• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

চমকপ্রদ জয়

এআইএডিএমকে'র জনপ্রিয় নেত্রী ও চারবারে মুখ্যমন্ত্রী জে জয়ললিতাকে বিজেপির সঙ্গে নির্বাচনী আঁতাতের জন্য চরম মূল্য দিতে হয়েছিল।

এআইএডিএমকে কার্যালয়। (File Photo: IANS)

তামিলনাড়ু বিধানসভার নানগুনেরি ও ভিকরাবন্দি আসনের উপনির্বাচনে শাসক এআইএডিএমকে’র চমকপ্রদ জয় থেকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে এড়াপ্পড়ি পালানিস্বামী ও দলের চিফ কোঅর্ডিনেটর ও পনিরসেলভমের প্রতি রাজ্যের জনগণের আস্থাই প্রতিফলিত হয়েছে। বিজেপি’র সঙ্গে সমঝােতা এআইএডিএমকের বােঝা স্বরূপ বলে সাধারণভাবে যে ধারণা তৈরি হয়েছিল তাও এই ফলে নস্যাৎ হয়ে গেছে।

এআইএডিএমকে’র জনপ্রিয় নেত্রী ও চারবারে মুখ্যমন্ত্রী জে জয়ললিতাকে বিজেপির সঙ্গে নির্বাচনী আঁতাতের জন্য চরম মূল্য দিতে হয়েছিল। এই কারণে ২০০৪ এর সাধারণ নির্বাচনে জয়ললিতাকে ধাক্কা খেয়ে হয়েছিল। দীর্ঘ বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে এই একবারই মাত্র জয়ললিতা একটি আসনও পাননি।

২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পালানিস্বামী যখন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিলেন তখন সকলেই ভেবেছিলেন তিনি ছয় মাসের বেশি টিকবেন না। পালানিস্বামী সহ তাঁর সরকারের প্রত্যেক মন্ত্রীই কোনও না কোনও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। কিন্তু কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের দ্বিধাহীন সমর্থনের জেরে এই অবস্থার মধ্যেও তিনি তাঁর জমিকে শক্তিশালী করেন।

এবারের দুই বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের জন্যও এআইএডিএমকে রাজ্যের বিজেপি নেতা ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পন রাধাকৃষ্ণনের কাছে সমর্থন প্রার্থনা করেন। পিএমকে ডিএমডিকে ও বিজেপি রাজ্যের এআইএডিএমকের নেতৃত্বাধীন জোটের সদস্য। নানগুনেরিতে বিজেপি ও আরএসএ-এর যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। পালানিস্বামী উপনির্বাচনের জয়কে তামিলনাড়ুর জনগণের প্রশংসাসূচক সার্টিফিকেট হিসাবে বর্ণনা করেছে।

সম্প্রতি ড. এমজিআর এডুকেশনাল ও রিসার্চ ইনস্টিটিউট ও পালানিস্বামীকে সাম্মানিক ডি লিট উপাধিতে ভূষিত করেছে। পালানিস্বামীকে একজন বিশিষ্ট আইনসভা সদস্য হিসাবে বর্ণনা করে প্রশংসাপত্রে তাঁকে বিশ্ববিখ্যাত রাজনৈতিক হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

যদিও এআইএডিএমকে’র এই জয় রাজ্য সরকারের স্থায়িত্বের ওপর কোনও ছাপ ফেলবে না, তবুও পালানিস্বামী এই লড়াইকে একটা প্রেস্টিজ ইস্যু করেছিলেন। এই ফলাফল বিরােধী ডিএমকে ও তার শরিক কংগ্রেসের কাছে একটা বড় ধাক্কা। ভিকরাবন্দি আসনটি দখলে রাখার জন্য ডিএমকে নেতা এম কে স্ট্যালিন তাঁর পুত্র ডিএমকের যুব শাখার সভাপতি উদয়নিধি স্ট্যালিনের ওপর ভীষণভাবে নির্ভর করেছিলেন। কিন্তু মানুষ এখন আর বংশানুক্রমিক রাজনীতির ধারা পছন্দ করছে না।

নানগুনেরি আসনটি ডিএমকে’র নেতৃত্বাধীন জোরে বড় শরিক কংগ্রেসের ভি বসন্তকুমারের দখলে ছিল। কিন্তু কয়েক মাস আগে তিনি লােকসভায় নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর বিধানসভা আসনটি ছেড়ে দেন। ফলে এই আসনটি শূন্য হয় এবং সেই কারণেই উপনির্বাচন। কিন্তু ডিএমকে’র যথাসাধ্য প্রচেষ্টার পরও আসনটি তাঁরা ধরে রাখতে পারেনি।

কয়েক মাস আগে লােকসভা নির্বাচনে তামিলনাড়ুর ৩৯টি আসনের মধ্যে ৮টি দখল করে ডিএমকে। কিন্তু দুই বিধানসভা উপনির্বাচনে এআইএডিএমকে জয়লাভ করায় পরিস্থিতি পরিবর্তন ঘটছে বলে অনেকে মনে করতে শুরু করেছেন। অতি উৎসাহীরা এই ফলকে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের পূর্বাভাস হিসাবে গণ্য করেছেন।

সাইক্লোনের ক্ষয়ক্ষতি ও নানারকম বাধাবিপত্তি সত্ত্বেও ২০১৮-১৯’এ তামিলনাড়ু ৮.১ শতাংশ উন্নতি হার অর্জন করেছে যেখানে জাতীয় গড় হচ্ছে ৬.৮১ শতাংশ। এই সাফল্য পালানিস্বামী সরকারের ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল করেছে।