সাহিত্য অকাদেমির প্রেমচাঁদ ফেলোশিপ পেলেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট লেখক সফিকুন্নবী সামাদী। এদিন সন্ধ্যায় সাহিত্য অকাদেমির কনফারেন্স হলে প্রেমচাঁদ ফেলোশিপ প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এই ফেলোশিপ ভারতীয় নাগরিক নন, অথচ ভারতীয় সাহিত্যের উপর গবেষণা করছেন এমন সার্ক অঞ্চলের দেশগুলির বিশিষ্ট গবেষক ও সৃজনশীল লেখকদের দেওয়া হয়। সাহিত্য অকাদেমির সচিব ড কে. শ্রীনিবাসরাও, অনুষ্ঠানের অতিথি এবং উপস্থিত সাহিত্যপ্রেমীদের স্বাগত জানিয়ে অধ্যাপক সামাদীর সাহিত্য যাত্রা এবং উপমহাদেশের সাহিত্য জগতে তাঁর অবদানের কথা উল্লেখ করে বলেন যে, অধ্যাপক সামাদি বাংলাদেশের চতুর্থ লেখক যিনি এই ফেলোশিপ পেয়েছেন।
সাহিত্য অকাদেমির সভাপতি, ডক্টর মাধব কৌশিক অধ্যাপক সামাদীকে অভিনন্দন জানিয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতীয় সাহিত্যচর্চাকে বিকশিত করার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বিশ্ব নাগরিকের ধারণা এবং সাহিত্যের মাধ্যমে সমস্ত দেশে বিশ্ব নাগরিক গড়ে তোলার ভূমিকার উল্লেখ করে বলেন, আমার মতে অধ্যাপক সামাদী একজন শ্রেষ্ঠ বিশ্ব নাগরিক। তিনি আরও বলেন, এই বিশ্বনাগরিক ধারণাটি লেখকরাই প্রতিষ্ঠা করেছেন। লেখক না থাকলে বিশ্ব নাগরিকত্বের ভাবনা সমস্ত দেশে ছড়িয়ে পড়তে পারত না। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে অধ্যাপক সামাদি এভাবেই ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একজন অর্থবহ সাংস্কৃতিক সেতু হিসেবে কাজ করে যাবেন।
অধ্যাপক সফিকুন্নবী সামাদী তাঁর জবাবী বক্তৃতায় তাঁকে ফেলোশিপ প্রদানের জন্য সাহিত্য অকাদেমির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বাংলা ও হিন্দিতে তুলনামূলক সাহিত্য অধ্যয়নের সময়কালের কিছু স্মৃতিচারণ এবং মুন্সি প্রেমচাঁদকে নিয়ে কাজ করার ইচ্ছের কথা জানিয়ে বলেন, তিনি বাংলা অনুবাদেই প্রথম প্রেমচাঁদকে পড়েছেন। তিনি বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণের মধ্যে আরও নিবিড় সম্পর্ক স্থাপনের ইচ্ছা প্রকাশ করে বলেন তামিল, মালয়ালম, তেলেগু, পাঞ্জাবি এবং হরিয়ানভির মতো ভারতীয় ভাষাগুলোর সাহিত্যকে আরও বেশি করে বাংলাদেশি জনসাধারণের কাছে পরিচিত করানোর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তিনি সাহিত্য অনুবাদের মাধ্যমে সংস্কৃতির অনুবাদের অনুশীলন এবং ভাষাকে মানুষের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে বেশি করে ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার কথা বলে। তাঁর বিশ্বাস উভয় দেশের পরবর্তী প্রজন্মের লেখকরা এই অনুবাদ এবং সংযোগের কাজ চালিয়ে যাবেন।