দিল্লি, ২১ জুলাই: নিটে ৯৯ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েও ডাক্তারি পড়ার স্বপ্ন অধরা থেকে যেতে পারে এক গুজরাতি ছাত্রীর। কারণ দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষায় পাশ নম্বর তুলতে পারেননি ওই পড়ুয়া। ঘটনাটি নিয়ে দেশজুড়ে নতুন করে শোরগোল শুরু হয়েছে। কিভাবে সম্ভব এই অবাস্তব ফলাফল? সংশয় দেখা দিয়েছে বিভিন্ন মহলে। জানা গিয়েছে, আহমেদাবাদের ওই ছাত্রী সর্বভারতীয় ডাক্তারির স্নাতক স্তরের প্রবেশিকা পরীক্ষা (নিট-ইউজি)-তে পূর্ণমান ৭২০-এর মধ্যে ৭১৫ পেয়েছেন। যা একমাত্র একজন মেধাবী ছাত্রীর পক্ষেই পাওয়া সম্ভব। নিটের পরীক্ষার মার্কশিট অনুযায়ী তিনি পদার্থবিদ্যায় পেয়েছেন ৯৯.৮ শতাংশ, রসায়নে ৯৯.১ শতাংশ এবং জীবনবিজ্ঞানেও ৯৯.১ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন। ফলে সামগ্রিকভাবে তিনি নিটে ৯৯ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছেন।
তাহলে এহেন মেধাবী ছাত্রী উচ্চমাধ্যমিকের মতো পরীক্ষায় কীভাবে চূড়ান্তভাবে অকৃতকার্য হলেন? যা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে দেশের শিক্ষামহল থেকে রাজনৈতিক মহল। জানা গিয়েছে, ওই ছাত্রী নিটে পদার্থবিদ্যায় যেখানে ৯৯.৮ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন, তিনি উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় এই বিষয়ে মাত্র ২১ নম্বর পেয়েছেন। একইভাবে নিটে রসায়নে ৯৯.১ শতাংশ নম্বর পেলেও উচ্চমাধ্যমিকে মাত্র ৩১ নম্বর পেয়েছেন। আবার জীববিজ্ঞানে নিটে মাত্র ৩৯ নম্বর পেয়েছেন। যেখানে নিটের পরীক্ষায় পেয়েছেন ৯৯.১ শতাংশ। ফলে ওই ছাত্রীর নিট পরীক্ষা স্বচ্ছতা নিয়ে একটি বড় প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিয়েছে। নিটের পরীক্ষায় যে নম্বর তিনি মার্কশিটে পেয়েছেন, আদৌ কি তিনি এই নম্বর পাওয়ার যোগ্য?
ওই ছাত্রীর বাবা-মা দু’জনেই পেশায় চিকিৎসক। স্কুল সূত্রে খবর, সম্প্রতি মেয়ের খারাপ পড়াশোনা নিয়ে সতর্ক করার জন্য ওই চিকিৎসক দম্পতিকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তা সত্ত্বেও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় চূড়ান্ত অকৃতকার্য হয়। এমনকি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি। জানা গিয়েছে, নিট পাশ করলেও মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হতে গেলে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় কমপক্ষে ৫০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে। সেই ন্যূনতম শর্ত পূরণ করতে না পারায় তাঁর মেডিক্যালে কলেজে ভর্তি এখন প্রশ্নের মুখে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বহু ছাত্রছাত্রী দশম শ্রেণির পর থেকেই সর্বভারতীয় ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। এজন্য বহু বেসরকারি কোচিং সেন্টার রয়েছে। যেখানে সেই প্রস্তুতি নেওয়া হয়। সেই কোচিং হাব হিসাবে রাজস্থানের কোটা দেশে বিখ্যাত। তেমনই এক কোচিংয়ে পড়তেন আহমেদাবাদের ওই ছাত্রী। তিনি নিটের প্রস্তুতির পাশাপাশি স্থানীয় এক স্কুলে ‘ডামি’ ছাত্রী হিসাবে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়াশোনাও করছিলেন।