• facebook
  • twitter
Saturday, 5 April, 2025

ইউনূস খানের পাক প্রেম

এই সফর সম্বন্ধে তার নির্বাচনী দোসর জামায়াত ইসলামীর কাছেও গোপন রাখা হয়েছিল

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

যে পাকিস্তান সেনাবাহিনী একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে লক্ষ লক্ষ মুক্তি যোদ্ধা এবং বাঙ্গালিদের নৃশংসভাবে হত্যা, তাদের বাড়িঘর ধ্বংস সহ অসংখ্য মহিলাদের ওপর অত্যাচার চালিয়েছিল, সেই পাকিস্তানের সাথে অতি গোপনে সন্তর্পনে বন্ধুত্ব পাতার ইচ্ছে নিয়ে বাংলাদেশর সেনাবহিনীর ছয়জন শীর্ষ কর্তা সম্প্রতি পাকিস্তান সফর করে ঢাকায় ফিরে এল। এই সহবতের নজির স্থাপনে পাকিস্তান সেনাবাহিনীরও একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল দুবাই হয়ে বাংলাদেশ সফরে এসে পৌঁছালো। তাদের যিনি নেতৃত্ব দিলেন তিনি হলেন পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিফ মালিক। এই দলে আরও একজন এই সংস্থার শীর্ষ অফিসারও ছিলেন। তাদের ঢাকা বিমান বন্দরে স্বাগত জানান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান ব্রিগেডিয়ার মেহেদি। তাদের ফুল মালা দিয়ে বরণ করা হয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশের এই সামরিক প্রতিনিধিদল সর্বপ্রথম পাক সফরে গেল।

অত্যন্ত গোপনে দুই দেশের সামরিক দলের আসা যাওয়ার খবর ভারতকে চরম অস্বস্তির মধ্যে ফেলেছে। তার প্রথম কারণ ভারত এই সফর সম্বন্ধে আদৌ ওয়াকিবহাল ছিল না। এবং দ্বিতীয় কারণ পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থার প্রধান পাকদলের নেতৃত্বে থাকা। শোনা গেল, এই সফর সম্বন্ধে বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি এবং তার নির্বাচনী দোসর জামায়াত ইসলামীর কাছেও গোপন রাখা হয়েছিল। কারণ বিএনপি পাকিস্তানের সাথে নতুন করে বন্ধুত্ব পাতানোর বিরোধী। কিন্তু বাংলাদেশের তদারকি সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শান্তির জন্য নোবেল প্রাপক মহম্মদ ইউনূস খানের ইচ্ছানুসারে এই দুই দেশের সরিক প্রতিনিধি দলের সফর। শান্তির জন্য বড় পুরস্কার প্রাপক খান সাহেব বাংলাদেশে অশান্তি জিয়ে রেখে সংস্কারের নামে প্রহসন ঘটিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতে বিশেষভাবে আগ্রহী। জানা যায় বাংলাদেশের সাধারণ মানুষও চায় না পাকিস্তানেকে আবার ডেকে বাংলাদেশে এনে একটি নিবিড় সম্পর্ক তৈরি করা। কারণ বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধারা যারা এখনও বেঁচে আছেন তারা ভাল করেই জানেন পাকিস্তানি সেনারা স্বাধীনতাকামী বাংলাদেশিদের ওপর কি নির্মম অত্যাচার চালিয়ে ছিল। খান সাহেব ভারতকে একটু দূরে সরিয়ে রেখে পাকিস্তানকে কাছে টানতে আগ্রহী। তাই সফর নিয়ে চরম গোপনীয়তা।

খবর এসেছে, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের, ‘মহান’ হিসেবে স্বাগত জানিয়ে তাদের রাখা হয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত একটি আবাসনে। এই সামরিক দলের কর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্তাদের কয়েকদফা বৈঠক হয়। বলা হয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দলের সদস্যরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করতে সবরকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। পাকিস্তানি দলটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। পাক সামরিক দলের প্রতিনিধিদের বাংলাদেশের অস্ত্রনির্মাণ কারখানা গাজীপুরে নিয়ে গিয়ে সমরাস্ত্র তৈরি করার নানাবিধ বিষয়ে তাদের জানানো হয়েছে। পাকিস্তান দলের সদস্যরা এই অস্ত্র কারখানা দেখে খুশি হয়েছেন। তারা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্তাদের আশ্বাস দিয়েছেন গাজীপুরের এই অস্ত্র নির্মাণ কারখানা কী করে আরও উন্নত করা যায় তার জন্য পাকিস্তান সাজসরঞ্জাম দিয়ে সাহায্য করবে। এই গাজীপুর একাত্তরের যুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এখন তা আবার আধুনিকীকরণ করা হয়েছে।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এই দলের সফর নিয়ে ঢাকায় বিভিন্ন মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে। এমনকি বাংলাদেশি সেনাবাহিনীর জনসংযোগ বিভাগও এই সফর সম্পর্কে কিছুই জানত না। অপরদিকে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর শীর্ষকর্তাদের একটি দল যে পাকিস্তান সফরে গিয়েছিল, তা তাদের সফর শেষে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। নয়াদিল্লি এই দুই দেশের সামরিক বাহিনীর উচ্চ পর্যায়ের সদস্যদের এই সফরকে ভালভাবে নেয়নি। বিশেষ করে পাকিস্তান দলের নেতৃত্বে আইএসআইয়ের প্রধানের থাকা নিয়েও ভারত সরকারকে চিন্তায় ফেলেছে। তবে এই সফরের উদ্দেশ্য নিয়ে কৌতুহলী ভারতের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। তারা এই সফর বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছে।

তবে আইএসআইয়ের প্রধানের দলে থাকাটা চিন্তার কারণ। তবে তদারকি সরকারের প্রধান ইউনূস খানের এই পাকিস্তান প্রেম ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সে বন্ধুত্বের সম্পর্ক রয়েছে তাকে আঘাত করছে। এমনিতেই বাংলাদেশে এখন অশান্তির নানা ঘটনা ঘটছে যা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না তদারকি সরকার। তবে বিএনপি খান সাহেবের এই পাকিস্তান-প্রেম সমর্থন না করে দাবি জানিয়েছে অবিলম্বে সাধারণ নির্বাচন করা কিন্তু খান সাহেবের যে মতিগতি তাতে বাংলাদেশে সে সাধারণ নির্বাচন অচিরেই হবে তার কোনও লক্ষণ নেই। এখন দেখার পাকিস্তানি সামরিক প্রতিনিধি দল দেশে ফিরে গিয়ে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীকে কিভাবে সমরাস্ত্র দিয়ে সাহায্য করে। জানা যায় পাকিস্তান বাংলাদেশকে ক্ষেপনাস্ত্র দিয়ে সাহায্য করবে।

ইউনুস তদারকি সরকারের নেতৃত্বে আসার পর বাংলাদেশের জেলে আটক কয়েকশ জঙ্গিকে মুক্তি দেয়। তাদের মধ্যে অনেকে ভারতে প্রবেশ করেছে নাশকতামূলক কাজে হাত লাগাতে। কেউ কেউ ধরাও পড়েছে।

News Hub