ধি, বিবেকবোধ সম্পন্ন বাঙালি?

প্রথমে যা দিয়ে শুরু করেছিলাম, দেখুন, আজ আমাদের অবস্থা, আর বাস্তব পরিস্থিতি কি! গণতান্ত্রিক জামানায় মানুষের বিবেচনায় কোথাও কোন সৎ দৃশ্য দেখতে পাচ্ছি কি আমরা? এই আচার, শিক্ষা দীক্ষা, সংস্কৃতির এতটা অধঃপতন কি একটা জাতিকে কোন দিশা দেখাতে পারে? এইগুলির অধঃপতন মানেই একটা জাতির পতন। সেই জাতি মেরুদণ্ড ভেঙে একেবারে শুয়ে যাবে। মেরুদণ্ড ভেঙে গেলেও মানুষ হয়ত বাঁচে কিন্তু চলৎশক্তিহীন হয়ে অর্থাৎ একেবারে শুয়ে পড়ে, তাকে কি যথার্থ বাঁচা বলে? এখানেও তাই হবে, বাঙালি জাতি হয়ত বেঁচে থাকবে কিন্তু থাকবে না তার বিবেক, বুদ্ধি, নীতি। একে কি বাঁচা বলা যায়? যেহেতু, আমরা এখন গণতন্ত্রের মধ্যে দিয়ে চলছি তাই সাধারণ ভাবে আমাদের ব্যক্তিগত এবং সামাজিক জীবন দুটিরই গতি প্রকৃতি নীতি নির্ধারিত হচ্ছে সরকার দ্বারা আরও ভালো ভাবে বললে শাসিত হচ্ছি রাজনৈতিক দলের দ্বারা। সরকার পরিচালিত হয় জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধির দ্বারা। আবার এই নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই তাঁদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ জনকে নির্বাচন করে সরকারি নীতি নির্ধারণ কমিটিতে রাখেন মানে তাঁরাই মন্ত্রী সভার সদস্য – সদস্যা হয়ে পুরো জনগণের প্রতিনিধিত্ব করেন। আর এটাই তো গণতান্ত্রের স্তম্ভ বা নিয়ম। তাহলে গণতন্ত্রের মূল কথা হচ্ছে জনগণ পরিচালিত বা শাসিত হন জনগণের দ্বারা জনগণেরই মধ্যে শ্রেষ্ঠ জনপ্রতিনিধি দ্বারা। হ্যাঁ, এটাই হওয়ার কথা ছিল।

হ্যাঁ, আপাতদৃষ্টিতে হচ্ছেও তাই কিন্তু প্রতিনিধিদের মান বা এনারাই কি শ্রেষ্ঠ। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি? নিরপেক্ষ যে কোন মানুষকে জিজ্ঞাসা করুন। উত্তর পাবেন ‘না’। তার মানে আমরা যাদের নির্বাচিত করছি তাঁরা আমাদের শ্রেষ্ঠ প্রতিনিধি নন। একেবারে গোড়ায় গলদ। এখানে দুটো কথা। আমরা যখন নির্বাচিত করছি তখন তাঁরা সৎ, বিবেচক ছিলেন কিন্তু ক্ষমতার অলিন্দে গিয়ে তাঁরা অসৎ, অবিবেচক হয়ে যাচ্ছেন। আর একটা দিক সাধারণ জনগণই বিবেকহীন, বুদ্ধিহীন তাই তাঁরা সঠিক মানুষকে নির্বাচিত করতে পারছেন না। যেদিক দিয়েই বলি, যেমন, হাঁড়ির একটা চাল সেদ্ধ হলেই আমরা ধরে নিই হাঁড়ির সব চাল সেদ্ধ (ভাত) হয়ে গেছে তেমনি এক্ষেত্রেও বলা যায় এই রোগ’টা তাঁদের বা আমাদের সবার মধ্যেই ছিল বা আছে। পুরো জনসমষ্টি বা জাতিই এখন অসৎ এবং অবিবেচক। তাই যারা যাচ্ছে তারাও আমাদেরই মতন। তাহলে বলবো অপবিত্র, মিথ্যাচারের পথে আমরা সবাই এখন।

আমরা এখন যা কিছু করছি তা একেবারে সাময়িক কিছু পাওয়ার লোভে। সত্য সাময়িকভাবে হারতে পারে আর মিথ্যা কখনও চিরস্থায়ী ভাবে জিততে পারে না। আর ভারতীয় আধ্যাত্মিক বোধের প্রথম কথাই হচ্ছে নিঃলোভ কাম বা কাজ করার কথা। তাই এরা কখনো চিরস্থায়ী ভাবে জিততে পারবে না। উন্নতির সোপানকে আমরা এখন ধ্যান জ্ঞান করে নিয়েছি। যেনতেন প্রকারেণ একটা চাকরি, বিশেষত যদি সরকারি চাকরি হয় তো কথাই নেই। আর ব্যবসা, এমন ব্যবসা করব যেটা কোন উদ্যোগপতির নয়, দালাল বা ট্রেডিং-এর। এই পদলোভী সমাজটা তৈরী হয়েছে অনেক আগেই। তা বাড়তে বাড়তে আমরা তার প্রকট নগ্ন রূপ এখন দেখছি পাচ্ছি। চরম প্রগতিশীল মানুষও মানে যাকে আমরা এতদিন প্রগতিশীল বা অন্যায়ের প্রতিবাদ স্বরূপ জানতাম তিনিই এখন দাসানুদাসে পরিণত হয়ে যাচ্ছেন সামান্য কিছু টাকা, পদ বা সম্মানের লোভে। এটাই এখন সামাজিক রীতি। বুদ্ধি হয়ত এনাদের আছে, কিন্তু বিবেক, নীতি! বিবেক না থাকলে কি তাকে সম্পূর্ণ মানুষ বলা যায়? বর্তমান বাংলার এটাই খুবই অভাব। ‘বিবেক’ সম্পূর্ণ মানুষ।

এতদিন ধরে জানতাম জাতির মেরুদণ্ড হচ্ছে শিক্ষা। সেই শিক্ষাই আনে চেতনা। আর আজ সেই শিক্ষার এ কি অবস্থা! আজকে ছাত্র ছাত্রীদের মূল্যায়নের কোন ব্যবস্থা আছে কি? এখন তো সরকারি অনুদান নেবার জন্য স্কুলে ভীড়। আমার সত্যি অত বুদ্ধি নেই কিন্তু বাস্তব দেখে এটা মনে হয়েছে বিদ্যালয় পড়াশোনার জায়গা, সেখানে ভাত, খিঁচুড়ী খাওয়ানো উচিত নয়। আরো মনে হয় বাংলাতেই সবথেকে কম দিন স্কুল, কলেজ খোলা থাকে। এমনিতে সরকারি ছুটি, স্থানীয় অনুষ্ঠান, বাস ট্রেনের ধর্মঘট তার ওপরে রাজনৈতিক কর্মসূচি। শিক্ষা জগতের ওপর শেষেরটিই এখন সবথেকে মারাত্মক প্রভাব।
ক্রমশ