• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

করােনায় মার্কিন সাহায্য

দ্বিতীয় পর্যায়ে ভারতে করােনার ঢেউ এমনই মারাত্মক আকার নিয়েছে যে চিকিৎসার সামান্য সুযােগও দেওয়ার সময় পাওয়া যাচ্ছে না।

দ্বিতীয় পর্যায়ে ভারতে করােনার ঢেউ এমনই মারাত্মক আকার নিয়েছে যে চিকিৎসার সামান্য সুযােগও দেওয়ার সময় পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকী প্রাথমিকভাবে অক্সিজেন দেওয়ার ব্যবস্থাও করা যাচ্ছে না। কারণ প্রয়ােজনের তুলনায় অক্সিজেনের অভাব।

আমাদের প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদের কোনও অভিজ্ঞ ব্যক্তি না থাকায় দেশে এমন। বিপদের পুনরাবৃত্তি হতে পারে তার কোনও সম্ভাবনা বর্তমান সরকার পরিচালকদের মাথাতেই আসেনি। এদের কোনও পরিকল্পনাও নেই।

অন্যান্য দেশ যখন প্রতিষেধক তৈরিতে ভারতীয় সংস্থাগুলিকেই লাখ কোটি টাকার বরাত দিচ্ছে তখন দেশের সরকার মাত্র কয়েকশাে কোটি টাকার বরাত দিচ্ছে। এখন প্রতিষেধক পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ বিশ্বের কাছে বিবেকী দেশের ভাবমূর্তি তুলে ধরতে প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন দেশকে কম পয়সায় এমনকী বিনা পয়সাতেও প্রতিষেধক পাঠাতে কসুর করেনি ভারত।

কিন্তু অক্সিজেনের মতাে প্রাথমিক চিকিৎসার উপকরণের অভাব যে ঘটতে পারে তা বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের পরিচালকদের মাথাতেও আসেনি। এখন তারা বিভিন্ন দেশের কাছে অক্সিজেন তৈরির পরিকাঠামাে চাইছে। তবে খেদের বিষয় আমেরিকা ভারতের সাহায্য চাওয়ার পরও বেশ কিছুদিন নীরবতা পালন করে। এটা মানবিকতার প্রতি অবিচার বলে মনে করে ভারত।

আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্ট এবং ভারতীয় বংশােদ্ভূত ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের এই আচরণে ক্ষুব্ধ ভারত। প্রবল সমালােচনার পর ওয়াশিংটনের পক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির সঙ্গে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের টেলিফোনে আলােচনার প্রস্তাব হয়। টেলিফোনের আলােচনায় ভারতকে সবরকমের সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

তবে অবস্থা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি অবনতি হওয়ায় উদ্বেগ বেড়েছে। সংখ্যায় অনেক বেশি আক্রান্ত হচ্ছে এবং মৃতের সংখ্যাও বেড়েছে। আমেরিকার পক্ষে প্রতিষেধক তৈরির উপকরণ, অক্সিজেন তৈরির সরঞ্জাম এবং অন্যান্য চিকিৎসা সরঞ্জাম পাঠানাে হয়েছে।

তবে এসবই আমেরিকা পাঠিয়েছে বাইডেন-মােদি টেলিফোনে কথা বলার পর। পরে বাইডেন টুইট করে বলেছেন, ভারত আমাদের জন্য এবং আমেরিকাও ভারতের জন্য সর্বদাই সাহায্যে প্রস্তুত।

কিন্তু প্রতিষেধক তৈরি সরঞ্জাম পাঠানাের ভারতের আর্তিতে প্রাথমিকভাবে বিলম্ব ঘটানের জন্য আমেরিকার কঠোর সমালােচনা করা হয়। তার পরই আমেরিকার টনক নড়ে। মােদির আত্মনির্ভর ভারতের স্লোগান কেবল ভাষণেই দৃঢ়তা প্রকাশ করে চলেছে।

মােদির আত্মনির্ভর ভারতে মানুষের শেষকৃত্যে জায়গারও অভাব। তাও কি অন্যদেশের কাছে ধার করতে হবে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা ও তার চিকিৎসা বা অন্যান্য সুবিধা দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা কেন্দ্রীয় সরকারের নেই।

নীতি আয়ােগের কর্ণধাররা ঠাণ্ডা ঘরে বসে শুধু খানা পিনা করছেন আর নিয়ােগ কর্তার ভজনা করছেন। পরিকল্পনার নামে শুধুই শূন্য। করােনা আবহে নীতি আয়ােগের অতিশিক্ষিত আমলা ও বিশেষজ্ঞদের অশ্বডিম্ব প্রসবের ঘটনাটি বেরিয়ে পড়েছে।

এখন আমেরিকার সার্জন-জেনারেল বিকে মূর্তি টুইট করে জানিয়েছেন, বিশ্বের এমন সঙ্কটকালে আমেরিকা অ্যাস্ট্রাজেনেকা ডােজ দেবে বিশ্বের যে সকল দেশে তার চাহিদা রয়েছে। মােদির আত্মনির্ভর ভারত এখন সেদিকেই নতজানু হয়ে পাত্র পেতে বসে থাকুক।

জানা গিয়েছে ভারতের সাহায্য চাওয়া ও তা পাওয়ার বিষয়টি আরও বিলম্ব হত যদি না ভারতের নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান অজিত দোভাল মার্কিন সিকিউরিটি অ্যাডভাইসর জ্যাক সুলিভানের সঙ্গে কথা না বলতেন।

এর পরই প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মােদির টেলিফোনে কথা বলার বিষয়টি নির্ধারিত হয়। গত বছর আমেরিকার দুঃসময়ে ভারতের সাহায্যের কথা মনে রেখেই আমেরিকা ভারতের প্রয়ােজনের সময়ে সাহায্য।