পঠনপাঠনের সময় ছাড়া যে কোনও স্কুলই সামাজিক প্রতিবাদে অংশ নিতে পারবে: ব্রাত্য

শিক্ষক দিবসে অভিনব উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে রাজ্যের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পাশে দাঁড়াল রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর। এবার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অভাব অভিযোগ শুনতে এবং শিক্ষা সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যা সমাধানের জন্য শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে চালু করা হল একটি বিশেষ হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর – ৯০৮৮৮৮৫৫৪৪। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নির্দেশে এবং রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর তৎপরতায় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অবসর ভাতা পাওয়ার ক্ষেত্রেও বিশেষ পদক্ষেপ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকাশ ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে ব্রাত্য বসু এই উদ্যোগগুলির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেছেন। শিক্ষকদের অভিযোগ শোনার ক্ষেত্রে গৃহীত উদ্যোগের বিশেষত্ব হলো, এই হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরটি চালু থাকবে বছরের ৩৬৫ দিনই। যে কোনও সময়ে এই নম্বরে রাজ্যের যে কোনও প্রান্তের স্কুল, কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ তাঁদের অভাব, অভিযোগ এবং সমস্যা জানাতে পারবেন।

এ প্রসঙ্গে ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া মাত্রই অভিযোগকারীর কাছে একটি প্রাপ্তি সূচক বার্তা পাঠানো হবে। একটি বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। এই দলই সমস্ত অভিযোগ দ্রুততার সঙ্গে পর্যালোচনা করে তার সমাধান নিশ্চিত করবে। এই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় অভিযোগকারীকে আর সশরীরে শিক্ষা দপ্তরে আসতে হবে না। সমগ্র প্রক্রিয়াটি ডিজিটালি অর্থাৎ অনলাইনেই নথিবদ্ধ হবে। এর ফলে বারংবার নথি জমা দেওয়া এবং অযথা হয়রানি বন্ধ করা যাবে।

অন্যদিকে, অবসর গ্রহণ করতে চলা বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পেনশন পেতে গেলে ন্যূনতম ১০ বছর নিরবচ্ছিন্ন চাকরি করতে হয়। তবে কেউ যদি ৯ বছর ৬ মাস বা তার অধিক সময় নিরবচ্ছিন্ন চাকরি করে থাকেন তাহলে বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের হাতে ক্ষমতা দেওয়া আছে ওই ৬ মাস বা তার কম সময়ের ঘাটতি মার্জনা করে তাঁকে পেনশন দেওয়ার। যদিও বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তর স্বতঃপ্রনোদিত হয়ে এই ক্ষমতার প্রয়োগ করতো না এতদিন, ফলে অযথা সমস্যার সম্মুখীন হতেন শিক্ষক মহল।


এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শে বিশেষ পদক্ষেপ করে ব্রাত্য বসু এদিন জানিয়েছেন, ‘এখন থেকে কোনও শিক্ষক-শিক্ষিকার কর্মজীবন ৯ বছর ৬ মাস বা তার বেশি অর্থাৎ ১০ বছরের কম হয়ে থাকলে আবেদনের ভিত্তিতে যোগ্যপ্রার্থীর ক্ষেত্রে স্বতঃপ্রনোদিত ভাবে ঘাটতিটুকু মার্জনা করে অবসরভাতা অনুমোদন করবে শিক্ষা দপ্তর। ফলে শিক্ষকদের আর কষ্ট করে উচ্চ ন্যায়ালয়ে ছুটতে হবে না।’

পাশাপাশি মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্যও ব্রাত্য শুনিয়েছেন সুখবর। তিনি বলেন, ‘এতদিন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের যে সকল নথি ডিজিলকারে থাকতো, পরীক্ষার্থীদের আবেদনের ভিত্তিতে পর্ষদের পক্ষ থেকে তাতে কোনও সংশোধন করা হলে তা ডিজিলকারের নথিতে প্রতিফলিত হত না। এই সমস্যার সমাধান করা হয়েছে, ছাত্রছাত্রীদের আর অসুবিধা হবে না।’ তাছাড়াও এদিনের সাংবাদিক বৈঠক থেকে ব্রাত্য জানিয়ে দেন, স্কুলের নির্দিষ্ট পঠনপাঠনের সময় ব্যতীত আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে যেকোনও স্কুলই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে পারবে।