• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

বিপন্ন সংবিধান

বিজেপি ফের ক্ষমতায় ফিরলে বদলে ফেলবে দেশের সংবিধান৷ এমনটাই ধারণা বিরোধী দলগুলির৷ রাজস্থানে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে একাধিক সভায় নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, সংবিধান ও সংরক্ষণ নিয়ে এবং গণতন্ত্র নিয়ে বিরোধীরা মিথ্যা কথা বলছে, ভয় দেখাচ্ছে৷ মোদির পাশাপাশি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও দেশবাসীকে সংরক্ষণ নিয়ে আশ্বস্ত করার মরিয়া চেষ্টা চালালেন৷ বিরোধীরা কিন্ত্ত জোরের সঙ্গে মোদি সরকারকে আক্রমণ করে

বিজেপি ফের ক্ষমতায় ফিরলে বদলে ফেলবে দেশের সংবিধান৷ এমনটাই ধারণা বিরোধী দলগুলির৷ রাজস্থানে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে একাধিক সভায় নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, সংবিধান ও সংরক্ষণ নিয়ে এবং গণতন্ত্র নিয়ে বিরোধীরা মিথ্যা কথা বলছে, ভয় দেখাচ্ছে৷ মোদির পাশাপাশি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও দেশবাসীকে সংরক্ষণ নিয়ে আশ্বস্ত করার মরিয়া চেষ্টা চালালেন৷ বিরোধীরা কিন্ত্ত জোরের সঙ্গে মোদি সরকারকে আক্রমণ করে বলেছে, বিজেপি ক্ষমতায় ফিরলে দেশের সংবিধান বদলে ফেলবে৷ ধ্বংস করবে সংরক্ষণ ব্যবস্থা৷ এর প্রমাণ অবশ্যই একাধিক বিজেপি নেতার ভাষণ৷ তাঁরা প্রকাশ্যেই বলেছেন, চারশোর বেশি আসনে মোদি জিততে চাইছেন, কারণ তিনি সংবিধান বদল করতে চান৷ বিরোধীদের চাপে এখন একের পর এক সভাতে মোদি সাফাই দিচ্ছেন, সংবিধান বদল করা হবে না৷ মোদির চেয়েও বেশি এই কথা বলে বেড়াচ্ছেন তাঁরই দক্ষিণ হস্ত অমিত শাহ৷ প্রতিটি সভায় তিনি নিয়ম করে বলছেন, সংবিধান বদল হবে না৷ সংরক্ষণ বজায় থাকবে৷ যদিও এইসব প্রশ্নে সংশয় থেকেই যাচ্ছে৷

এর মধ্যেই মোদির জলশক্তিমন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত পরিষ্কার করে বলেছেন, ভারতের সংবিধান গীতা নয় যে তা পরিবর্তন করা যাবে না৷ রাজস্থানের যোধপুর কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত৷ একটি সংবাদ পোর্টালের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি ৩৭০ ধারা বিলোপের উদাহরণ তুলে বলেছেন, প্রয়োজন হলেই সংবিধানের এমন বদল হতে পারে৷ এই পরিবর্তন ‘দেশের স্বার্থে’ বলে তিনি দাবি করেন৷ এর আগে বিজেপি নেতা অনন্তকুমার হেগড়ে, লাল্লু সিং, জ্যোতি মৃধা এবং অরুণ গোভিল স্পষ্ট বলেছেন, সংবিধান বদল করার জন্যই মোদি চারশোর বেশি আসন চাইছেন৷
অন্যদিকে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, এই নির্বাচন দেশের ভবিষ্যতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ আমাদের সংবিধানে স্পষ্ট করে বলা আছে, ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক সাধরণতন্ত্র৷ সংবিধানে অন্য সমস্ত গণতান্ত্রিক অধিকারও আজ আক্রমণের মুখে৷ যদি বিজেপি ক্ষমতায় ফেরে, মোদি ক্ষমতায় ফেরেন, সংবিধানকে বদলে ফেলার সমস্ত সম্ভাবনা রয়েছে৷ বিজেপি নেতারা তেমনই ঘোষণা করেছেন৷ সংবিধান বদলের মাধ্যমেই এই ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক দেশকে অসহিষ্ণু, কর্তৃত্ববাদী, ফ্যাসিবাদী হিন্দুত্বের রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায় বিজেপি৷ যে সমস্ত দেশপ্রেমিক মানুষ ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক চরিত্রকে বজায় রাখতে চান, তাদেরই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এটা নিশ্চিত করতে হবে যাতে বিজেপি ক্ষমতায় ফিরতে না পারে৷ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার যা ভারতের সংবিধানে সুরক্ষিত করা হয়েছে, তাকে রক্ষা করতে হলে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে৷ দুনিয়ার মানুষের কাছে ভারতের পরিচয় তার সংবিধানের জন্যই৷ তাই সংবিধান রক্ষার জন্য এগিয়ে আসতে হবে সমস্ত ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক শক্তিকে৷

কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধিও একই সুরে বলেছেন, মোদি-শাহের সরকার ফের ক্ষমতায় ফিরলে দেশের সংবিধানকে বাতিল করা হবে এবং গণতন্ত্র শেষ হয়ে যাবে৷ বাবাসাহেব আম্বেদকর রচিত সংবিধান বাতিল করে সঙ্ঘের নির্দেশেই ধর্মনিরপেক্ষতা ছাঁটাই করে হিন্দুত্বের পথে চলবে দেশ৷ এটা একটা বিরাট ষড়যন্ত্র৷ সংবিধান দেশবাসীকে ভোট দেওয়ার অধিকার দিয়েছে৷ দিয়েছে সংরক্ষণের অধিকার৷ আদিবাসী সংস্কৃতি রক্ষার অধিকার দিয়ে দলিতদেরও উন্নয়ন সুগম করেছে৷ মানুষের এই সমস্ত অধিকার কেড়ে নিতেই বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার সংবিধান বদল করতে চাইছে৷