উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগে জটিলতা দূর করতে ৯ দফার গাইডলাইন প্রকাশ করল স্কুলশিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর নির্দেশে মঙ্গলবার উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ার জয়েনিং, রোস্টার, তথ্যের ত্রুটি-সহ একাধিক বিষয় সকল জেলা পরিদর্শকদের উদ্দেশ্যে এই গাইডলাইন প্রকাশ করেছে সংশ্লিষ্ট দফতর। নিয়োগের ক্ষেত্রে যে সমস্ত জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে, সেই সংক্রান্ত বিষয়ে স্পষ্ট করেছে শিক্ষা অধিদপ্তর। সংশ্লিষ্ট নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, যে সমস্ত স্কুলে পরিচালন সমিতি কিংবা অ্যাডমিনিস্ট্রেটর নেই, সেই সমস্ত স্কুলে দ্রুত অ্যাডমিনিস্ট্রেটর নিয়োগ করতে হবে।
প্রশ্ন উঠেছিল, কিছু জেলার জেলা পরিদর্শক টেটের অ্যাডমিট কার্ডের উপর জোর দিচ্ছিলেন, সেক্ষেত্রে যদি কোনও চাকরিপ্রার্থী ২০১৫ সালের ই-মার্কশিট কিম্বা ২০১১ সালের টেটের শংসাপত্র দেন, তাহলে সেটা গণ্য করা হবে। এক্ষেত্রে বলা হয়েছে যে, দেখা গিয়েছে বেশ কিছু চাকরিপ্রার্থী ২০১১ সালের টেটের আসল শংসাপত্র এসএসসিকে জীবনকালের বৈধতার জন্য জমা দিয়েছিলেন, সেই সমস্ত শংসাপত্র চাকরিপ্রার্থীদের আর ফেরানো হবে না। এ বিষয়ে দপ্তরের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে, এই সংক্রান্ত যাচাইকরণের কোনও সরকারি নির্দেশিকা নেই।
এছাড়াও তথ্যে গোলযোগ থাকায়, চাকরিপ্রার্থীদের ইন্টারভিউয়ের কল লেটার পেশ করার জন্য বেশ কিছু জেলা পরিদর্শক জানিয়েছিলেন। এক্ষেত্রে মালদার ডিআই আদেশ দিয়েছিলেন যে, নিয়োগপত্র প্রকাশ করার আগে চাকরিপ্রার্থীদের অনুমোদন পত্র আগে ডিআই-এর নথির সঙ্গে খতিয়ে দেখা হবে। এক্ষেত্রেও শিক্ষা অধিদপ্তরের বক্তব্য যে, এই সংক্রান্তও যাচাইকরণের জন্য কোনও সরকারি নির্দেশ নেই। এছাড়াও বেশ কয়েকটি স্কুল মনে করছিল যে, নিয়োগের দায়িত্ব মধ্যশিক্ষা পর্ষদের হাতে রয়েছে। সেক্ষেত্রে স্কুল কীভাবে নিয়োগপত্র জারি করতে পারে? এ বিষয়ে স্কুল শিক্ষা অধিদপ্তর জানিয়েছে যে, উচ্চপ্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায়, স্কুল কর্তৃপক্ষই নিয়োগের দায়িত্বে থাকবে। এছাড়াও নথিপত্রের বেশ কয়েকটি ত্রুটি লক্ষ্য করা গিয়েছিল। যেরকম, প্রার্থীর নাম, ঠিকানায় ত্রুটি ছিল।
সে কারণে তাদের স্কুলে নিয়োগ হচ্ছিল না।
এক্ষেত্রে শিক্ষা দফতর স্পষ্ট জানিয়েছে যে, এই সামান্য ভুল-ত্রুটির কারণে কোনও প্রার্থীর নিয়োগে আটকানো যাবে না। প্রয়োজনে স্কুল সার্ভিস কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। পাশাপাশি উপযুক্ত সংরক্ষিত পদ ছাড়া কোনও নিয়োগ হবে না। এই বিষয়ে শিক্ষা অধিদপ্তর জানিয়েছে, এই ধরনের বিষয়গুলো স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সতর্কভাবে খতিয়ে দেখতে হবে। তারপর সেই রিপোর্ট এসএসসি-কে দিতে হবে। যদি দেখা যায়, এই সমস্যাগুলোর বাস্তবসম্মত। সেক্ষেত্রে ডিআইকে প্রার্থীদের জন্য উপযুক্ত পদ খুঁজতে হবে। সাধারণ প্রার্থীদের সংরক্ষিত আসনে নিয়োগ করা যাবে না। এছাড়াও যদি সংরক্ষিত প্রার্থীদের সাধারণ প্রার্থীদের পদে নিয়োগ করতে হয়, সেক্ষেত্রে স্কুল সার্ভিস কমিশনের অনুমোদন প্রয়োজন হবে।
সূত্রের খবর, উচ্চ প্রাথমিক নিয়োগে বিভিন্ন ত্রুটির কারণে বহু সংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়োগের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ প্রিয় শিক্ষকদের। এর জন্য অল পোস্ট গ্রাজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি অভিযোগ জমা পড়েছিল শিক্ষা দপ্তরে। শিক্ষক সংগঠনের তরফ থেকে দেওয়া অভিযোগগুলিতে জানানো হয়েছিল যে, স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফ থেকে দেওয়া সুপারিশে প্রকাশিত রোস্টার পয়েন্টের সঙ্গে অনগ্রসর শ্রেণি দপ্তর অর্থাৎ (বিসিডব্লু)-র নির্দিষ্ট রোস্টারের মিল নেই। ফলে, বহু জেলায় স্কুলে যোগ দিতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছেন বহু সংখ্যক সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারা। শুধু তা-ই নয়, বিষয় পদ, বিভাগ, তথ্যে ত্রুটি এবং অনুমোদনের সমস্যার কারণেও স্কুলে যোগ দিতে পারেননি তাঁরা। শিক্ষকদের আরও দাবি ছিল যে, সমস্ত বিষয় নিয়োগের সংশোধিত তালিকা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রকাশ করতে হবে।