নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সর্বভারতীয় সিভিল সার্ভিস (ইউপিএসসি) পরীক্ষায় চমকপ্রদ ফল বাংলার। ২০২৩ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় সাম্প্রতিক অতীতের সেরা সাফল্য পেল পশ্চিমবঙ্গ। এ রাজ্য থেকে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেন এক নয়, দুই নয়, পনেরো জন। এঁদের মধ্যে সাতজনই রাজ্য সরকারের উদ্যোগে তৈরি সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর সিভিল সার্ভিস স্টাডি সেন্টার থেকে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত। পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলির (বিহার) তুলনায় ইউপিএসসি পরীক্ষায় বাংলার পরীক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ অনেকটাই কম। সেই আক্ষেপই ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের। তিনি বরাবরই আমলাতন্ত্রে বাংলার মেধাবীদের উৎসাহ দিয়ে থাকেন।
হাতে গোনা নয়, বাংলা থেকে তৈরি হোক বহু আইএএস, আইপিএস – এমনই স্বপ্ন এবং লক্ষ্য তাঁর। তাই নিজ আক্ষেপ মেটাতেই উদ্যোগী হয়েছিলেন মমতা। বাংলার ইউপিএসসি পরীক্ষার্থীদের সাথে তিনি নিজেও করেছিলেন কঠোর পরিশ্রম। সেই লক্ষ্যেই ২০১৪ সালে রাজ্যে একটি সিভিল সার্ভিস স্টাডি সেন্টার গড়ে তোলেন তিনি। ২০২১ সালে সেই সিভিল সার্ভিস স্টাডি সেন্টারে আরও বিনিয়োগ বাড়ায় রাজ্য সরকার। সল্টলেকে তৈরি হওয়া ওই স্টাডি সেন্টারের পুনরুজ্জীবন ঘটিয়ে সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর সিভিল সার্ভিসেস স্টাডি সেন্টার রূপে আত্মপ্রকাশ ঘটান মমতা।
মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় তৈরী সিভিল সার্ভিস স্টাডি সেন্টার আজ বাংলার নাম উজ্জ্বল করলো দেশের বুকে। ওই স্টাডি সেন্টারে সরকারি খরচে উচ্চমানের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় আমলাতন্ত্রে আগ্রহী মেধাবীদের। সেই উদ্যোগেই এবার অভাবনীয় সাফল্য পেল বাংলা। বর্তমানের সিভিল সার্ভিস স্টাডি সেন্টারগুলি সাধারণত মোটা অংকের অর্থ দাবি করে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে। যার ফলে ইউপিএসসিতে সফল হওয়ার অদম্য ইচ্ছে থাকলেও অর্থের অভাবে বহু পরীক্ষার্থীরাই পিছপা দেন।
তাছাড়া সবার পক্ষে বাংলা থেকে সুদূর দিল্লিতে গিয়ে ইউপিএসসির জন্য পড়াশোনা করা সম্ভব হয়না। এই বিষয়গুলির দিকে তাকিয়েই সরকারি খরচে উচ্চমানের প্রশিক্ষণ দেওয়ার লক্ষ্যে ব্যতিক্রমী পথ খুঁজেছিলেন মমতা। জানা গিয়েছে, এবার রাজ্য থেকে মোট ১৫ জন ইউপিএসসি সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার বিভিন্ন বিভাগে নির্বাচিত হয়েছেন। আগামী দিনে বাংলা আরও চারজন আইএএস, একজন আইআরএস, দুজন আইপিএস, চারজন আইএফএস, একজন আইআইএস, একজন আইডিইএস, একজন আইআরএমএস পেতে চলেছে। এখানেই শেষ নয়, ২০২৪ সালের ইউপিএসসিতেও সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর সিভিল সার্ভিসেস স্টাডি সেন্টারের ৫৪ জন পড়ুয়া প্রিলিমিনারিতে পাশ করেছেন। বর্তমানে তাঁরা চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন।